চ্যানেল আই অনলাইন
দলবদল মৌসুম এলে বিশ্ব ফুটবলে তৈরি হয় হরেক জল্পনা-কল্পনা। কে কোথায় যাবেন, কত খরচে যাবেন, ক্লাবের সাথে দলবদল প্রসঙ্গে জটিলতা কিংবা কার মুখ থেকে থাবা দিয়ে কেড়ে নেয়া হবে কোন ফুটবলারকে, এসব নিয়ে শিরোনাম বাড়তেই থাকে। অনেক ফুটবলার দলবদলে একদম শেষ মুহুর্তে চুক্তি করে চমকে দেন। কিংবা প্রায় হয়ে যাওয়া সমঝোতা থেকে শেষ মুহুর্তে নাম সরিয়ে আলোচনার জন্ম দেন।
চলতি মৌসুমে অনেক নাটকীয়তার পর চুক্তিতে কলম ঘুরিয়েছেন ইংলিশ তারকা এবারশি এজে। ২০২৭ সাল পর্যন্ত ক্রিস্টাল প্যালেসের সাথে চুক্তিবদ্ধ থাকার পরও আর্সেনালের সঙ্গে চুক্তি করেছেন। ২৫ বর্ষী এজে প্রথমে টটেনহ্যামে যাবেন বলে সুর তোলেন। শেষমুহুর্তে ভোলপাল্টে নাম লেখান গানারদের ডেরায়।
ফুটবলে আগে এমন শেষ মুহুর্তের দলবদলগুলোয় চোখ রাখা যাক
আলফ্রেডো ডি স্টেফানো
রিয়ালের হয়ে পাঁচবারের ইউরোপসেরা আর্জেন্টাইন কিংবদন্তি আলফ্রেডো ডি স্টেফানো খেলতেন কলম্বিয়ার ক্লাব মিলোনারিওসে। ইউরোপে আসার সময় প্রথমে চেয়েছিলেন বার্সেলোনার হয়ে খেলতে, পরে নাম লেখার লস ব্লাঙ্কোস ডেরায়।

পল গাসকোয়েন
ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের কিংবদন্তি কোচ স্যার অ্যালেক্স ফার্গুসন ভেবেছিলেন ববি চার্লটনের পরে সবচেয়ে প্রতিভাবান ছিলেন পল গাসকোয়েন। ১৯৮৮ সালের গ্রীষ্ম ছুটি কাটিয়ে কোচ ভেবেছিলেন পল নাম লেখাবেন অলরেড ডেরায়। কথাবার্তাও চলছিল বেশ। শেষ মুহুর্তে পল নাম লেখান টটেনহ্যামে।
রয় কিন
১৯৯৩ সালের গ্রীষ্ম দলবদলে ২১ বর্ষী ইংলিশ তারকা রয় কিন নটিংহ্যাম ফরেস্ট থেকে ব্লাকবার্ন রোভার্সে নাম লেখাবেন, কোচের সাথে কথাবার্তা চলছিল। একই সময় ইউনাইটেড কোচ ফার্গুসন দেখা করেন কিনের সাথে। ভোলপাল্টে ম্যানচেস্টারের দিকে কলম ঘোরান কিন। এরপর ইতিহাস। বনে যান ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড কিংবদন্তি।
ইমানুয়েল পেটিট
ফ্রেঞ্চ তারকা ইমানুয়েল পেটিট ১৯৯৭ সালের গ্রীষ্ম দলবদলে টটেনহ্যামে আসবেন, খবর পাকাই ছিল। কিন্তু তাকে দেয়া প্রস্তাবে ছিলেন অসন্তষ্ট। পরে কিংবদন্তি কোচ আর্সেন ওয়েঙ্গারের অধীনে আর্সেনালে নাম লেখান পেটিট।
রোনালদিনহো
২০০৩ সালের গ্রীষ্ম দলবদলে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড সর্বাত্মক চেষ্টা চালায় ব্রাজিলিয়ান রোনালদিনহোকে কিনতে। প্রস্তাব পৌঁছার ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে সবকিছু ওলটপালট হয়ে যায়। একটি ফোন পাল্টে দেয় প্লট। বার্সেলোনা সভাপতি পদের জন্য নির্বাচন চলছিল হুয়ান লাপোর্তা ও সান্দ্রো রোসেলের মধ্যে।
রোসেল ব্রাজিলিয়ান তারকাকে ফোন করে বলেছিলেন, ‘আমি ক্লাব সভাপতি হলে কি বার্সায় আসতে রাজি হবে?’ তখন অকপটে রাজি হয়ে ন্যু ক্যাম্পে ঠিকানা গড়েছিলেন রোনালদিনহো। রোসেল নির্বাচনে হারলেও বহাল থাকেন সহ-সভাপতি পদে।

দিমিত্রি বার্বাতোভ
বুলগেরিয়ান তারকা দিমিত্রি বার্বাতোভকে নিতে ২০০৮ সালের গ্রীষ্মে টটেনহ্যাম চেয়ারম্যান ও ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড কোচের মধ্যে বাধে বিপত্তি। দলবদলের শেষদিন পর্যন্ত চলতে থাকে দরকষাকষি। ম্যানচেস্টার সিটিও আগ্রহ দেখায় তাকে নিতে। কিন্তু তিনি আগ্রহ দেখাননি। শেষে হাল ছেড়ে দেয় টটেনহ্যাম। নাম লেখান অলরেডদের হয়ে।
পেদ্রো
তখনকার সর্বশেষ ব্যালন ডি’অর জয়ী ২০১৫ সালের গ্রীষ্মের দলবদলে বার্সেলোনা থেকে নাম লেখান চেলসিতে। সেই দলবদলে কথা চালাচালি ছিল তিনি যাবেন ইংল্যান্ডে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডে। কিন্তু ইউনাইটেডের ডাচ কোচ লুইস ফন গাল পরে অস্বীকার করেছিলেন পেদ্রোকে নিতে কোন চেষ্টাই চালাননি।
জর্জিনহো
২০১৮ সালের জুলাইতে ইতালিয়ান ক্লাব নাপোলি থেকে চেলসিতে নাম লেখান ব্রাজিলিয়ান তারকা জর্জিনহো। দলবদলে অবশ্য নাপোলি সভাপতি রাগও করেন। ২০২২ সালে সাক্ষাৎকারে জর্জিনহো বলেছিলেন, ‘অবশ্য সেসময় আমি চেলসিতেও যেতে চাইনি। আমার পছন্দে ছিল অন্য একটি ইংলিশ ক্লাব।’