বন্দুকভাঙ্গার মারিচুকে ভূমি বেদখল করে সেনা ক্যাম্প স্থাপনের প্রতিবাদে কুদুকছড়িতে বিক্ষোভ

CHT NEWS


রাঙামাটি প্রতিনিধি, সিএইচটি নিউজ
সোমবার, ১৩ জানুয়ারি ২০২৫

রাঙামাটি সদর উপজেলার বন্দুকভাঙ্গা ইউনিয়নের মারিচুকে ভূমি বেদখল করে সেনাক্যাম্প
নির্মাণের জন্য দুই পরিবারকে বাড়ি থেকে উৎখাত, ধুতাঙ্গ মোন অরণ্য কুটিরের নামে ষড়যন্ত্রমূলক
মিথ্যা প্রচার ও যমচুগ বনাশ্রম ভাবনা কেন্দ্রের ১৫০টি সুপারি গাছ জোরপূর্বক কেটে দেয়ার
প্রতিবাদে রাঙামাটির কুদুকছড়িতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে ছাত্র-জনতার সংগ্রাম
পরিষদ।

আজ সোমবার (১৩ জানুয়ারি ২০২৫) বেলা ১:০০টার সময় কুদুকছড়ির নির্বানপুর বন
বিহারের মূল ফটক থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি রাঙামাটি-খাগড়াছড়ি সড়ক প্রদক্ষিণ
করে কুদুকছড়ি বাজার ঘুরে এসে বড় মহাপুরুম উচ্চ বিদ্যালয়ের মূল ফটকে সমাবেশে মিলিত হয়।

সমাবেশে ছাত্র-জনতার সংগ্রাম পরিষদের কেন্দ্রীয় উপদেষ্টা কমিটির সদস্য নতুনজয়
কার্বারীর সভাপতিত্বে ও সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ সম্পাদক শ্যামল চাকমার সঞ্চালনায়
বক্তব্য রাখেন সংগঠনটির কেন্দ্রীয় কমিটির অর্থ সম্পাদক হরি কুমার কার্বারী।

সমাবেশে হরি কুমার কার্বারি বলেন, বন্দুকভাঙার যে জায়গাটিতে সেনাবাহিনী
ক্যাম্প স্থাপনের ষড়যন্ত্র করছে সেটির মালিক সেখানকার তিন জন পাহাড়ি। সেখানে তাদের
১৫ একর জায়গা রয়েছে। এখন সেনাবাহিনী তাদের জায়গা ও বসতবাড়ি দখল করে সেখানে অবস্থান
করছে। সেনাবাহিনী যে অন্যায়ভাবে পাহাড়িদের জায়গা দখল করে ক্যাম্প নির্মাণ করছে তা বন্ধ
করার জন্য অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে দাবি জানাতে আজকে আমরা এখানে বিক্ষোভ মিছিল
ও সমাবেশ করছি।


তিনি আরো বলেন, উক্ত স্থানে সেনা ক্যাম্প নির্মাণ করা হলে সেখানকার পাহাড়িরা
উচ্ছেদ হবে এবং আমাদের মা-বোনেরা নিরাপত্তাহীন হয়ে পড়বে। তাই আমরা অবিলম্বে সেখানে
ক্যাম্প স্থাপনের ষড়যন্ত্র বন্ধের দাবি জানাচ্ছি।

এ সময় তিনি ধুতাঙ্গ মোন অরণ্য কুটির নিয়ে অপপ্রচারের বিষয়ে বলেন, এটি কুটিরের
জায়গাটি বেদখলের একটি সুগভীর ষড়যন্ত্র। একটি ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান নিয়ে যারা অপপ্রচার
চালিয়েছে তাদেরকে অবশ্যই জনগণের কাছে ক্ষমা চাইতে হবে।

তিনি বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যদি অবিলম্বে মারিচুকে ভূমি বেদখল ও
কাম্প স্থাপনের ষড়যন্ত্র বন্ধ না করে তাহলে আমরা কঠোর আন্দোলনের কর্মসূচি দিতে বাধ্য
হবো।

সমাবেশের সভাপতি নতুন জয় কার্বারি বলেন, বাংলাদেশ স্বাধীনতার পর থেকে পার্বত্য
চট্টগ্রামে পাহাড়ি জনগণের ওপর নিপীড়ন-নির্যাতন চলে আসছে। এখনো এর কোন শেষ নেই। তাই
নিপীড়িত-নির্যাতিত জাতি হিসেবে আমাদের আন্দোলন ছাড়া কোন উপায় নেই।

তিনি খাগড়াছড়িতে একটি বৌদ্ধ বিহারে সেনাবাহিনী কর্তৃক ধর্মীয় পরিহানির ঘটনা
তুলে ধরে বলেন, আজ সকালে সেনাবাহিনীর সদস্যরা খাগড়াছড়ি সদরের গাছবান বাবুরো পাড়ায় মিলন
সংঘ বৌদ্ধ বিহার নামে একটি বৌদ্ধ বিহারে ধর্মীয় রীতিনীতি তোয়াক্কা না করে ঘেরাও করে
তল্লাশি, বিহারে দায়িত্বরত ভান্তেকে হেনস্তা ও তার মোবাইল কেড়ে নেয়। এছাড়া পূর্ণিমা
উপলক্ষে বিহারে অষ্টশীল পালনকারী দায়ক-দায়িকাদেরও হেনস্তা ও তাদের মোবাইল কেড়ে নেওয়া
হয়েছে।

তিনি বলেন, আমাদেরকে ধর্ম পালনেও বাধা সৃষ্টি করা হচ্ছে। এর চেয়ে নিপীড়ন-নির্যাতন
আর কী হতে পারে? তিনি সকলকে অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ ও আন্দোলন করার আহ্বান জানান।

সমাবেশ থেকে নতুন জয় কার্বারি অবিলম্বে বন্দুকভাঙার মারিচুকে সেনা ক্যাম্প
স্থাপন ও ভূমি বেদখলের ষড়যন্ত্র বন্ধ করা, সেনাবাহিনী কর্তৃক দখলকৃত দুই গ্রামবাসীর
বাড়ি ফিরিয়ে দেয়া, যমচুগ বনাশ্রম ভাবনা কেন্দ্রের সুপারি গাছ কর্তনের যথাযথ ক্ষতিপূরণ
প্রদান এবং উক্ত এলাকায় সাধারণ পাহাড়িরা যাতে হয়রানির শিকার না হয় তার নিশ্চয়তা বিধানের
জন্য অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের নিকট দাবি জানান।


সিএইচটি নিউজে প্রকাশিত প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ,ভিডিও, কনটেন্ট ব্যবহার করতে হলে কপিরাইট আইন অনুসরণ করে ব্যবহার করুন।


Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *