Bangla Tribune
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান দেশের বন সংলগ্ন রিসোর্স সেন্টারগুলোকে নেচার লার্নিং হাবে রূপান্তরের প্রস্তাব উত্থাপন করেছেন, যাতে নগরবাসী বিশেষ করে তরুণ প্রজন্মের মধ্যে জীববৈচিত্র্য সম্পর্কে সচেতনতা ও সংযোগ বাড়ে।
বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) সচিবালয়ে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে তিনি জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সিকে (জাইকা) এ প্রস্তাব দেন। সভায় জাপানি প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন জাইকার নির্বাহী সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট মিয়াজাকি কাতসুরা।
বৈঠকে উপদেষ্টা জাইকার সহযোগিতায় বাংলাদেশ ফরেস্ট ইন্ডাস্ট্রিজ ডেভেলপমেন্ট করপোরেশনকে (বিএফআইডিসি) আধুনিকায়ন করে পরিবেশবান্ধব আসবাবপত্র উৎপাদন ও নতুন বাজারে প্রবেশের দিকেও গুরুত্বারোপ করেন। পাশাপাশি, সাফারি পার্কগুলোকে আন্তর্জাতিক মানে উন্নীতকরণ এবং ডিজিটাল প্রযুক্তির মাধ্যমে বন পর্যবেক্ষণ ব্যবস্থাকে জোরদার করে অবৈধ কাঠ আহরণ প্রতিরোধেরও আহ্বান জানান।
পরিবেশ উপদেষ্টা নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে বাংলাদেশের অগ্রগতির কথা তুলে ধরে বলেন, সরকারি দফতরে সৌরবিদ্যুৎ সংযোগ নিশ্চিত করতে কাজ চলছে।
বৈঠকে পরিবেশ উপদেষ্টা জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্ট ফান্ড এবং নবগঠিত ‘বাংলাদেশ ক্লাইমেট ডেভেলপমেন্ট পার্টনারশিপ’ প্ল্যাটফর্মের কথাও উল্লেখ করেন, যার মাধ্যমে আন্তর্জাতিক জলবায়ু অর্থায়ন কার্যকরভাবে পরিচালিত হবে। পাশাপাশি তিনি বন্যপ্রাণী সংরক্ষণে একটি পৃথক ট্রাস্ট গঠনের প্রস্তাব দিয়ে জাপানের সহযোগিতা কামনা করেন।
মিয়াজাকি কাতসুরা বাংলাদেশের আত্মনির্ভরশীল উন্নয়ন প্রচেষ্টাকে সাধুবাদ জানিয়ে জাইকার পক্ষ থেকে ‘জিরো দারিদ্র্য’ ও ‘জিরো বেকারত্ব’র বৈশ্বিক লক্ষের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করেন। তিনি ‘ক্লিন ঢাকা’ প্রকল্পসহ পরিবেশ খাতে জাইকার দীর্ঘমেয়াদি ভূমিকা এবং অভিযোজন কার্যক্রমে তথ্যভিত্তিক পরিকল্পনা, জ্ঞান বিনিময়, জ্বালানি রূপান্তর ও বেসরকারি বিনিয়োগের ওপর চারটি মূল সহায়তা ক্ষেত্র তুলে ধরেন।
বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. ফারহিনা আহমেদ, অতিরিক্ত সচিব মোহাম্মদ নাভিদ শফিউল্লাহ ও অতিরিক্ত সচিব মো. খায়রুল হাসান, প্রধান বন সংরক্ষক মো. আমীর হোসেন চৌধুরী এবং জাইকার দক্ষিণ এশিয়া বিভাগের মহাপরিচালক ইয়ামাদা তেতসুয়া, বাংলাদেশ অফিসের চিফ রিপ্রেজেন্টেটিভ ইচিগুচি তোমোহিদে ও সিনিয়র রিপ্রেজেন্টেটিভ মিউরা মারি।
দীর্ঘস্থায়ী বন্ধুত্ব ও পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধের ভিত্তিতে গড়ে ওঠা এই বৈঠকে জলবায়ু পরিবর্তনে অভিযোজন, জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ, বন ব্যবস্থাপনা ও টেকসই উন্নয়ন নিয়ে গভীর সহযোগিতার ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়।