বাংলাদেশে ব্যর্থ সাইম ক্যারিবিয়ানে জ্বলে উঠে জেতালেন পাকিস্তানকে

Google Alert – বাংলাদেশ

তিন ম্যাচে ২৮ রান, উইকেট একটিও নয়। কদিন আগে বাংলাদেশ সফরে এই ছিল সাইম আইয়ুবের পারফরম্যান্স। কিন্তু তার ওপর কেন এত আস্থা পাকিস্তানের টিম ম্যানেজমেন্টের, সেটির ঝলক কিছুটা দেখালেন তরুণ ক্রিকেটার। তার অলরাউন্ড পারফরম্যান্সের পথ ধরে জয় দিয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজে টি-টোয়েন্টি সিরিজ শুরু করল পাকিস্তান।


তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথমটিতে পাকিস্তান জিতেছে ১৪ রানে।


ফ্লোরিডায় বাংলাদেশ সময় শুক্রবার সকালের ম্যাচে পাকিস্তান ২০ ওভারে তোলে ১৭৮ রান। ওয়েস্ট ইন্ডিজ যেতে পারে ১৬৪ রান পর্যন্ত।


৩৮ বলে ৫৭ রানের ইনিংসের পর গুরুত্বপূর্ণ দুটি উইকেট নিয়ে ম্যাচের সেরা সাইম। তিনি ছাড়া দুই দলের আর কোনো ব্যাটসম্যান ৩৫ রান ছাড়াতে পারেননি।


ম্যাচের ফলাফল দেখে যতটা মনে হচ্ছে, লড়াই আদতে ততটা জমে ওঠেনি। রান তাড়ায় শেষ তিন ওভারে জেসন হোল্ডার ও শামার জোসেফ ছয় ছক্কায় ৫০ রান তুলে ব্যবধান কমান।


অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে পাঁচ ম্যাচের সিরিজে হোয়াইটওয়াশড হওয়ার রেশ থাকতেই আরেকটি পরাজয়ে ডুবল ক্যারিবিয়ানরা। অবিশ্বাস্যভাবে, দুই বারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা সবশেষ ২০ টি-টোয়েন্টির ১৭টিই হেরে গেল!


লডারহিলে শুক্রবার শেষদিকে অমন তাণ্ডব চালালেও ক্যারিবিয়ানরা পিছিয়ে পড়ে মূলত রান তাড়ার শুরুতে। নতুন উদ্বোধনী জুটিতে জনসন চার্লস ও জুয়েল অ্যান্ড্রু ৭২ রান তোলেন ঠিকই। কিন্তু ততক্ষণে শেষ ১১ ওভার!


পাওয়ার প্লেতে ৪৭ রান তুললেও পরে ডানা মেলতে পারেননি দুজন।


দলে ফেরার ম্যাচে অভিজ্ঞ জনসন চার্লস দুটি করে ছক্কা ও চার মারলেও ৩৫ রান করতে বল খেলেছেন ৩৬টি। ওয়েস্ট ইন্ডিজের সর্বকনিষ্ঠ ক্রিকেটার (১৮ বছর ২৩৬ দিন) হিসেবে টি-টোয়েন্টি অভিষেকে নামা অ্যান্ড্রুও ফেরেন ঠিক ৩৫ রানেই। তবে তিনটি ছক্কা মারলেও তিনি বল খেলেন ৩৩টি।


রানের গতি বাড়াতে চারে প্রমোশন পাওয়া গুডাকেশি মোটি ফেরেন প্রথম বলেই। এক ওভারেই ওই তিন উইকেট নেন মোহাম্মাদ নাওয়াজ।


ওভারপ্রতি রান লাগে তখন ১৩ করে!


সেই দাবি মেটাতে পারেনি দলের অন্যরা। গ্রিপ ও টার্ন থাকা উইকেটে পাকিস্তানের স্পিনারদের সামনে সুবিধা করতে পারেননি ওয়েস্ট ইন্ডিজের ব্যাটসম্যানরা।


ক্যারিবিয়ানদের বড় ভরসার দুই ব্যাটসম্যান শেই হোপ ও শেরফেন রাদারফোর্ডকে ফেরান সাইম। টি-টোয়েন্টি দলে ফেরা শাহিন শাহ আফ্রিদি বিদায় করেন রোস্টন চেইসকে। একটি করে ছক্কা ও চার মারা রোমারিও শেফার্ডকে বিদায় করেন দলে ফেরা আরেক বোলার বাঁহাতি রিস্ট স্পিনার সুফিয়ান মুকিম।


শেষ তিন ওভারে ওয়েস্ট ইন্ডিজের প্রয়োজন পড়ে ৬৫ রানের। আফ্রিদির ওভারে তখন ১২ রান নেন হোল্ডার ও শামার, হারিস রউফের ওভারে তিন ছক্কায় আসে ১৯ রান, ফাহিম আশরাফের ওভারে দুই ছক্কা ও এক চারে ১৯ রান। কিন্তু যথেষ্ট হয়নি তা।

চার ছক্কায় ১২ বলে ৩০ রানে অপরাজিত থাকেন হোল্ডার, ১২ বলে অপরাজিত ২১ শামার।


ম্যাচের প্রথম ভাগে পাকিস্তান ব্যাটিংয়ে নামে টস হেরে। ওপেনার সাহিবজাদা ফারহান (১২ বলে ১৪) বেশিক্ষণ থাকতে পারেননি। তবে দ্বিতীয় উইকেটে সাইম ও ফাখার জামান ৮১ রানের জুটি গড়েন ৫১ বলে।


উইকেট খুব সহজ ছিল না ব্যাটিংয়ে জন্য। উইকেট পড়ে দারুণ দক্ষতায় দলকে এগিয়ে নেন দুই ব্যাটসম্যান। সাইম ফিফটি করেন ৩৪ বলে।


সাইমের বিদায়েই ভাঙে এই জুটি। একটু পর ফাখার থামেন ২৪ বলে ২৮ রান করে।


দুই ছক্কায় হাসান নাওয়াজের ১৮ বলে ২৪ রান আরেকটু এগিয়ে নেয় দলকে। এরপর অধিনায়ক সালমান আলি আগা (১০ বলে ১১*) ও মোহাম্মাদ নাওয়াজ (৮ বলে ৯) ভালো করতে পারেনি। তবে শেষ দিকে ৯ বলে ১৫ করেন ফাহিম আশরাফ। শেষ বলে ছক্কায় শেষ করেন হারিস রউফ।


অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে পাঁচ ম্যাচের একটিতেও সুযোগ না পাওয়া শামার জোসেফ এ দিন দলে ফিরে ক্যারিয়ার সেরা বোলিংয়ে ৩০ রানে নেন ৩ উইকেট। পরে ব্যাট হাতেও ক্যারিয়ার সেরা ইনিংস খেলেন তিনি। কিন্তু দিনটি ছিল সাইম আর পাকিস্তানের।


সিরিজের পরের ম্যাচ একই মাঠে রোববার বাংলাদেশ সময় সকাল ৬টায়।


সংক্ষিপ্ত স্কোর:


পাকিস্তান: ২০ ওভারে ১৭৮/৬ (সাহিবজাদা ১৪, সাইম ৫৭, ফাখার ২৪, হাসান নাওয়াজ ২৪, মোহাম্মদ নাওয়াজ ৯, সালমান ১১*, ফাহিম ১৫, রউফ ৬*; ব্লেডস ২-০-২৪-০, হোল্ডার ৪-০-৩৫-১, আকিল ৪-০-৩১-১, শামার ৪-০-৩০-৩, চেইস ৩-০-২৩-০, শেফার্ড ৩-০-২৯-১)


ওয়েস্ট ইন্ডিজ: ২০ ওভারে ১৬৪/৭ (চার্লস ৩৫, অ্যান্ড্রু ৩৫, হোপ ২, মোটি ০, রাদারফোর্ড ১১, চেইস ৫, শেফার্ড ১২, হোল্ডার ৩০*, শামার ২১*; আফ্রিদি ৪-০-২৭-১, মোহাম্মাদ নাওয়াজ ৪-০-২৩-৩, রউফ ৪-০-৪১-০, ফাহিম ২-০-৩১-০, মুকিম ৪-০-২০-১, সাইম ২-০-২০-২)


ফল: পাকিস্তান ১৪ রানে জয়ী


সিরিজ: ৩ ম্যাচ সিরিজে পাকিস্তান ১-০তে এগিয়ে


ম্যান অব দা ম্যাচ: সাইম আইয়ুব

Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *