Google Alert – বাংলাদেশ
ঢাকা : দেশের ইসলামী ব্যাংকের শরীয়াহ কমিটিতে সদস্য হতে হলে এখন থেকে নির্দিষ্ট শিক্ষাগত যোগ্যতা থাকতে হবে। এত দিন এ ধরনের নির্দিষ্ট শর্ত না থাকলেও এবার বাংলাদেশ ব্যাংক পরিষ্কারভাবে জানিয়েছে, শুধু পরিচিত ইসলামী ব্যক্তিত্ব হলেই হবে না, কমিটিতে থাকতে হবে ইসলামী শরিয়াহ বা ফিকহের নির্ভরযোগ্য শিক্ষা ও জ্ঞান।
রোববার (২৮ সেপ্টেম্বর) বাংলাদেশ ব্যাংক এ সংক্রান্ত একটি নির্দেশনা জারি করেছে।
নির্দেশনায় বলা হয়েছে, ইসলামী ব্যাংকের শরীয়াহ সুপারভাইজরি কমিটির সদস্য হতে হলে ইসলামিক ফিকহ, উসুলুল ফিকহ, ইসলামিক ইকোনমিকস বা ইসলামিক স্টাডিজ বিষয়ে উচ্চতর ডিগ্রি থাকতে হবে।
নতুন এই নির্দেশনার ফলে কমিটিতে কারা বসবেন, তা আর শুধু ব্যাংকের সিদ্ধান্তে নির্ধারিত হবে না। শিক্ষা, অভিজ্ঞতা ও দক্ষতার ভিত্তিতে সদস্য মনোনয়ন দিতে হবে।
বাংলাদেশে বর্তমানে ইসলামী ব্যাংকিং সেবা দিচ্ছে ১০টি পূর্ণাঙ্গ ইসলামী ব্যাংক এবং বেশ কয়েকটি সাধারণ ব্যাংকের ইসলামী শাখা। এসব ব্যাংকে শরীয়াহ কমিটি মূলত ব্যাংকিং কার্যক্রম শরীয়াহ অনুযায়ী চলছে কি না, তা নজরদারি করে। নতুন কোনো ব্যাংকিং পণ্য চালু করতে হলেও এই কমিটির অনুমোদন লাগে। কিন্তু এত দিন এ কমিটির সদস্য হওয়ার ক্ষেত্রে শিক্ষাগত যোগ্যতা বা অভিজ্ঞতা নিয়ে কোনো বাধ্যবাধকতা ছিল না।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনায় আরও বলা হয়েছে, শুধু শিক্ষাগত ডিগ্রিই যথেষ্ট নয়, শরীয়াহ কমিটির সদস্যদের ইসলামী ব্যাংকিং ও অর্থনীতিতে গবেষণা, প্রকাশনা বা সংশ্লিষ্ট কাজে বাস্তব অভিজ্ঞতা থাকলে তা বিশেষ যোগ্যতা হিসেবে বিবেচিত হবে।
নতুন নিয়ম অনুযায়ী, প্রতিটি ইসলামী ব্যাংকে কমপক্ষে ৩ জন ও সর্বোচ্চ ৫ জন শরীয়াহ কমিটির সদস্য থাকতে পারবেন। এক ব্যক্তি সর্বোচ্চ তিনটি ব্যাংকের শরীয়াহ কমিটিতে কাজ করতে পারবেন। টানা ৬ বছর কাজ করার পর তাকে অন্তত দুই বছর বিরতি নিতে হবে।
এছাড়া, শরীয়াহ কমিটির কার্যক্রম আরও কার্যকর করার জন্য সদস্যদের দায়িত্বও স্পষ্ট করে দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এখন থেকে এই কমিটি শুধু পরামর্শ দেবে না, ব্যাংকের শরীয়াহভিত্তিক কার্যক্রমে কোনো সমস্যা দেখলে তারা সংশোধনের নির্দেশও দিতে পারবে। আর এই নির্দেশনা না মানলে ব্যাংক কর্তৃপক্ষকে কারণ ব্যাখ্যা করতে হবে।
নির্দেশনায় বলা হয়েছে, আগামী ২০২৬ সালের জানুয়ারি থেকে এই নতুন নিয়ম কার্যকর হবে। এর আগে সব ব্যাংককে তাদের শরীয়াহ কমিটি গঠনের প্রক্রিয়ায় পরিবর্তন এনে নতুন নিয়মে মানিয়ে নিতে হবে।
বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে, শরীয়াহ কমিটির সদস্যদের মানোন্নয়ন হলে ইসলামী ব্যাংকিং খাতে স্বচ্ছতা, দক্ষতা এবং শরীয়াহ অনুযায়ী পরিচালনার বিষয়টি নিশ্চিত হবে। এতে গ্রাহকের আস্থা যেমন বাড়বে, তেমনি আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও বাংলাদেশে ইসলামী ব্যাংকিং আরও গ্রহণযোগ্যতা পাবে বলে আশা করা হচ্ছে।
এএইচ/পিএস