বিদ্যমান পদ্ধতিতেই ভোটের প্রস্তুতি

Google Alert – আর্মি

আইন অনুযায়ী বিদ্যমান পদ্ধতিতে জাতীয় নির্বাচন আয়োজনের চূড়ান্ত প্রস্তুতি নিচ্ছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। আগামী ফেব্রুয়ারি মাসে রোজার আগে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন করতে চায় কমিশন। ভোটের দুই মাস আগে তফশিল ঘোষণা করা হবে। বৃহস্পতিবার নির্বাচন ভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এএমএম নাসির উদ্দিন এসব তথ্য জানান।

সিইসি তার সাম্প্রতিক কানাডা সফরের অভিজ্ঞতা, এনসিপির শাপলা প্রতীক চেয়ে চিঠি, ইসির সংলাপে জাতীয় পার্টিকে আমন্ত্রণ, পিআর পদ্ধতি, পোস্টাল ভোট, নতুন দল নিবন্ধন, নির্বাচনি পরিবেশ ও ইসির ভোট প্রস্তুতিসহ সার্বিক বিষয়ে প্রশ্নের উত্তর দেন। আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হবে কি না-এমন প্রশ্নে সিইসি বলেন, এই প্রশ্ন তো অনেকে করে। ফেব্রুয়ারিতে ইলেকশন করার জন্যই আমাদের চূড়ান্ত প্রস্তুতি চলছে। আগামী বছর ফেব্রুয়ারির রমজানের আগে প্রথমার্ধে নির্বাচন করার জন্য যা যা প্রস্তুতি নেওয়া দরকার আমরা জোরেশোরে নিচ্ছি। তিনি বলেন, আমরা কারও কোনো কথায় চলতে চাই না। বিবেকের তাড়নায় চলি। আইনকানুন মতো চলতে চাই। কনস্টিটিউশন মতো চলতে চাই। এবং একটা সরল সোজা পথে চলতে চাই। কোনো বাঁকা পথে নয়। কাউকে কোনো ফেভার করার জন্য নয়, একবার নিরপেক্ষভাবে কাজ করতে চাই।

তিনি বলেন, রাজনীতিবিদরা চাচ্ছেন যে একটা ‘লেভেল প্লেয়িং’ ফিল্ড যাতে হয়। সবাই যাতে সুন্দরভাবে খেলতে পারে (নির্বাচনে অংশ নিতে) সেই ব্যবস্থাটা করে দেওয়া। সেটা আমরা ইনশাআল্লাহ করে দেব এবং সর্বশক্তি নিয়োগ করব। আমরা একটা স্বচ্ছ ইলেকশন উপহার দিতে চাই। তিনি আরও বলেন, আমাদের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেছেন, নির্বাচনে এক লাখ আর্মি মাঠে থাকবে। আপনারা তো দেখছেন আর্মিকে আমরা নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীতে অন্তর্ভুক্ত করার জন্য আরপিওতে প্রস্তাব দিয়েছি। তাহলে উনারা (আর্মি) অন ডিউটিতে থাকবেন। সুতরাং আমি কিন্তু খুব কনফিডেন্ট ইনশাআল্লাহ যে ভয় আপনারা পাচ্ছেন, সেই ভয় করার কোনো কারণ নেই। নির্বাচনের আগে রাজনৈতিক দলগুলোকে ‘ফাউল করা’ থেকে দূরে থাকতে আহ্বান জানিয়ে এএমএম নাসির উদ্দিন বলেন, যারা খেলবেন তারা যদি ফাউল করার নিয়তে সবাই মাঠে নামেন, তাহলে মুশকিল। কেউ ফাউল যাতে না করতে পারেন, তার যাবতীয় ব্যবস্থা আমরা নেব। যারা স্টেকহোল্ডার, যারা খেলবেন ইলেকশনের মাঠে, তারা ফাউল করার নিয়তে নামবেন না বলে আমি বিশ্বাস করি এবং একটা ভালো নির্বাচন হবে।

নতুন রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন কবে হবে-জানতে চাইলে সিইসি বলেন, দলগুলো নিয়ে আমাদের কিছু এডিশনাল ইনফরমেশন কালেক্ট করতে হচ্ছে। রেজিস্ট্রেশন দেওয়ার নিয়ত করে আমাকে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দিতে হবে। বিজ্ঞপ্তি দেওয়ার পরে কোনো অভিযোগ যদি আসে, সেগুলো আবার এড্রেস করতে হবে। নতুন কোন দল নিবন্ধন পেতে যাচ্ছে সেই সংখ্যা চূড়াস্ত হয়নি বলে জানান সিইসি। তিনি বলেন, এখন বলা যাচ্ছে না এই কারণে যে, আরও এডিশনাল ইনফরমেশন আমাদের কালেক্ট করতে হচ্ছে, এগুলো যখন চূড়ান্ত হবে তখন হয়তো বলা যাবে।

জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) শাপলা প্রতীক পাচ্ছে কিনা-জানতে চাইলে সিইসি বলেন, এর আগে মাহমুদুর রহমান মান্নার দল নাগরিক ঐক্য শাপলা প্রতীক চেয়ে দুবার আবেদন করেছিল। তখন কোনো আলোচনা ছিল না। নাগরিক ঐক্যকে শাপলা দেইনি আমরা। সচিব এ বিষয়ে বলেছেন, আর বলতে চাই না। শাপলা প্রতীক চেয়ে এনসিপির চিঠির বিষয়ে তিনি বলেন, যে কোনো দল চিঠি দিতে পারে। অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেওয়া দল এনসিপি। চিঠি দেওয়ায় অসুবিধা নেই। দল তো দেবেই। রাজনীতিবিদরা দেশের স্বার্থে সবকিছু অ্যাকোমোডেট করেন। চিঠি বিবেচনা করব, কী করা যায় দেখা যাক। তিনি বলেন, চিঠি নিয়ে কমিশনে বসে সিদ্ধান্ত নেব। একা সিদ্ধান্ত নেব না। আমাদের কমিশনের সভায় আলোচনার পর পরবর্তী কাযক্রম সম্পর্কে সিদ্ধান্ত নেব। কমিশন সভার আলোচনার পর কথা হবে।

শাপলা প্রতীক ছাড়া নির্বাচন কীভাবে হয় আমরা দেখব, এনসিপির এক নেতার এমন বক্তব্য ইসির জন্য হুমকি কি না-এমন প্রশ্নের জবাবে সিইসি বলেন, রাজনীতিবিদরা অনেক কথা বলতে পারেন। আমরা তো জবাব দিতে পারব না, শ্রোতা। আমাদের কাজ আইন মোতাবেক করব। এটা হুমকি মনে করি না। উনারা তো দেশদ্রোহী নন, উনারা দেশপ্রেমিক। দেশের জন্য, আমাদের জন্য হুমকি মনে করি না।

ইসি সব নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংলাপে বসবেন কিনা এবং জাতীয় পার্টি সংলাপে থাকবে কিনা-জানতে চাইলে সিইসি বলেন, সেটা সময় আসুক। আমরা শুরু তো করিনি। রাজনৈতিক দলের সঙ্গে একটু পরে বসব আমরা। সিদ্ধান্ত নিয়েছি এখন সিভিল সোসাইটি, ওমেন রিপ্রেজেন্টেটিভ, একাডেমিশিয়ানস, মিডিয়া পার্সোনালিটিসদের সঙ্গে আগে আমরা বসব। শেষের দিকে রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আমরা সংলাপে যাব।

রাজনৈতিক বিতর্ক চলছে। দেখি না কোন পর্যায়ে আসে একটু অপেক্ষা করুন, দেখবেন।

আগামী নির্বাচনে আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব (পিআর) পদ্ধতিতে ভোট হবে কিনা জানতে চাইলে সিইসি এএমএম নাসির উদ্দিন বলেন, পিআর তো আরপিও-তে নেই। আইন না বদলালে তো আমি এটা করতে পারি না।

প্রবাসীদের ভোটাধিকার বাস্তবায়নে কানাডার সফর শেষে গত ১৮ সেপ্টেম্বর দেশে ফেরেন সিইসি। এ প্রসঙ্গে সিইসি বলেন, কানাডা গিয়ে দেখলাম প্রবাসীদের বোঝার ও জানার মধ্যে অনেক গ্যাপ আছে। প্রবাসী ভোটের সিস্টেমটা মাত্র শুরু করলাম। ইসির প্রতি যে আস্থা সেটা আগে রিস্টোর করা দরকার। যে অনাস্থা আছে সেটা ফিরিয়ে আনা দরকার। আইটি সাপোর্টে পোস্টাল ব্যালটের মাধ্যমে প্রবাসীদের ভোট নেওয়া হবে।

Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *