‘পুরনো বন্ধু’ পুতিনের সঙ্গে বৈঠকে ‘প্রিয় বন্ধু’ শি

Google Alert – সামরিক

নিজ দেশে আয়োজিত বৈঠকে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে ‘পুরনো বন্ধু’ বলে স্বাগত জানিয়েছেন চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। আবার বৈঠকের শুরুতে শি-কে ‘প্রিয় বন্ধু’ হিসেবে সম্বোধন করে পুতিন বলেছেন, বেইজিং-মস্কো সম্পর্কে নজিরবিহীন উন্নতি ঘটেছে।

মঙ্গলবার (২ সেপ্টেম্বর) এই দুই নেতার মধ্যে বৈঠক শুরু হয়। এমন একটি সময়ে তাদের এই বৈঠক হচ্ছে, যখন এই দুই দেশেরই যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্কে টানাপোড়েন আর নানা চ্যালেঞ্জ চলছে।

আনুষ্ঠানিক আলোচনার পর শীর্ষ কর্মকর্তাদের কয়েকজনকে সঙ্গে নিয়ে একসঙ্গে চায়ের আড্ডায় বসার পরিকল্পনাও করেছেন তারা।

এর আগে, চীনের তিয়ানজিন শহরে সাংহাই কো-অপারেশন অরগানাইজেশনের (এসসিও) দুই দিনব‌্যাপী সম্মেলনে যোগ দিয়েছিলেন শি ও পুতিন। আগামীকাল (বুধবার) বেইজিংয়ে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের অবসানের ৮০ বছর উপলক্ষে এক বিশাল সামরিক কুচকাওয়াজেও একসঙ্গে অংশ নেবেন তারা।

আরও পড়ুন: চীনে এসসিও সম্মেলন ও সামরিক কুচকাওয়াজে অংশ নিচ্ছেন কারা

মঙ্গলবারের দ্বিপাক্ষীয় বৈঠকের আগে মঙ্গোলিয়ার প্রেসিডেন্ট খুরেলসুখ উখনার সঙ্গে ত্রিপক্ষীয় বৈঠক করেছেন পুতিন ও শি। তৃণভূমি ও খনিজ সমৃদ্ধ স্থলবেষ্টিত এ দেশটি চীন ও রাশিয়ার মাঝে অবস্থিত। এই তিন প্রতিবেশি দেশের সম্পর্ক উন্নয়নে তাদের অভিন্ন স্বার্থ রয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন পুতিন। ২০২৪ সালে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিসি) গ্রেপ্তারি পরোয়ানা উপেক্ষা করে পুতিনকে স্বাগত জানিয়েছিল মঙ্গোলিয়া সরকার।

রাশিয়া-চীন সম্পর্কের উন্নতি

সাম্প্রতিক সময়ে রাশিয়া ও চীনের সম্পর্কে ব্যাপক উন্নতি ঘটেছে। বিশেষত ২০২২ সালে রাশিয়া ইউক্রেনে হামলা চালানোর পর পশ্চিমা বিশ্বে মস্কো যখন কোণঠাসা হয়ে পড়ে, সে সময় থেকে চীনের সঙ্গে সম্পর্ক আরও মজবুত হয়েছে।

ইতিহাস ঘাটলে দেখা যায়, এশিয়া যুদ্ধের সময় ব্যাপক একটা সময়জুড়ে নিরপেক্ষ অবস্থানে ছিল তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়ন। তবে ১৯৩০-এর দশকে জাপানের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে চীনকে সহায়তা দিয়েছিল সোভিয়েত। এরপর দ্বিতীয় বিশ্বেযুদ্ধের সময় জাপানের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে জাপান অধিকৃত চীনের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে সেনা পাঠিয়েছিল সোভিয়েত।

এদিকে, ইউক্রেন যুদ্ধে কাগজে-কলমে নিরপেক্ষ অবস্থান নিলেও মস্কোর আগ্রাসনকে নিন্দা জানায়নি বেইজিং। বরং পশ্চিমা বিশ্ব যখন রাশিয়ার ওপর একের পর এক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে গেছে, সে সময় মস্কোর সঙ্গে বাণিজ্য অব্যাহত রেখে তাদের অর্থনীতি সচল রাখতে সহায়তা করেছে চীন। এমনকি রাশিয়াকে অস্ত্রের যন্ত্রাংশ বিক্রির অভিযোগও রয়েছে চীনের বিরুদ্ধে।

এসসিও সম্মেলনে শি-পুতিনের সঙ্গে একত্রিত হয়েছিলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিও। দুই নেতার সঙ্গেই সম্মেলনের ফাঁকে সাইডলাইন বৈঠক করেছেন ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী।

ডোনাল্ড ট্রাম্পের শুল্ক শাস্তি মোদিকে চীন ও রাশিয়ার দিকে ঠেলে দিচ্ছে বলে মনে করছেন অনেক আন্তর্জাতিক বিশ্লেষক। যদিও চীনের সামরিক কুচকাওয়াজে থাকছেন না মোদি, তবে এসসিও সম্মেলনে এই তিন নেতার উপস্থিতি আন্তর্জাতিক মহলে বেশ আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *