মার্কিন সহায়তা স্থগিতে ভূমিকম্পের ক্ষতি সামলাতে নাজেহাল আফগানিস্তান

Google Alert – পার্বত্য অঞ্চল

ভূমিকম্পের ক্ষয়ক্ষতি সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছে আফগান কর্তৃপক্ষ। এই চাপ আরও প্রকট হয়েছে মার্কিন সহায়তা স্থগিতের কারণে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এ খবর জানিয়েছে।

স্বাস্থ্যসেবার ওপর চাপ বোঝাতে স্থানীয় এক সংবাদকর্মী জানিয়েছেন, আহতদের সঙ্গে আসা স্বজনরাই রোগীদের হাসপাতালে রেখে ওষুধ বা চিকিৎসা সরঞ্জাম কিনতে ছোটাছুটি করতে বাধ্য হচ্ছেন।

দেশটির শাসনক্ষমতা তালেবান দখলের পর থেকেই আন্তর্জাতিকভাবে বহুমুখী চাপে আছে আফগান সরকার। বিশেষত নারীদের দাবিয়ে রাখতে বৈষম্যমূলক একাধিক নীতি প্রণয়নের কারণে বিশ্বব্যাপী তালেবান সরকার ব্যাপকভাবে সমালোচিত হয়েছে। এখন পর্যন্ত আফগানিস্তানে আন্তর্জাতিক সহায়তা আনুষ্ঠানিক নিষেধাজ্ঞা দেওয়া না হলেও, মার্কিন সহায়তা সংস্থা ইউএসএআইডির তহবিল আকস্মিকভাবে স্থগিত হয়ে যাওয়ায় বেকায়দায় পড়ে যায় কাবুল।

২০২১ সালে তালেবান ক্ষমতা দখলের পর এটি আফগানিস্তানের তৃতীয় ভয়াবহ ভূমিকম্প। মার্কিন বাহিনী প্রত্যাহারের পর আন্তর্জাতিক তহবিল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় সরকারি অর্থায়নে সংকট দেখা দেয়।এমনকি মানবিক সহায়তাও ব্যাপকভাবে কমে গেছে। ২০২২ সালে ৩৮০ কোটি ডলার থেকে চলতি বছর কমে দাঁড়িয়েছে মাত্র ৭৬ দশমিক ৭ কোটি ডলার।

দুর্গম যাতায়াত ব্যবস্থা ও সীমান্তবর্তী পাকিস্তান থেকে হাজার হাজার আফগান অভিবাসীকে ফেরত পাঠানোর কারণে এমনিতেই বহুবিধ চাপে রয়েছে জালালাবাদ এলাকা। এরমধ্যে ভূমিকম্পে আহত শত শত মানুষের সেবা দিতে গিয়ে প্রায় নাজেহাল অবস্থায় রয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। অধিকাংশ আহত ব্যক্তিকে প্রাথমিকভাবে এখানকার হাসপাতালেই নেওয়া হচ্ছে।

আন্তর্জাতিক সহায়তার আহ্বান জানিয়ে দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র শারাফাত জামান বলেন, এখানে বহু মানুষ প্রাণ হারিয়েছে এবং অনেকে গৃহহীন হয়েছে। এখন আমাদের সহায়তা দরকার।

রিখটার স্কেলে ছয় মাত্রার ভূমিকম্পটি আফগানিস্তানে মধ্যরাতে আঘাত হানে।তালেবান সরকারের মুখপাত্র জবিহুল্লাহ মুজাহিদ জানান, পূর্বাঞ্চলীয় কুনার ও নানগারহার প্রদেশে মোট ৮১২ জন নিহত হয়েছেন। সীমান্তবর্তী দুর্গম পার্বত্য অঞ্চলে মাটির ঘরবাড়ি ধস এবং মোবাইল নেটওয়ার্ক বিচ্ছিন্ন হওয়ায় উদ্ধারকাজ চালানো আরও কঠিন হয়ে পড়েছে।

দেশটির কর্তৃপক্ষের বরাতে ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্স জানায়, এখন পর্যন্ত অন্তত  দুহাজার ৮০০ মানুষ আহত হওয়ার তথ্য পাওয়া গেছে।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা আবদুল মাতেন কানাই বলেন, নিরাপত্তা থেকে শুরু করে খাদ্য ও চিকিৎসাসেবা সব ক্ষেত্রেই পূর্ণ সহায়তা পৌঁছে দেওয়ার জন্য সব ধরনের দল মোতায়েন করা হয়েছে।

রয়টার্স টেলিভিশনের ফুটেজে দেখা গেছে, হেলিকপ্টারে আহতদের সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে। স্থানীয় বাসিন্দারা নিরাপত্তা বাহিনী ও চিকিৎসাকর্মীদের সঙ্গে মিলে অ্যাম্বুলেন্সে করে আহতদের হাসপাতালে পাঠাচ্ছেন।

রয়টার্সের প্রকাশ করা ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে, আহতদের হেলিকপ্টারে করে সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে। এছাড়া, আহতদের অ্যাম্বুলেন্সে নিতে উদ্ধারকর্মীদের সহায়তা করছেন স্থানীয়রা।

এর আগে ২০২২ সালে আফগানিস্তানের পূর্বাঞ্চলে ৬ দশমিক ১ মাত্রার ভূমিকম্পে প্রায় এক হাজার মানুষ প্রাণ হারিয়েছিলেন।

Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

You missed