মন্টানার গুলিবর্ষণে চারজন নিহত, অভিযুক্ত সেনা এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে

Google Alert – সেনা

যুক্তরাষ্ট্রের মন্টানা অঙ্গরাজ্যের আনাকোন্ডা শহরের একটি বারে ভয়াবহ গুলিবর্ষণে চারজন নিহত হওয়ার পর ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যাওয়া একজন সাবেক সেনা সদস্যকে ধরতে তৃতীয় দিনেও অভিযান অব্যাহত রেখেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

নিহত চারজন হলেন—বারকর্মী ন্যান্সি লরেটা কেলি (৬৪) এবং তিনজন গ্রাহক: ড্যানিয়েল এডউইন বেইলি (৫৯), ডেভিড অ্যালেন লিচ (৭০) এবং টনি ওয়েইন পাম (৭৪)। শুক্রবার সকাল ১০টা ৩০ মিনিটে ‘দ্য আউল বার’-এ এক বন্দুকধারী রাইফেল নিয়ে ঢুকে গুলি চালালে এই চারজন নিহত হন।

সন্দেহভাজন ব্যক্তি, ৪৫ বছর বয়সী মাইকেল পল ব্রাউন, ঘটনার পর পাশের পাহাড়ি এলাকায় পালিয়ে যায় বলে ধারণা করছে পুলিশ।

মন্টানা অ্যাটর্নি জেনারেল অস্টিন নুডসেন এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, “এটি এক মানসিকভাবে অস্থিতিশীল ব্যক্তি, যে ঠাণ্ডা মাথায় চারজনকে হত্যা করেছে। এ ধরনের ব্যক্তি সমাজের জন্য অত্যন্ত বিপজ্জনক।”

তিনি আরও জানান, আনাকোন্ডা শহরের আশেপাশের জাতীয় বনাঞ্চলেও অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। আনাকোন্ডা শহরটি মন্টানার দক্ষিণ-পশ্চিমে, যার জনসংখ্যা প্রায় ১০ হাজার এবং শহরটি ঘন পাহাড়ঘেরা এলাকা দিয়ে পরিবেষ্টিত।

প্রায় ২৫০ জন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য—ফেডারেল, স্টেট এবং স্থানীয় পর্যায়ে—পায়ে হেঁটে, গাড়িতে ও হেলিকপ্টারে করে তল্লাশিতে অংশ নিচ্ছেন।

অ্যাটর্নি জেনারেল নুডসেন আরও বলেন, “আমরা এই মানুষটিকে খুঁজে পেতে বদ্ধপরিকর। এটি একটি ভয়ানক অপরাধ, যা পুরো সম্প্রদায়ের ওপর প্রভাব ফেলেছে।”

জানা গেছে, অভিযুক্ত ব্রাউন ওই বারে নিয়মিত যেতেন এবং বারের পাশেই থাকতেন। ফলে ধারণা করা হচ্ছে, তিনি নিহতদের অনেককেই চিনতেন—যা এই হত্যাকাণ্ডকে আরও নির্মম করে তুলেছে।

আরেক কর্মী কাসান্দ্রা ডুট্রা সিএনএন-কে বলেন, “তিনি প্রায়ই বারে আসতেন, কিন্তু অন্যদের সঙ্গে মিলেমিশে থাকতেন না।”

নিহত ন্যান্সি কেলির মেয়ে এনবিসি নিউজকে জানান, তার মা দীর্ঘ ৩০ বছর নার্স হিসেবে কাজ করেছেন এবং অবসরের পর সামাজিক যোগাযোগ রক্ষায় আংশিক সময়ের জন্য বারে কাজ শুরু করেছিলেন।

তিনি বলেন, “আমাদের শহরে এমন ঘটনা কল্পনাও করা যায় না। আমরা গাড়ি কিংবা ঘরের দরজা পর্যন্ত বন্ধ করে রাখতাম না।”

পুলিশ জানায়, ব্রাউনকে সর্বশেষ দেখা গেছে একটি সাদা রঙের ফোর্ড-১৫০ পিকআপ ট্রাকে করে পালাতে। পরে ট্রাকটি পাওয়া গেলেও তার কোনো সন্ধান মেলেনি।

শনিবার মন্টানা ক্রিমিনাল ইনভেস্টিগেশন বিভাগ সন্দেহভাজনের একটি সিসিটিভি ছবি প্রকাশ করে। সেখানে দেখা যায়, ব্রাউন কেবল কালো শর্টস পরে, পায়ে জুতা ছাড়া এবং শার্টহীন অবস্থায় একটি সিঁড়ি দিয়ে নিচে নামছেন।

নুডসেন বলেন, তিনি তার কিছু জিনিসপত্র ফেলে দেন এবং পরে নতুন জামাকাপড় ও জুতা সংগ্রহ করে পালিয়ে যেতে সক্ষম হন।

ব্রাউনের ভাইঝি ক্লেয়ার বয়েল অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসকে বলেন, তার চাচা বহু বছর ধরে মানসিক সমস্যায় ভুগছিলেন।

তিনি বলেন, “এটা কোনো মাতাল বা মাদকের আসক্তির ফল নয়, এটা একজন মানসিকভাবে অসুস্থ মানুষের কাজ—যে মাঝে মাঝে নিজের পরিচয় বা অবস্থান সম্পর্কে সম্পূর্ণ অজ্ঞান হয়ে যায়।”

এই ঘটনায় এলাকাজুড়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। স্থানীয় অনেক ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়া হয় এবং বহু পাবলিক ইভেন্ট বাতিল করা হয়।

পুলিশ ৭,৫০০ ডলারের পুরস্কার ঘোষণা করেছে যেকোনো ধরনের তথ্যদাতার জন্য, যা সন্দেহভাজনের গ্রেপ্তারে সহায়ক হবে।

Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *