Samakal | Rss Feed
প্রবাসী পাঁচ ভাইয়ের বাড়িতে হামলা, লুটপাটের অভিযোগ
সারাদেশ
ফরিদপুর অফিস 2025-08-17
ফরিদপুরে প্রবাসী পাঁচ ভাইয়ের বাড়িতে দুই দফায় হামলা ও লুটপাটের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় অন্তত তিনজন আহত হয়েছেন। একজনকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। অন্যদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। সদর উপজেলার আলিয়াবাদ ইউনিয়নের পশ্চিম আলিয়াবাদে এ ঘটনা ঘটে। শনিবার বিকেলে কোতোয়ালি থানার একদল পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে।
ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা অভিযোগ করেন, আলিয়াবাদ ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য আবজাল মোল্লার নেতৃত্বে এই হামলা হয়েছে।
প্রবাসী পরিবারের সদস্য মমতা বেগম বলেন, আমার স্বামী রাফিজ মুন্সি গত শুক্রবার সন্ধ্যায় নামাজ পড়তে যাওয়ার সময় এই হামলা হয়। তাঁর চিৎকার শুনে আমরা সামনের রাস্তা দিয়ে এগিয়ে গেলে হামলাকারীরা পেছনের চক দিয়ে বাড়িতে ঢুকে ভাঙচুর চালায়।’ তাঁর ভাষ্য, তিনি অসুস্থ, তাই বাবার বাড়িতে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। স্বর্ণালংকার সবকিছু একটি ব্যাগের মধ্যে গোছাচ্ছিলেন। স্বামীকে আবার বিদেশে পাঠানোর জন্য তাঁর বাবা তিন লাখ টাকা দিয়ে যান। সেই টাকাও ছিল ব্যাগে। হামলাকারীরা ঘরে ঢুকে ভাঙচুর করে সবকিছু নিয়ে গেছে।
আহত শাহিদ মুন্সির স্ত্রী তানিয়া আক্তার জানান, হামলার সময় দলবলের সঙ্গে থাকা ইউপি সদস্য আবজাল মোল্লার স্ত্রী তাঁর কান থেকে টান দিয়ে ছিঁড়ে স্বর্ণের দুল নিয়ে গেছে। তাঁর ভাশুর ১৫ দিন আগে বিদেশ থেকে এসেছেন। স্ত্রীর জন্য গলার হার এনেছিলেন, তাও নিয়ে গেছে। তাঁর স্বামী দুই মাস আগে বিদেশ থেকে এসেছেন। তাঁর কাছ থেকে এর আগে দেড় লাখ টাকা দামের মোবাইল ফোন কেড়ে নিয়েছে। পুলিশকে তখনই জানানো হয়েছিল। হামলাকারীরা বলে, পুলিশ তাদের হাতের মুঠোয়। পুলিশ আসবে না। এরপর জাতীয় জরুরি সেবার ৯৯৯ নম্বরেও ফোন করা হয়। এ হামলার সঙ্গে আসাদ, সাগর, নাজমুল, সুজন ও তাদের সহযোগীরা জড়িত।
প্রবাসীদের মার্কেটের কর্মচারী আশরাফুল জানান, গত মঙ্গলবার সন্ধ্যার পর আবজাল মোল্লার লোকজন মাদক সেবনের জন্য দোকানঘর খুলে বসতে দিতে বলে। কিন্তু মালিকের অনুমতি ছাড়া এভাবে বসতে দিতে রাজি না হলে তাঁকে মারধর করে। এরপর রাতে বাড়িতে হামলা চালায়।
রাফিজ মুন্সি কোতোয়ালি থানায় একটি লিখিত অভিযোগে জানান, দুই মাস আগে তাদের বাড়ি থেকে একটি ১২৫ সিসি ডিসকভারি মোটরসাইকেল চুরি হয়। থানায় তিনি এ ঘটনায় একটি জিডি করেন। পরে বিভিন্ন মারফত তিনি জানতে পারেন, আবজাল মোল্লার দলবল এই চুরির সঙ্গে জড়িত। এরপর মাসখানেক আগে তাঁর বড় ভাই শাহিদ মুন্সি দুবাই থেকে দেশে আসেন। তাঁর কাছে আবজাল মোল্লা ও তার দলবল ১০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। এই চাঁদা না দেওয়ায় তাদের ওপরে দফায় দফায় হামলা করেছে।
অভিযোগ অস্বীকার করেছেন আবজাল মোল্লা। তাঁর ভাষ্য, নিজেরাই নিজেদের বাড়িতে ভাঙচুর করে উল্টো তাঁর বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করছেন। প্রবাসী ওই পরিবারের সদস্যরা সম্পর্কে মামাতো-ফুফাতো ভাই। তাঁর সঙ্গে শত্রুতা আছে বলেই এসব বলছে। তিনি জানান, তাঁর এক নাতি ওই রাস্তা দিয়ে আসার সময় মারধর করে শাহিদ মুন্সির দোকান কর্মচারী আশরাফুল।
আবজাল মোল্লা নিজেকে ইউনিয়ন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি দাবি করে বলেন, ২০১৮ সালে আমার ওপর আওয়ামী লীগের লোকজন হামলা করে। আমার পায়ে রড ঢোকানো, স্বাভাবিকভাবে হাঁটতেও পারি না।
কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আসাদুজ্জামানের ভাষ্য, ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।