ফ্যাসিস্ট কাদেরের ধৃষ্টতা: আবারো টার্গেট সেনাপ্রধান

Google Alert – সেনাপ্রধান

 

আবারো স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের প্রতীক দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনীকে নিয়ে ধৃষ্টতাপূর্ণ মন্তব্য করল গণহত্যাকারী দল আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ফ্যাসিস্ট ওবায়দুল কাদের। নতুন একটি ভিডিওতে সেনাপ্রধানকে টার্গেট করে ক্ষোভ উগলে দিতে দেখা গেল জনরোষ থেকে বাঁচতে ভারতে আশ্রয় নেওয়া এই খুনিকে। অন্যদিকে, সেনাপ্রধান সম্পর্কে অত্যন্ত উদ্ভট মন্তব্য করে ট্রলের শিকার হয়েছে ‘কাউয়া কাদের’ খ্যাত সাবেক এই সেতুমন্ত্রী।

 

মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) একটি ইউটিউব চ্যানেলের টকশোতে জুলাই গণহত্যার অন্যতম মাস্টারমাইন্ড কাদের সেনাপ্রধানকে অত্যন্ত জঘন্য উপমা দেয়। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানকালে অত্যন্ত দায়িত্বশীল ও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে দেশকে গভীর সঙ্কট থেকে রক্ষা করে অত্যন্ত প্রশংসিত হন সেনাপ্রধান। তাকে মীর জাফর আলী খানের সাথে তুলনা করে মানুষের ক্ষোভ উস্কে দিয়েছে উদ্ভট ও দাম্ভিক বাচনভঙ্গির এই ফ্যাসিস্ট।

 

টকশোতে খুনি কাদের আওয়ামী লীগের পতনের জন্য সেনাবাহিনীকে সরাসরি দোষারোপ করে। ছাত্রজনতার আন্দোলনের চূড়ান্ত ও শেষ মুহূর্তে তাদের অবৈধ ক্ষমতা রক্ষায় দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনীকে ব্যবহার করতে না পারার ক্ষোভ ঝাড়তে দেখা যায় তাকে।

 

কাদেরকে প্রশ্ন করা হয়- সেনাপ্রধান সম্পর্কে যে মূল্যায়নটি এখন করছেন সেটি কি আপনারা এই গোপালগঞ্জের ঘটনার পরে বুঝতে পেরেছিলেন? জবাবে কাদের বলে, আমরা সেনাবাহিনী সম্পর্কে কোন বক্তব্য রাখিনি। যদিও আমরা দেখেছি তাদের নীরব উপস্থিতির মুখে তাদের নাকের ডগায় ৩২ নম্বর বুলডোজার দিয়ে ধ্বংস করা হয়েছিল। এবং তাদের উপস্থিতিতে সেদিন যে জঙ্গি হামলা ৫ই আগস্টের সেটাও তাদের নীরব উপস্থিতিতে সংঘটিত হয়েছে। কারো কারো মতে তাদের সায়ও ছিল, সমর্থনসূচক সম্মতিও ছিল- এরকমটাও আমরা জানতে পেরেছি।

 

জনরোষ থেকে বাঁচতে গোপনে দেশ ছাড়ে ছাত্রদের বিরুদ্ধে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগকে সশস্ত্রভাবে লেলিয়ে দেওয়া আওয়ামী লীগের এই সাধারণ সম্পাদক। শোনা যায়, তাকে অবৈধভাবে সীমান্ত পাড়ি দিয়ে ভারতে পালাতে সাহায্য করে বিভিন্ন বাহিনীতে থাকা তারই অনুকম্পায় চাকরি পাওয়া তল্পিবাহক কিছু কর্মকর্তা।

 

এর আগেও ভারতে আশ্রয় নেওয়া কাদের আবারও দেশে প্রত্যাবর্তন করে ছাত্রজনতাকে দেখে নেওয়ার হুমকি দেয়। এপ্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হয়, গত এক বছরে কি ধরনের প্রস্তুতি নিলেন প্রত্যাবর্তনের? সেটি কবে নাগাদ হতে পারে? সেনাবাহিনী যদি আপনাদের বিরুদ্ধে থাকে সেক্ষেত্রে আপনারা কেমন করে অগ্রসর হবেন?

 

জবাবে ফ্যাসিস্ট কাদের বলে, গোটা সেনাবাহিনী আমাদের বিরুদ্ধে এ কথা তো আমরা বলি না। সেনাবাহিনীর মধ্যেও বিভিন্ন সমীকরণ থাকতে পারে। আমাদের বিরুদ্ধে তো যারা আছে তাদের সবাই মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধে এমনটি তো বলার উপেক্ষা রাখে না। বাংলাদেশে মুক্তিযুদ্ধকে যখন ধ্বংস করার জন্য চক্রান্ত চলছে আমার বিশ্বাস দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনী সেখানে তাদের যে দায়িত্ব ইতিহাস অর্পিত যে দায়িত্ব সে দায়িত্ব সময়মত তারাপালন করবে।

 

আওয়ামী লীগকে বাদ দিয়ে নির্বাচন আয়োজন প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে কাদের অবান্তর দাবি করে বলে, আমরা বাংলাদেশের বেশিরভাগ জনগণের প্রতিনিধিত্ব করি। সেই পার্টিকে নিষিদ্ধ রেখে নির্বাচনে অংশগ্রহণ থেকে বিরত রেখে বাংলাদেশে কোন ইনক্লুসিভ নিরপেক্ষ ফ্রি ফেয়ার ইলেকশন হতে পারেনা। হওয়া সম্ভব না।

 

পুরো ভিডিওতে ঠিকমতো সোজা হয়ে বসে কথা বলতে দেখা যায়নি তাকে। চেয়ারে হেলে-দুলে বসে চেগিয়ে চেগিয়ে বলতে থাকে, ক্ষমতার রাজনীতি রহস্যপুরুষ ইউনূস তার ক্ষমতাকেই ভালোবাসে। গণতন্ত্র তার কাছে কোন বিষয় না। অলরেডি তার সমর্থকরা যারা, তার সে এলায়েন্স ফোর্স তারাই বিভিন্ন ইস্যুতে বিভক্ত হয়ে একটা জগাখিচুড়ি পরিবেশ সৃষ্টি করছে, যেটা নির্বাচনের পথে প্রতিবন্ধক হয়ে দাঁড়াতে পারে।

 

হাসিনা দলীয় নেতাদের সঙ্গে সশরীরে বৈঠক শুরু করেছেন- এ বিষয়ে জানতে চাইলে স্পষ্টভাবে কোনো জবাব দিতে পারেনি সে। আওয়ামী লীগের পলাতক নেতারা যে এখনও অসংগঠিত তা তার কথা থেকে বোঝা যায়। হাসিনার সাথে এপর্যন্ত সরাসরি যোগাযোগের বিষয়ে সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য জানাতে পারেনি সে।

 

কাদের বলে, অনেকেই বিতর্কিত অনেক নেতাকে নিষ্ক্রিয় করা হয়েছে এ কথা মোটেও সত্য না। এখন এসব বাছবিচার করার সময় না। এখন সবাই কাজ করছে যারা কাজ করতে চায়। পরবর্তীতে দেখা যাবে কারা সক্রিয় থাকে কারা নিষ্ক্রিয় থাকে।যারা এখন সক্রিয় থাকবে সংগ্রামে আন্দোলনে থাকবে- সবকিছুই তো আমরা পর্যবেক্ষণ করছি

 

‘‘আমাদের পার্টিতে একটা নিয়ম আছে। তিন বছর পর পর আমাদের পার্টির সম্মেলন এবং সম্মেলনের মধ্য দিয়ে নতুন নেতৃত্ব আসে। আর এই প্রক্রিয়ায় কাউন্সিলরদের সম্মতি নিয়ে আমাদের নেত্রী আমাদের সভাপতি শেখ হাসিনাই এ ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেন। তবে আমাদের তিন বছর সর্বশেষ আমার দুই টার্মের পর এটা থার্ড টার্ম চলছে। এটা শেষ হবে আগামী ডিসেম্বর। এখন ডিসেম্বরে আমরা কোথায় থাকবো সেটা আমি জানি না। এবং তখন যদি সম্মেলন করার মত অবস্থা না থাকে তখন অন্তর্বর্তী কোন ব্যবস্থা যদি নেওয়ার দরকার হয় আমাদের নেত্রী প্রয়োজনে নিতে পারেন’’ বলে ফ্যাসিস্ট কাদের।

 

‘‘আমার কোন পদের প্রতি কোন মোহ নেই। তিনবার আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হয়েছি। স্বাধীনতার পর এটা কারো ভাগ্যে জোটেনি। আমি সর্বমোট ১৮ বছরমন্ত্রী ছিলাম। আওয়ামী লীগ করে এ সৌভাগ্য কারো জুটেছে এমন তো আমার মনে পড়ে না। এরপর কোন পদের প্রতি আমার কোন আকাঙ্ক্ষা নাই। আমি এখন দিতে চাই। আমার পাওয়ার গর সব শূন্যতাই পূরণ হয়ে গিয়েছে। আমার কোন কিছু পাওয়ার চাওয়ার নাই’’ আরও যোগ করে সে।

 

কাদের বলে, আমি বঙ্গবন্ধু কন্যার সম্মানজনক স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের লক্ষ্যে আজকের জঙ্গিবাদী সরকারের অবসানে আমার যা যা দায়িত্ব এই মুহূর্তে নেত্রীর নির্দেশ মত আমি কাজ করে যাচ্ছি। যখন আমার প্রয়োজন পুরিয়ে যাব তখন আমি সরে যাব আমার এখানে কোন অহংবোধ নেই পথ আকড়ে রাখার সামান্যতমবাসনাও নেই।

 

শেখ হাসিনা বৈঠক শুরু করেছেন; পাঁচজন পাঁচজন করে নেতার সঙ্গে তিনি বৈঠক করছেন। এপ্রসঙ্গে সে বলে, এ ধরনের কোন সিগনাল আমি তো পাইনি। অন্য কেউ পেয়েছে সেটাও আমার জানা নেই। কারণ এখানে তিনি যেখানে আছেন সেখানে কতটুকু সম্ভব এত ইমপারসোনাল আলোচনা সেটাও কিন্তু বিবেচনার বিষয়।

 

এমনিতে আমি জানিনা যে এ ধরনের কোন বৈঠক করছি। এমনিতে বা এ ধরনের কোন ইমপারসন বৈঠক করার সুযোগ
আছে সেটা আমার জানা নাই।

 

‘‘আমার সাথে (হাসিনার) দেখা একবারও হয়নি। আমি তাকে অহেতু ডিস্টার্ব করি না। আমি চেষ্টাও করি নাই দেখা করার প্রয়োজনীয় নির্দেশ তিনি দিলে সেটা আমি পাই’’ জানায় সে।

 

তবে জরুরি নির্দেশ কিভাবে পায় তার স্পষ্ট ব্যাখ্যা দিতে পারেনি কাদের। বলে, জরুরি প্রয়োজনে যেভাবে পাওয়া আজকের পৃথিবীতে সম্ভব। তথ্য প্রযুক্তির যুগে আপনি প্রশ্ন করছেন না।

Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *