Samakal | Rss Feed
ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র পরিকল্পনা ভেস্তে দিতে প্রকল্প
বিশ্ব
অনলাইন ডেস্ক <time class="op-modified" dateTime="2025-08-16"2025-08-16
2025-08-16
ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র গঠন পরিকল্পনার বিরুদ্ধে পশ্চিম তীরে একটি বসতি নির্মাণ প্রকল্প অনুমোদন করতে যাচ্ছে ইসরায়েল। এই প্রকল্পটির নাম ই-১ বসতি প্রকল্প। ফিলিস্তিনের বাসিন্দা ও মানবাধিকার সংস্থাগুলো আশঙ্কা করছে, এই প্রকল্পটি পশ্চিম তীরকে দুই ভাগে ভাগ করে ফেলবে। দখলদার দেশটি মনে করে, এর মাধ্যমে ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র গঠন পরিকল্পনা ভেস্তে যাবে।
নেতানিয়াহু সরকারের অর্থমন্ত্রী বেজালেল স্মোট্রিচ বৃহস্পতিবার সংবাদ সম্মেলন করেন। তিনি ই-১ প্রকল্প দিয়ে গর্ব প্রকাশ করে বলেন, প্রকল্পটি ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রের ধারণাকে কবর দেবে। স্বীকৃতি দেওয়ার মতো এখানে কিছুই নেই। কেউ যদি স্বীকৃতি দেওয়ার চেষ্টা করে, তারা আমাদের কাছ থেকে জবাব পেয়ে যাবে।
ইসরায়েলি মন্ত্রীর ঘোষণাটি এমন সময় এলো, যখন অস্ট্রেলিয়া, ব্রিটেন, ফ্রান্স, কানাডাসহ অনেক দেশ আগামী মাসে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেওয়ার ব্যাপারটি বিবেচনা করছে।
পূর্ব জেরুজালেমে চলমান ই-১ প্রকল্পটি বিতর্কিত। প্রকল্পটি পশ্চিম তীরের প্রধান শহর রামাল্লা ও বেথেলহেমের মধ্যে সংযোগ ঘটাবে। এই প্রকল্পটি ফিলিস্তিনিদের চলার গতিপথ বদলে দেবে। বিভিন্ন শহরে যেতে হলে কয়েক কিলোমিটার ঘুরে যেতে হবে বাসিন্দাদের। মুখোমুখি হতে হবে একাধিক চেক পয়েন্টের।
আগামী ২০ আগস্ট ই-১ প্রকল্পটি চূড়ান্ত অনুমোদন পাবে বলে আশা করছে ইসরায়েল। পশ্চিম তীরে বসতি সম্প্রসারণের ওপর নজরদারি সংস্থা পিস নাউয়ের মতে, প্রকল্পটি দ্বিরাষ্ট্রীয় সমাধান অর্জনের পথে বাধা সৃষ্টি করবে। রক্তপাত আরও বাড়বে।
ফিলিস্তিনি পররাষ্ট্রমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা আহমেদ আল-দিক এপিকে বলেন, প্রকল্পটি ঔপনিবেশিক, সম্প্রসারণবাদী ও বর্ণবাদী পদক্ষেপ। এটি ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার যে কোনো সম্ভাবনাকে দুর্বল করে তুলবে। জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসও ওই ঘোষণার নিন্দা জানিয়েছেন।
গতকাল পশ্চিম তীরে অভিযানে কমপক্ষে ২০ ফিলিস্তিনিকে গ্রেপ্তার করেছে দখলদার বাহিনী। নাবলুসে দুটি অভিযানে একই পরিবারের পাঁচ যুবককে আটক করা হয়েছে ও কালকিলিয়া থেকে তিন মাসহ আট জনকে ধরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। গাজা শহরের আকাশে যুদ্ধবিমান টহল দিচ্ছে। ভারী কামান, মর্টার ও
বিমান হামলা চলছে। গাজার উত্তর-পূর্বাঞ্চলে মাত্র কয়েক দিনে ৩০০-৩৫০টি বাড়ি ধ্বংস করা হয়েছে।
শুক্রবার গাজায় আরও চারজন ক্ষুধার্ত মানুষের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে সংখ্যা দাঁড়াল ২৩৯ জন, যাদের মধ্যে শতাধিক শিশু রয়েছে। গতকালের হামলায় ২১ জনের প্রাণ গেছে। মোট নিহত হয়েছেন ৬১ হাজার ৭৭৬ জন ও এক লাখ ৫৪ হাজার ৯০৬ জন আহত হয়েছেন।
গাজা ছেড়ে দিতে হুমকি ছিল সাংবাদিক আনাসের
ইসরায়েলি বাহিনীর লক্ষ্যবস্তু হামলায় নিহত হওয়ার কয়েক দিন আগে সাংবাদিক আনাস আল-শরিফকে একটি চুক্তির প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। তাঁকে গাজা কভার করা বন্ধ করতে বলা হয়েছিল। আনাসের ভাই বলেন, আমরা ভাই শেষ নিঃশ্বাস পর্যন্ত সত্যের পক্ষে কলম চালিয়ে যেতে অঙ্গীকার করেছিলেন। অন্যদিকে, গাজায় হামাসের সঙ্গে জড়িত– এমন সাংবাদিকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী ‘আইনিকরণ সেল’ নামে একটি ইউনিট গঠন করেছ।
গাজাবাসীর তাঁবু যেন জ্বলন্ত উনুন
প্রায় দুই বছর ধরে ইসরায়েলি বোমাবর্ষণ, ব্যাপক বাস্তুচ্যুতি ও অনাহারের মুখোমুখি ফিলিস্তিনিদের জীবনকে হুমকির মুখে ফেলেছে। আবাসস্থলে বিদ্যুৎ, এসি ও ফ্যান নেই। তাপ থেকে মুক্তির কোনো উপায় নেই। বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনি শরিফা আবু আরমানেহ আলজাজিরাকে বলেন, ‘তাঁবুর ভেতরে খুব গরম। একই সঙ্গে যুদ্ধ ও গরম আবহাওয়া আর সহ্য করতে পারছি না। এ ছাড়া পাশাপাশি রয়েছে তীব্র পানি সংকট।’
গাজায় মানবতার বিবেকের পরীক্ষা চলছে : এরদোগান
তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তায়েপ এরদোয়ান বলেছেন, গাজা উপত্যকায় যে মানবিক বিপর্যয় চলছে, তা কেবল একটি সংকীর্ণ ভূমির মধ্যে সীমাবদ্ধ সংঘাত হিসেবে দেখা উচিত নয়। বরং এটিকে একটি গভীরতর মানবিক বিপর্যয় হিসেবে দেখা উচিত, যা প্রতিক্ষণে মানবতার বিবেককে আহত করে। তিনি বলেন, ক্ষুধা, তৃষ্ণা এবং মহামারি রোগের হুমকি গাজাকে সম্পূর্ণ মানবিক পতনের দিকে ঠেলে দিচ্ছে।