বান্দরবানে লামার মেধাবী ছাত্রী ছাইনুমে মারমার পাশে দাঁড়ালেন পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাত্র পরিষদ

Google Alert – পার্বত্য চট্টগ্রাম

বান্দরবান লামা উপজেলার ফাইতং ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের দুর্গম ভাজাপাড়া এলাকার মেয়ে ছাইনুমে মারমা ২০২৪-২৫ সেশনে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগে ভর্তি হয়েও পড়াশোনা অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। আর্থিক সংকটের কারণে তার পড়াশোনা প্রায় অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে বলে জানিয়েছেন ছাইনুমে মারমার পরিবার। এমন পরিস্থিতিতে ছাইনুমে মারমার পাশে দাঁড়িয়েছেন পাহাড়ের সকল সম্প্রদায়ের শিক্ষার্থীদের স্বার্থ রক্ষায় নিবেদিত প্রাণ পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাত্র পরিষদ, বান্দরবান পার্বত্য জেলা শাখা।

বুধবার (৩০ জুলাই) বিকেল সাড়ে ৩টায় বান্দরবানের লামা উপজেলার ফাইতং ইউনিয়নের দুর্গম ভাজাপাড়া এলাকায় ছাইনুমে মারমার বাড়িতে গিয়ে আর্থিক সহযোগিতা ও তার অদম্যতার প্রশংসাস্বরূপ ক্রেস্ট তুলে দেন ছাত্র পরিষদ বান্দরবান জেলার সভাপতি ছাত্রনেতা আসিফ ইকবাল।

এ সময় অন্যদের মধ্যে ছাত্র পরিষদ লামা উপজেলার সাধারণ সম্পাদক আরমান হোসেনসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

এ বিষয়ে ছাত্র পরিষদ সভাপতি আসিফ ইকবাল জানান, পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাত্র পরিষদ সূচনালগ্ন থেকে জাতি, ধর্ম, বর্ণ, গোত্র নির্বিশেষে পাহাড়ের সকল সম্প্রদায়ের শিক্ষার্থীদের কল্যাণে কাজ করে আসছে এবং যেকোনো সংকটে পাশে থেকে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছে। আমরা ছাইনুমে মারমার পড়ালেখার অনিশ্চয়তার খবর শুনে বান্দরবান থেকে তার বাড়িতে এসে তার পাশে দাঁড়িয়েছি।

তার এবং তার পরিবারের সমস্ত অভাব-অনটন ও ছাইনুমের স্বপ্ন জয়ের গল্প শুনেছি। তার সাফল্যে আমরা বান্দরবানবাসী গর্বিত এবং আনন্দিত। আমরা আগামীতেও তার যে কোনো বিপদে, সংকটে সহযোগিতা অব্যাহত রাখবো। ছাইনুমে মারমা দুর্গম এলাকা থেকে শত প্রতিকূলতা মাড়িয়ে যে সাফল্য অর্জন করেছে তা পাহাড়ের প্রতিটি শিক্ষার্থীর জন্য অনুপ্রেরণাদায়ক।

আসিফ ইকবাল আরও জানান, পাহাড়ের নির্দিষ্ট কয়েকটি সম্প্রদায় ব্যতীত অধিকাংশ সম্প্রদায়ের মানুষ বৈষম্য ও বঞ্চনার শিকার, যার উদাহরণ ছাইনুমে মারমা। অদম্য এই পাহাড়ি কন্যা রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হলেও তার পড়ালেখা এখন অনিশ্চয়তার কিনারায়। কয়েকটি সম্প্রদায় সকল সুযোগ-সুবিধা ভোগ করার কারণে নিরীহ পাহাড়ি ও বাঙালি জনগোষ্ঠী তা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। আমরা সকল বৈষম্য দূর করে সকল জাতি-গোষ্ঠীর সমান অধিকার নিশ্চিত করে একটি শান্তির পার্বত্য চট্টগ্রাম প্রতিষ্ঠা করতে চাই।

উল্লেখ্য, মেধাবী ছাত্রী ছাইনুমে মারমা তার পরিবারের আর্থিক সমস্যার কারণে ছোটকাল থেকে পড়াশোনা করেছে খুব কষ্টে, খেয়ে না খেয়ে। গত ২০২২ সালে হারবাং শাক্যমুনি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পরীক্ষা দিয়ে মানবিক বিভাগ থেকে জিপিএ-৫ পেয়ে এলাকায় আলোড়ন সৃষ্টি করেছিল ছাইনুমে মারমা। অথচ ওই দুর্গম এলাকা থেকে পড়ালেখা করাটা তাদের জন্য চ্যালেঞ্জিং ও স্বপ্নের মতো ছিল। পরে ২০২৪ সালে বান্দরবান সরকারি মহিলা কলেজ থেকে এইচএসসি পরীক্ষায়ও জিপিএ-৫ নিয়ে উত্তীর্ণ হয়।

এইচএসসি পরীক্ষা উত্তীর্ণের পর ঢাকা, চট্টগ্রাম ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে একই সঙ্গে ভর্তির সুযোগ পায়। পরে পছন্দের সাবজেক্ট আইন বিভাগে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়। কিন্তু আর্থিক সমস্যার কারণে সেখানে পড়াশোনা এবং থাকা-খাওয়া প্রায় অনিশ্চিত হয়ে পড়ে।

Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *