মিয়ানমারের বন্দীশিবিরে হত্যা-ধর্ষণসহ যৌনাঙ্গ পুড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ

Google Alert – সশস্ত্র

মিয়ানমারের বন্দিশিবিরগুলোতে অমানবীয় বর্বরতা চলছে। গত এক বছর ধরে আটক থাকা কয়েদির উপর নৃশংস আচরণ করছে দেশটির নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য, সংশ্লিষ্ট মিলিশিয়া এবং বিরোধী সশস্ত্র গোষ্ঠীর সদস্যরা। ভয়াবহ নির্যাতগুলোর মধ্যে রয়েছে- বৈদ্যুতিক শক, হত্যা, শ্বাসরোধ, গণধর্ষণ ও যৌনাঙ্ক পুড়িয়ে দেওয়ার মতো ঘটনা। মঙ্গলবার জাতিসংঘের প্রকাশিত ১৬ পৃষ্ঠার বার্ষিক প্রতিবেদন ইনভেস্টিকেটিভ ম্যাকানিজম ফর মিয়ানমার (আইআইএমএম)-এ বিষয়টি প্রকাশ করা হয়েছে।

প্রকাশিত প্রতিবেদনটি ১ জুলাই ২০২৪ থেকে ৩০ জুন ২০২৫ পর্যন্ত ঘটিত সব অপরাধের তথ্য আছে। ১ হাজার ৩০০-এর বেশি সূত্র থেকে সংগৃহীত তথ্য রয়েছে। এছাড়াও রয়েছে ৬০০ প্রত্যক্ষদর্শীর সাক্ষ্য, ফরেনসিক প্রমাণ, নথি ও ছবি। আন্তর্জাতিক এই স্বাধীন তদন্ত দলের প্রধান নিকোলাস কুমজিয়ান বলেন, মিয়ানমারে নারকীয় নির্যাতনের ক্রমবর্ধমান ঘটনা ও নির্মমতাকে প্রতিবেদনে বিশেষভাবে তুলে ধরা হয়েছে। তিনি বলেন, ‘আমরা এমন একটি দিনের জন্য কাজ করছি, যখন অপরাধীদের তাদের কৃতকর্মের জন্য আদালতে মুখোমুখি হতে হবে।’ নিকোলাস আরও বলেন, তারা তদন্ত করতে গিয়ে প্রত্যক্ষদর্শীদের সাক্ষ্যসহ গুরত্বপূর্ণ প্রমাণ পেয়েছেন। 

এর মধ্য দিয়েই মিয়ানমারের আটক কেন্দ্রগুলোতে যে পরিকল্পিতভাবে নির্যাতন চালানো হয়েছে, তা বেরিয়ে আসে। প্রতিবেদনে বলা হয়, ইতোমধ্যে কয়েকজন উচ্চপদস্থ সামরিক কর্মকর্তাকে চিহ্নিত করা হয়েছে। যদিও তদন্ত চলমান থাকায় ও তাদের সতর্ক করে দেওয়ার আশঙ্কায় নাম প্রকাশ করা হয়নি। 

মিয়ানমারের সামরিকপন্থি সরকার এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি। জাতিসংঘের দলটির তথ্য ও দেশটিতে প্রবেশের অনুমতির অনুরোধের জবাবও দেয়নি তারা। 

এর আগে সামরিক সরকার অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছে, তারা শান্তি ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দায়িত্ব পালন করেছে। অস্থিরতার জন্য সন্ত্রাসীদের দায়ী করা হয়েছে। মিয়ানমারে ২০২১ সালের সামরিক অভ্যুত্থানের পর দেশজুড়ে গৃহযুদ্ধ ছড়িয়ে পড়ে। জাতিসংঘের হিসাব অনুযায়ী, তখন থেকে কয়েক লাখ মানুষকে আটক করা হয়েছে। 

সম্প্রতি সেনাপ্রধান মিন অং হ্লাইং চার বছরের জরুরি অবস্থা তুলে দিয়ে নিজেকে ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট ঘোষণা করেছেন এবং নির্বাচনের পরিকল্পনার কথা জানিয়েছেন। আইআইএমএম ২০১১ সাল থেকে মিয়ানমারে সংঘটিত মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা তদন্ত করছে। 

এর মধ্যে রয়েছে ২০১৭ সালে রোহিঙ্গা মুসলিমদের বিরুদ্ধে অভিযান এবং অভ্যুত্থানের পর সব জাতিগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে সংঘটিত অপরাধ। তবে কুমজিয়ান সতর্ক করে বলেছেন, জাতিসংঘের বাজেট সংকটের কারণে তাদের কাজ হুমকির মুখে পড়েছে। যৌন সহিংসতা, শিশুদের বিরুদ্ধে অপরাধের গবেষণা এবং সাক্ষীদের নিরাপত্তা তহবিল বছরের শেষে শেষ হয়ে যাবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এতে অপরাধ নথিভুক্ত করা ও বিচারপ্রক্রিয়ায় প্রমাণ সরবরাহের সক্ষমতা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *