Amarbangla Feed
যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্য চুক্তি স্বাক্ষর হয়েছে, যার ফলে দুই পক্ষের মধ্যে সম্ভাব্য বাণিজ্য যুদ্ধ এড়ানো সম্ভব হয়েছে। এই চুক্তির আওতায় ইউরোপ থেকে আসা বেশির ভাগ পণ্যের ওপর যুক্তরাষ্ট্র ১৫ শতাংশ হারে আমদানি শুল্ক আরোপ করবে। আগেই এ হার ৩০ শতাংশে উন্নীত করার হুমকি দিয়েছিল ওয়াশিংটন।
রবিবার স্কটল্যান্ডের পশ্চিমাঞ্চলে অবস্থিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ব্যক্তিগত গলফ কোর্সে এক অনুষ্ঠানে এই চুক্তির ঘোষণা দেওয়া হয়। তার আগে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডার লেন প্রায় এক ঘণ্টাব্যাপী দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করেন।
বিশ্ব বাণিজ্যে যুক্তরাষ্ট্র ও ইইউ মিলে যে পরিমাণ অংশীদারি করে, তা প্রায় এক–তৃতীয়াংশ। ফলে এ চুক্তিকে শুধু দ্বিপক্ষীয় বোঝাপড়া হিসেবে নয়, বরং বৈশ্বিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার জন্যও গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছেন বিশ্লেষকেরা।
চুক্তি ঘোষণার সময় ট্রাম্প বলেন, আমি মনে করি, এটিই এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বড় চুক্তি।’ ইউরোপীয় ইউনিয়নের ভবিষ্যৎ বিনিয়োগ পরিকল্পনার প্রশংসা করে তিনি জানান, ‘তারা যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় ৬০০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করতে যাচ্ছে। পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্র থেকে জ্বালানি ও সামরিক সরঞ্জাম কেনার হার উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়বে।
ট্রাম্প আরও বলেন, গত সপ্তাহে জাপানের সঙ্গে ৫৫ হাজার কোটি ডলারের একটি বড় বাণিজ্য চুক্তি করেছি। কিন্তু ইউরোপের সঙ্গে এই চুক্তি সেটিকেও ছাড়িয়ে গেছে।” তাঁর মতে, “দীর্ঘদিন ধরে আমাদের রপ্তানিকারকেরা যে বৈষম্যমূলক আচরণের শিকার হচ্ছিল, তা এবার শেষ হতে যাচ্ছে।
ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট ভন ডার লেন এই চুক্তিকে ‘বিশ্বের দুই বড় অর্থনীতির মধ্যে একটি বড় অগ্রগতি’ হিসেবে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, এই চুক্তি শুধু অর্থনৈতিক সম্পর্ক নয়, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার প্রতিও গুরুত্বপূর্ণ বার্তা দিচ্ছে।
চুক্তির আওতায় ইউরোপীয় ইউনিয়ন যুক্তরাষ্ট্রের এলএনজি (তরল প্রাকৃতিক গ্যাস) এবং প্রতিরক্ষা সরঞ্জামের আমদানিতে আরও বেশি আগ্রহ দেখাবে বলে জানানো হয়েছে। অন্যদিকে, যুক্তরাষ্ট্র ইউরোপীয় ভোগ্যপণ্যের ওপর তুলনামূলক হারে কম শুল্ক বসাবে, যা ইইউর জন্য কিছুটা স্বস্তির বার্তা।
উল্লেখ্য, বিগত কয়েক মাস ধরে যুক্তরাষ্ট্র ও ইইউর মধ্যে শুল্কবিষয়ক উত্তেজনা ক্রমেই বাড়ছিল। ট্রাম্প প্রশাসন বেশ কিছু ইউরোপীয় পণ্যের ওপর উচ্চ শুল্ক আরোপের হুমকি দেয়, যার মধ্যে ইস্পাত, গাড়ি এবং কৃষিপণ্য ছিল অন্যতম। নতুন এই চুক্তির ফলে তা আর বাস্তবায়ন হচ্ছে না।
বিশ্লেষকেরা মনে করছেন, বিশ্ব অর্থনীতি যখন ধীরগতিতে চলছে এবং বাণিজ্য নিয়ে অনিশ্চয়তা বেড়েছে, তখন এমন একটি চুক্তি বৈশ্বিক আস্থার জন্য ইতিবাচক সংকেত হিসেবে কাজ করবে।
সূত্র: রয়টার্স
আমারবাঙলা/এফএইচ