Google Alert – সামরিক
ব্যারিস্টার আরমানকে টিএফআই সেলে রাখার বিষয়টি আমি জানতাম: জবানবন্দিতে মামুন
জবানবন্দিতে চৌধুরী মামুন অভিযোগ করেন, গুম-খুন বা কাউকে গোপনে তুলে আনার মতো কর্মকাণ্ডের পেছনে সরাসরি নির্দেশনা দিতেন প্রধানমন্ত্রীর সামরিক উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) তারিক সিদ্দিকী। পুলিশের সর্বোচ্চ পদে থেকেও এসব কর্মকাণ্ডের অনেক কিছুই তার অজানা থাকত।
তিনি বলেন, কাউকে তুলে আনা বা গুম করে রাখার মতো বিষয়গুলো জেনারেল তারিক সিদ্দিকী সরাসরি গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের মাধ্যমে বাস্তবায়ন করতেন। এ বিষয়ে আমি পুলিশের আইজি হওয়া সত্ত্বেও অবহিত থাকতাম না। ব্যারিস্টার আরমান টিএফআই সেলে বন্দি রয়েছেন- এ তথ্য জবানবন্দিতে উল্লেখ করেন তিনি।
চৌধুরী মামুন আরও বলেন, এসব নির্দেশনার অনেকগুলোই সরাসরি প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর থেকে আসত বলে শুনেছি। যদিও আমার সময়ে সরাসরি এমন কোনো নির্দেশ পাইনি। তবে কিছু নির্দেশনা প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা উপদেষ্টা তারিক সিদ্দিকীর পক্ষ থেকেও আসত বলে জানতে পেরেছি। র্যাব আইজিপির অধীনস্থ হলেও অনেক সময় চেইন অব কমান্ড মানা হতো না, র্যাবের মহাপরিচালকরা অনেক ক্ষেত্রেই সরাসরি প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরের নির্দেশে কাজ করতেন।
তিনি বলেন, র্যাবের মহাপরিচালক হিসেবে দায়িত্বপালনকালে আমি চেষ্টা করেছি সিরিয়াস বিষয়গুলো আইজিপিকে জানাতে। তবে টিএফআই সেলে কয়জন বন্দি আছেন বা কী অবস্থায় আছেন, তা সবসময় আমাকে জানানো হতো না। এই সেল পরিচালনা করতেন র্যাবের ইন্টেলিজেন্স ডিরেক্টর।
ব্যারিস্টার আরমানের আটক থাকার বিষয়টি আমাকে দায়িত্ব গ্রহণের সময় জানানো হয়। সাবেক ডিজি র্যাব বেনজির আহমেদ বিষয়টি আমাকে অবহিত করেন। পরবর্তীতে সরোয়ার বিন কাশেমসহ অন্যান্য কর্মকর্তারাও একই তথ্য জানান। তাকে তুলে আনার এবং গোপনে আটক রাখার সিদ্ধান্ত সরকারের ছিল।
তিনি বলেন, বিষয়টি জানার পর আমি প্রধানমন্ত্রীর সামরিক উপদেষ্টা তারিক সিদ্দিকীর সঙ্গে কথা বলি। তিনি আমাকে বলেন, ‘ঠিক আছে, রাখেন। পরে বলব।’ কিন্তু পরে আর কিছু জানাননি। এরপরও আমি কয়েকবার বিষয়টি তুলেছিলাম, কিন্তু কোনো প্রতিক্রিয়া মেলেনি।
চৌধুরী মামুন বলেন, ‘র্যাবে দায়িত্বপালনকালে যেসব অফিসার ইন্টেলিজেন্সে কাজ করেছেন তাদের মধ্যে ছিলেন সারোয়ার বিন কাশেম, খায়রুল ইসলাম ও মশিউর রহমান। আমি জেনেছি- টিএফআই সেলে বিনা বিচারে আটক রাখা, নির্যাতন এবং ক্রসফায়ারে হত্যার মতো কিছু কর্মকাণ্ড চলত। আমি আইজিপি হওয়া সত্ত্বেও এগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারিনি। কারণ এসব সিদ্ধান্ত অনেক সময় গোয়েন্দা সংস্থা এবং সামরিক উপদেষ্টার দপ্তর থেকে আসত।’
তিনি আরও বলেন, ‘র্যাবের অনেক কর্মকাণ্ড গোয়েন্দা সংস্থার তথ্য ও পরামর্শের ভিত্তিতে পরিচালিত হতো। এসব বিষয়ে আইজিপিকে প্রায়ই জিজ্ঞাসা করা হতো না। নির্যাতন ও গুম সংক্রান্ত ঘটনায় র্যাবের কর্মকর্তা আলেপ উদ্দিন ও মহিউদ্দিন ফারুকীর নাম উল্লেখ করেন তিনি। আলেপ উদ্দিন অপারেশন ও ইন্টেলিজেন্সে দায়িত্ব পালন করেন এবং তার বিশেষ দক্ষতার জন্য র্যাব সদস্যদের মধ্যে কুখ্যাতি অর্জন করেন।’
স্বদেশ প্রতিদিন/এমএম