Google Alert – বাংলাদেশ
বাংলাদেশে এআই চালিত পোর্টেবল আল্ট্রাসাউন্ড ডিভাইস আনার ঘোষণা দিয়েছে মার্কিন কোম্পানি এক্সো ইমেজিং।
এ কোম্পানির সহ-প্রতিষ্ঠাতা ইউসুফ হক এবং সন্দীপ আকারাজু বৃহস্পতিবার রাষ্ট্রীয় অতিথিভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে এ প্রযুক্তির সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা করেন বলে সরকারপ্রধানের দপ্তর থেকে জানানো হয়।
বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত মার্কিন মেডিকেল টেকনোলজি বিশেষজ্ঞ এবং এক্সোর চিফ টেকনোলজি অফিসার ইউসুফ হক বলেন, তাদের কোম্পানি প্রথমে দেশের শীর্ষস্থানীয় হাসপাতালগুলোতে এ ডিভাইস চালু করবে। দীর্ঘমেয়াদে গ্রামীণ ও কমিউনিটি স্বাস্থ্যকেন্দ্র পর্যন্ত এর সুবিধা পৌঁছে দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে।
“ডিভাইসটি বহনযোগ্য এবং অত্যন্ত দক্ষভাবে কাজ করবে, ফলে প্রত্যন্ত অঞ্চলেও উচ্চমানের ডায়াগনস্টিক সেবা সহজলভ্য হবে।”
ইউসুফ হক বলেন, “এটি বিশ্বব্যাপী স্বাস্থ্যসেবায় নতুন মাত্রা যোগ করবে, বিশেষ করে বাংলাদেশের গ্রামীণ অঞ্চলে। ডাক্তার ও নার্সরা শিগগিরই এটিকে স্টেথোস্কোপের মত ব্যবহার করবেন।”
এক্সোর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সন্দীপ আকারাজু বলেন, বাংলাদেশই এশিয়ার প্রথম দেশ, যেখানে এ প্রযুক্তি চালু হতে যাচ্ছে। বর্তমানে মার্কিন ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের (এফডিএ) অনুমোদন নিয়ে কেবল যুক্তরাষ্ট্রে এ ডিভাইস পাওয়া যাচ্ছে।
“আমরা খুব শিগগিরই মেক্সিকো এবং আরও কয়েকটি লাতিন আমেরিকান দেশে এটি চালুর পরিকল্পনা করছি।”
এআই-চালিত এই পোর্টেবল আল্ট্রাসাউন্ড ডিভাইস হৃদরোগ, যক্ষ্মা, স্তন ক্যান্সার, ফুসফুসের রোগ, থাইরয়েড সমস্যা এবং গর্ভধারণ সংক্রান্ত জটিলতা প্রাথমিক পর্যায়ে সনাক্ত করতে সহায়তা করবে।
“শুনতে যেন সায়েন্স ফিকশনের মত” মন্তব্য করে প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস এ উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, “এটি সার্বজনীন স্বাস্থ্যসেবা অর্জনের পথে একটি বড় পদক্ষেপ। স্বাস্থ্যসেবায় এআই একটি বিস্ময়কর ভূমিকা রাখছে।
“আমরা জানি, চিকিৎসা শুরু হয় রোগ নির্ণয়ের মাধ্যমে, কিন্তু রোগীরা পরীক্ষার জন্য অপেক্ষা করতে গিয়ে আরও অসুস্থ হয়ে পড়েন। এই প্রযুক্তি সেই চাপ কমাতে পারবে, কারণ এটি রোগীর কাছে ডায়াগনস্টিক সুবিধা পৌঁছে দেবে।”
ডিভাইসটির বহনযোগ্যতার সুবিধা নিয়ে ইউসুফ হক বলেন, “ডাক্তার এবং স্বাস্থ্যকর্মীরা সরাসরি রোগীর কাছে ডিভাইসটি নিয়ে যেতে পারবেন, ফলে দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা বা ভ্রমণের প্রয়োজন হবে না।”
এক্সোর বোর্ড সদস্য ও ইন্টেল করপোরেশনের সাবেক চেয়ারম্যান ওমর ইশরাক বলেন, “বাংলাদেশের মত দেশের জন্য এটি একটি গেইম চেঞ্জার। বিশ্বের প্রায় ৮০ শতাংশ মানুষ মানসম্পন্ন স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত। এ ধরনের প্রযুক্তি সেই ঘাটতি পূরণে সহায়ক হবে।
“স্তন ক্যান্সারের মত দীর্ঘমেয়াদি রোগে আক্রান্ত রোগীদের ঘন ঘন স্ক্রিনিংয়ের প্রয়োজন হয়। এই ডিভাইস সেই প্রক্রিয়াকে সহজ করবে। এটি পরবর্তী প্রজন্মের স্টেথোস্কোপ—যা তাৎক্ষণিকভাবে এআই-চালিত ডায়াগনস্টিক তথ্য প্রদান করে।”
আকারাজু জানান, এক্সো একটি পরিপূরক সফটওয়্যারও তৈরি করছে, যা রোগীদের অগ্রাধিকার নির্ধারণ, ফলো-আপ রিমাইন্ডার পাঠানো এবং রোগী-ডাক্তার যোগাযোগ সহজ করতে সাহায্য করবে।
তার ভাষায়, এটি টেলিমেডিসিনের পরবর্তী ধাপ।
অন্যদের মধ্যে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী সাইদুর রহমান, বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন এবং এসডিজি বিষয়ক সিনিয়র সচিব লামিয়া মোরশেদ বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।