Google Alert – সেনাবাহিনী
• ঢাকার নিউ মার্কেটের তিনটি দোকান থেকে চাপাতি-সামুরাই উদ্ধার
• সাধারণ মানুষের পরিবর্তে সন্ত্রাসীদের কাছে বিক্রি করতেন দোকানিরা
• সন্ত্রাসীরা এসব ধারালো অস্ত্র ব্যবহার করতো ছিনতাই-চাঁদাবাজিতে
• ধারালো অস্ত্র বিক্রি না করতে ব্যবসায়ীদের প্রতি সেনাবাহিনীর অনুরোধ
• ধারালো অস্ত্রের অবৈধ ব্যবসা করলে সেনা ক্যাম্পে খবর দেওয়ার আহ্বান
ঢাকার নিউ মার্কেটের তিনটি দোকান থেকে এক হাজার ১০০-এর বেশি চাপাতি ও সামুরাই উদ্ধার করেছে সেনাবাহিনী। এসব অস্ত্র সাধারণ মানুষের পরিবর্তে কিশোর গ্যাংয়ের সদস্য ও সন্ত্রাসীদের কাছে বিক্রি করতেন দোকানিরা। সন্ত্রাসীরা তা ছিনতাই ও চাঁদাবাজির ক্ষেত্রে ব্যবহার করতো বলে জানিয়েছে সেনাবাহিনী।
এর আগে গত ১৮ জুলাই চাপাতি ভাড়া থেকে জামিন, সবই মেলে ‘ছিনতাই প্যাকেজে’ এই শিরোনামে অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগো নিউজে একটি বিশেষ প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এই প্রতিবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে কয়েকজন সন্ত্রাসীকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তারা সেনাবাহিনীর কাছে স্বীকার করে যে ধারালো চাপাতি ও সামুরাই তারা নিউ মার্কেট থেকে কেনেন। এরপর ছিনতাইয়ের জন্য ভাড়া দেন। এরপর শনিবার (৯ আগস্ট) নিউ মার্কেটে অভিযান চালান সেনা সদস্যরা।
সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ আর্মি ক্যাম্প সূত্রে জানা যায়, বেশ কিছুদিন ধরে ঢাকা শহরের বিভিন্ন স্থানে কিশোর গ্যাং ও ছিনতাইকারীদের উৎপাত বেড়েছে। বিভিন্ন সময় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী অনেক সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজ ও ছিনতাইকারীকে গ্রেফতার করেছে। গ্রেফতারের সময় তাদের কাছ থেকে এক ধরনের ধারালো ‘সামুরাই’ ছুরি উদ্ধার হয়েছে, যা নিউজ মিডিয়া বা সাধারণ মানুষের ভিডিওকৃত সোশ্যাল মিডিয়ার ভাইরাল ক্লিপে দেখতে পেয়েছেন।
সম্প্রতি গণমাধ্যমে সেনাবাহিনী খবর পায়, কোনো একটি স্থান থেকে এ ধরনের ‘সামুরাই’ অস্ত্র সন্ত্রাসীদের কাছে ভাড়া ও বিক্রি করা হচ্ছে। পরবর্তীতে এই মাসে গ্রেফতার কয়েকজন সন্ত্রাসীকে জিজ্ঞাসাবাদের সময় তারাও এই তথ্য সেনাবাহিনীর কাছে স্বীকার করে। তাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে সেনাবাহিনী গোয়েন্দা কার্যক্রম পরিচালনা করে।
এর পরিপ্রেক্ষিতে গত দুইদিন ধরে সেনাবাহিনীর গোয়েন্দা মাঠকর্মীরা রাজধানীর নিউ মার্কেট এলাকায় গিয়ে বিভিন্ন দোকানে দেশীয় ধারালো অস্ত্র দেখতে পান। এগুলোর কোনো গৃহস্থালি ব্যবহার নেই; কেউ কেউ হয়তো শোকেসে সাজানোর জন্য রাখে, কিন্তু বাস্তবে কয়েক মাস ধরে এসব অস্ত্র দিয়ে একাধিক হত্যা, আহত, চাঁদাবাজি ও ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছে।
অভিযানে এখন পর্যন্ত এক হাজার ১০০টির বেশি ধারালো অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে, এবং গণনা কার্যক্রম চলমান রয়েছে। যেসব দোকান থেকে এই অস্ত্র উদ্ধার হয়েছে, সেগুলো গোয়েন্দা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হবে। পরে তারা যাচাই-বাছাই করে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা নেবে।
সেনাবাহিনী জানায়, ব্যবসায়ীদের সঙ্গে দুষ্কৃতকারীদের কোনো যোগসাজশ আছে কি না, তা নিশ্চিত করতে অধিকতর তদন্তের প্রয়োজন।
ধারালো অস্ত্র বিক্রি করবেন না
দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে চাপাতি, সামুরাই বা ধারালো অস্ত্র বিক্রি না করার জন্য ব্যবসায়ীদের প্রতি অনুরোধ করেছে সেনাবাহিনী। তারা জানিয়েছে, অনেকেই এগুলো স্যুভেনির হিসেবে সংগ্রহ করেন। কিন্তু দেশের বর্তমান বাস্তবতা হলো—এগুলো বিভিন্ন সন্ত্রাসী গোষ্ঠী ব্যবহার করছে। এতে সাধারণ মানুষ আক্রান্ত হচ্ছে। এই প্রবণতা যেকোনোভাবে বন্ধ করতে হবে।
ধারালো অস্ত্রের অবৈধ ব্যবসা করলে খবর দিন সেনা ক্যাম্পে
সেনাবাহিনী জানিয়েছে, কিশোর গ্যাংয়ের দৌরাত্ম্য বন্ধ করতে হবে। আশেপাশে কেউ ধারালো অস্ত্রের অবৈধ ব্যবসা করলে নিকটস্থ ক্যাম্পে খবর দিন। সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় কিশোর গ্যাং ও সন্ত্রাসীদের কার্যকলাপ বন্ধ করা সম্ভব হবে।
দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনী দৃঢ় অবস্থানে রয়েছে বলে জানিয়েছে। তারা দিনরাত চেষ্টা করছেন যাতে দুষ্কৃতকারীরা কোনো অবস্থাতেই দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে না পারে।
টিটি/এমআইএইচএস/এমএমএআর