ব্যর্থতা অন্তর্বর্তী সরকারের, ফের গোপালগঞ্জে যাওয়ার ঘোষণা নাহিদের : সংবাদ অনলাইন

Google Alert – সশস্ত্র

সংবাদ অনলাইন রিপোর্ট : বৃহস্পতিবার, ১৭ জুলাই ২০২৫

গোপালগঞ্জে ভয়ঙ্কর সংঘর্ষের ঘটনার দায় অন্তর্বর্তী সরকাকে নিতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। তিনি বলেছেন, প্রশাসন ও গোয়েন্দা সংস্থা ‘সঠিক সময়ে সঠিক পদক্ষেপ’ নিলে গোপালগঞ্জের পরিস্থিতি এতটা ভয়ঙ্কর হয়ে উঠতে পারতো না।

নাহিদ ইসলাম আরও বলেন, তারা আবারো গোপালগঞ্জে যাবেন। গোপালগঞ্জের প্রত্যেকটা উপজেলায় প্রত্যেকটা গ্রামে কর্মসূচি পালন করবেন।

বৃহস্পতিবার,(১৭ জুলাই ২০২৫) এক ফেইসবুক পোস্টে তিনি বলেছেন, ‘এ দায়ভার সরকার ও প্রশাসনকে নিতে হবে। আমরা পুরা ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও সন্ত্রাসীদের বিচার দাবি করছি। সুনির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তার করতে হবে। শুধু গোপালগঞ্জ নয় সারাদেশে এ গ্রেপ্তার অভিযান চালাতে হবে।’

গতকাল বুধবার এনসিপির সমাবেশ ঘিরে নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের কর্মীদের হামলা এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে দফায় দফায় সংঘর্ষে রণক্ষেত্রে পরিণত হয় গোপালগঞ্জ। টানা ৫ ঘণ্টার ওই সংঘাতে নিহত হন অন্তত চারজন। পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে আটকা পড়া এনসিপির কেন্দ্রীয় নেতারা পরে সেনাবাহিনীর

সাঁজোয়া যানে করে গোপালগঞ্জ ত্যাগ করেন।

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে গতকাল বুধবার রাত ৮টা থেকে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত কারফিউ জারি করা হয় সেখানে।

গোপালগঞ্জ থেকে খুলনায় গিয়ে গতকাল বুধবার রাতে সংবাদ সম্মেলন করেন এনসিপি নেতারা। সেখানে নাহিদ অভিযোগ করেন, গোপালগঞ্জে ‘মুজিববাদীরা’ হত্যার উদ্দেশে জঙ্গি কায়দায় এনসিপি নেতাকর্মীদের ওপর হামলা চালিয়েছে। হামলাকারীদের গ্রেপ্তারে তিনি সরকারকে ২৪ ঘণ্টা সময় বেঁধে দেন।

এরপর বৃহস্পতিবারের ফেইসবুক পোস্টে নাহিদ ইসলাম লেখেন, ‘গোপালগঞ্জ ও পুরো বাংলাদেশকে আমরা মুজিববাদী সন্ত্রাস ও ফ্যাসিবাদ থেকে মুক্ত করবো। আওয়ামী লীগ যুগের পর যুগ ধরে গোপালগঞ্জের মানুষের জীবনকে বিপন্ন করেছে, মুক্তিযুদ্ধকে কলুষিত করেছে এবং সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সঙ্গে বেইনসাফি করেছে। আমরা বলেছি আমরা এ পরিস্থিতির পরিবর্তন ঘটাবো। আমরা যুদ্ধের আহ্বান নিয়ে যাই নাই। আমাদের পূর্বঘোষিত শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি ছিল। মুজিববাদী সন্ত্রাসীরা পরিকল্পিতভাবে হত্যার উদ্দেশে সশস্ত্র হামলা চালায় আমাদের ওপরে। যেরকমটা জুলাই গণঅভ্যুত্থানেও হয়েছিল। আওয়ামী লীগ সব সময় একটা গৃহযুদ্ধ পরিস্থিতি তৈরি করতে চায়।’

এনসিপির আহ্বায়ক বলেন, ‘৫ আগস্টের পরে অনেকে ‘রিফাইন্ড আওয়ামী লীগ’ আনতে চেয়েছিল। তাদের মনে রাখা উচিত আওয়ামী লীগ কোনো রাজনৈতিক দল নয় আর, এটা একটা সন্ত্রাসবাদী সংগঠন। ৫ আগস্টের পরে আমরা বহুবার বলছি আমরা আইনি ও বিচারিক প্রক্রিয়ায় জুলাই গণহত্যার বিচার চাই। কিন্তু ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগের লোকদের ব্যাপকভাবে গ্রেপ্তার করা হয় নাই। গ্রেপ্তার হলেও কোর্টে জামিন নিচ্ছে, থানা থেকে পালিয়ে যাচ্ছে।’

‘ফ্যাসিবাদের দোসর এবং দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তারা প্রশাসনের বিভিন্নস্তরে ঘাপটি মেরে আছে মন্তব্য করে এনসিপির এই নেতাবলেন, ‘তাদেরকে টাকা দিয়ে কিনে ফেলা যায়। নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের পুরো বাংলাদেশের বিভিন্ন যায়গার নেতাকর্মীরা বৃহস্পতিবার গোপালগঞ্জে ছিল। প্রশাসন ও নিরাপত্তা বাহিনী যেভাবে ইনস্ট্রাকশন দিয়েছে, সকালের নাশকতার পরেও সিকিউরিটি ক্লিয়ারেন্স পেয়েই আমরা গোপালগঞ্জে প্রবেশ করেছি। পদযাত্রা করি নাই, পথসভা করেছি শুধু। গোপালগঞ্জের বিভিন্ন উপজেলা থেকে আমাদের লোকজনকে আসতে দেয়া হয় নাই। বিভিন্ন যায়গায় বাস আটকে দেয়া হয়েছে। এরপরেও আমরা শান্তিপূর্ণভাবে পথসভা শেষ করেছি। যাওয়ার পথে সশস্ত্র আক্রমণ চালিয়েছে আওয়ামী সন্ত্রাসীরা। নিরাপত্তাবাহিনী যেভাবে ইনস্ট্রাকশন দিয়েছে আমরা সেভাবে সেখান থেকে বের হয়েছি।’

চারজনের মৃত্যুর কথা শোনার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘কোনো বিচারবহির্ভূত হত্যাকা- জ্ঞানকে আমরা সমর্থন করি না, প্রত্যাশা করি না। সন্ত্রাসীদের বিচারিক প্রক্রিয়ায় ব্যবস্থা নিতে হবে। প্রশাসন ও গোয়েন্দা সংস্থা যদি সঠিক সময়ে সঠিক পদক্ষেপ নিতো তাহলে এ পরিস্থিতি তৈরি হতো না।’

নাহিদ বলেন, ‘আমরা কমিট করেছিলাম আমরা গোপালগঞ্জে যাবো। আমরা গেছি এবং শহীদের রক্তের শপথ নিয়ে ঘোষণা করছি যে মুজিববাদকে গোপালগঞ্জ ও বাংলাদেশের মাটিতে দাঁড়াতে দিবো না। আমরা আবারো গোপালগঞ্জে যাবো। আমরা জীবিত থাকলে গোপালগঞ্জের প্রত্যেকটা উপজেলায় প্রত্যেকটা গ্রামে কর্মসূচি করবো। গোপালগঞ্জের প্রতিটা ঘরে ঘরে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পতাকা উড়বে। গোপালগঞ্জ মুজিববাদীদের হবে না, বাংলাদেশ পন্থিদের হবে।’

Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *