মাদক অধিদপ্তরের কর্মকর্তা ও বিএনপি নেতা সবার মুখ বন্ধ করে রেখেছেন

চ্যানেল আই অনলাইন

এই খবরটি পডকাস্টে শুনুনঃ

দীপ্ত টিভির সম্প্রচার কর্মকর্তা তানজিল জাহান তামিমকে বাসায় ঢুকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় মামলার প্রধান আসামি মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা মো. মামুন ও বিএনপি নেতা শেখ রবিউল আলম ভয় দেখিয়ে সবার মুখ বন্ধ করে রেখেছেন বলে অভিযোগ করেছে নিহতের পরিবার।

শনিবার দুপুরে তানজিল জাহান তামিমকে হত্যার সাথে জড়িতদের অনতিবিলম্বে গ্রেপ্তার ও বিচারের দাবিতে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধনে এ অভিযোগ করা হয়। নিহতের পরিবারের সদস্য ও তার সহকর্মীরা মানববন্ধনে অংশ নেন।

GOVT

মানববন্ধনে পরিবারের সদস্যরা অভিযোগ করেন, ফ্ল্যাট নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে একাধিকবার প্রশাসনের কাছে অভিযোগ করেও বিচার পাননি তারা। অবশেষে চোখের সামনে নির্দয়ভাবে মারা হয়েছে তামিমকে। পারিবারিকভাবে তারা এ ঘটনায় এখনও নিরাপত্তা ঝুঁকিতে আছেন।

তারা বলেন, এর আগেও এ ঘটনায় তারা অনেকবার আক্রমণের শিকার হয়েছেন। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা মামুন ও প্লিজেন্ট প্রোপার্টিজ লিমিটেডের কর্ণধার বিএনপি নেতা শেখ রবিউল আলম রবি সবার মুখ বন্ধ করে দিয়েছেন। এ ঘটনায় পরিবার রাষ্ট্রের হস্তক্ষেপ কামনা করে।

‘বাচ্চাটারে কেমন করে মারল, আমার বুকটা জ্বলছে’
মানববন্ধনে উপস্থিত হয়ে তামিমের মা খোরশিদা বেগম বলেন, ‘আমার কিছু বলার নাই। আমার ছেলেটা অনেক নিরীহ ছিল। আমার ছেলে কোনোদিন কারও সঙ্গে কোনো বেয়াদবি করেনি। সবাইকে সালাম দিয়ে কথা বলেছে। আমার ছেলেটা যাওয়া মাত্রই তাকে নির্দয়ভাবে মেরেছে।

আমার ছেলেটাকে হাসপাতালে নিতে নিতেই শেষ। আমার ছেলেরে সন্ত্রাসী বানাই নাই। মানুষ বানাইছি। লেখাপড়া শিখাইছি। কেউ বলতে পারবে না আমার ছেলে কোনো খারাপ কাজে জড়িত ছিল। ঘটনার মূলে রয়েছে — মো. রুবেল শেখ, মামুন, কবির, এরা ষড়যন্ত্র করে আমার বাচ্চাটাকে মারার জন্যই এসেছিল। আমার বড় ছেলেটাকে পাঁচ-ছয়জন ধইরা রাখছে। আমার বাচ্চাটারে মারতে মারতে মেরেই ফেললো। আল্লাহ, আমার বাচ্চা হত্যার তুমি বিচার কইরো।’

আহাজারি করে খোরশিদা বেগম আরও বলেন, আমার বুকটা জ্বলতাছে, জ্বইলা যাইতেছে। আমার বাচ্চাটারে কেমন কইরা মারলো। একটা মানুষরে মানুষ এমনে কইরা মারে? রবিউল, মামুনের কাছে একটা প্রশ্ন— আমার বাচ্চাটাকে মাইরা ওদের কী লাভ হইছে? আমার বুকটাকে খালি কইরা দিছে। আমরা কোনোদিন অন্যায়ভাবে কিছু করি নাই। আমরা শতভাগ ঠিক আছি। আমার বাচ্চাটারে যারা ষড়যন্ত্র করে হত্যা করছে আল্লাহ তুমি তাদের বিচার কর। আমি ড. ইউনূসসহ সব উপদেষ্টার কাছে আমার বাচ্চার হত্যার বিচার চাই।

মানববন্ধনে তামিমের বাবা সুলতান আহমেদ, বড় ভাই শামভিল জাহান ইসলাম, ভাবি ফারিয়া, ভাতিজি মুনাজাসহ পরিবারের অন্য সদস্য, সহকর্মী ও সহপাঠীরা অংশ নেন। এ সময় ‘নতুন বাংলাদেশে নাগরিকদের প্রাণের নিরাপত্তা চাই’, ‘ঘাতক প্লিজেন্ট প্রোপার্টিজের অনুমোদন বাতিল চাই’, ‘তামিম হত্যার বিচার চাই’, ‘জাস্টিস ফর তামিম’, ‘বিচার চাই বিচার, বিচার চাই, তামিম হত্যার বিচার চাই’ সহ বিভিন্ন প্ল্যাকার্ড প্রদর্শন ও স্লোগান দিতে দেখা গেছে।

বৃহস্পতিবার সকালে জমির মালিক সুলতান আহমেদের ছেলে ও বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল দীপ্ত টিভির সম্প্রচার কর্মকর্তা তানজিল জাহান ইসলাম তামিমকে বাড়ি নির্মাণ ও ফ্ল্যাট ভাগাভাগি নিয়ে আবাসন নির্মাতা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে বিরোধের জেরে হত্যা করা হয়।

ভবন নির্মাণের জন্য জমির মালিক সুলতান আহমেদ প্লিজেন্ট প্রপার্টিজ (প্রা.) লিমিটেড নামে একটি আবাসন নির্মাণ কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি করেন। চুক্তি অনুসারে জমির মালিকদের ফ্ল্যাটের অংশ বুঝিয়ে দেওয়া নিয়ে জমির মালিকদের ও কোম্পানির মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছিল।

Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *