মাগুরার আছিয়ার পরিবারে স্মৃতিময় শোকের ঈদ

চ্যানেল আই অনলাইন

বোনের বাড়িতে বেড়াতে গিয়ে নিহত মাগুরার আছিয়ার পরিবারের প্রথম ঈদ তাকে ছাড়া। আজকের দিনে মায়ের মুখে ও মনে শুধুই আছিয়ার রেখে যাওয়া স্মৃতি। আছিয়ার মা আয়েশা আক্তার বলেছেন, যার যায় সেই বোঝে, সন্তান হারানের কী জ্বালা। আমাগের আবার কীসের ঈদ! আমার আছিয়া ঈদে কত আনন্দ করতো। আমি ঈদের সকালে ওর প্রিয় খাবার খিচুড়ি নুডলস রান্না করে দিতাম। আমার আছিয়া আর কোনদিন খাবে না এসব খাবার। ঈদের আনন্দে হাতে দেবে না মেহেদী।

সোমবার (৩১ মার্চ) ঈদের দিন দুপুরে নিজ বাড়ির বারান্দায় বসে কাঁদতে কাঁদতে এসব কথা বলছিলেন আছিয়ার মা আয়েশা আক্তার। নিজ বাড়ির বারান্দায় একাকী বসে নিদারুন কষ্টের প্রহর গুনছেন তিনি।

;

নির্মম পাশবিকতার শিকার হয়ে নিহত সন্তানের স্মৃতি ও শোকের বোঝাই এবারের ঈদে তাদের একমাত্র সম্বল। আশপাশের সব বাড়িতে যখন ঈদের আনন্দ তখন মাগুরার শ্রীপুর উপজেলার জারিয়া গ্রামে আছিয়ার বাড়িতে চলছে শোকের মাতম। পুরনো স্মৃতি মনে করে শুধুই কাঁদছেন আছিয়ার মা আয়েশা আক্তার, আছিয়ার বড় বোন হামিদা খাতুনসহ স্বজনরা।

প্রতিবেশিরা জানান, আছিয়ার পরিবার অত্যন্ত গরীব। আছিয়ার বাবা ফেরদৌস শেখ ভ্যান চালিয়ে সংসারের চাহিদা মেটাতেন। এখন মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে আয়ের সে পথ বন্ধ। বর্তমানে তিনি ঢাকায় চিকিৎসা নিচ্ছেন। আছিয়ার মৃত্যুর পর সরকারি বেসরকারি কিছু সহযোগিতা এসেছে। সেটি দিয়ে কোনরকমে চলছে তাদের দিন। ভবিষ্যতে কীভাবে চলবে গোটা সংসার তা নিয়ে বেশ দুশ্চিন্তায় এ পরিবার।

বড় বোন হামিদা বলেন, ঈদের আগের রাতে আছিয়ার হাতে মেহেদি রঙে দুই হাত রাঙিয়ে দিতাম। ঈদের দিন আছিয়ার সাথে অনেক মজা করতাম। আমরা দুই বোন একসাথে ঘুরতে যেতাম। আত্মীয় স্বজনের বাড়িতে বেড়াতে যেতাম। সেই এখন আছিয়া নেই। আমার বাড়িতে বেড়াতে গিয়েই তার এমন অবস্থা হলো। আমরা এই শয়তানদের ফাঁসি চাই।

উল্লেখ্য, বোনের বাড়িতে বেড়াতে এসে শহরের নিজনান্দুয়ালী এলাকায় ৫ মার্চ বুধবার রাতে ৮ বছরের আছিয়া ধর্ষণের শিকার হয়। ঘটনার পর তাকে প্রথমে মাগুরা ২৫০ শয্যা সদর হাসপাতালে আনা হয়। পরে অবস্থার অবনতি হওয়ায় ফদিরপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে ১৩ মার্চ সে মারা যায়।

এ ঘটনায় হিটু শেখকে প্রধান করে চারজনের নামে মামলা করেন শিশুটির মা আয়েশা আক্তার। মামলার প্রধান আসামী হিটু শেখ ইতোমধ্যে আদালতে স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দী দিয়েছেন। আসামীদের ৪ জনই মাগুরা জেলা কারাগারে রয়েছে।

Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *