মিয়ানমারের ‘স্ক্যাম ক্যাম্পে’ স্টারলিংক সেবা বন্ধ করেছে স্পেসএক্স 

Bangla Tribune

মিয়ানমারের স্ক্যাম ক্যাম্পে (জালিয়াত চক্রের ঘাঁটি) আড়াই হাজারের বেশি স্টারলিংক নেটওয়ার্ক বন্ধ করে দিয়েছে মার্কিন প্রতিষ্ঠান স্পেসএক্স। প্রতিষ্ঠানটির ব্যবসায়িক শাখার প্রধান লরেন ড্রায়ার এই সিদ্ধান্ত জানিয়ে বলেন, মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এ খবর জানিয়েছে।

থাইল্যান্ড-মিয়ানমার সীমান্তবর্তী অঞ্চলে অন্তত ৩০টির বেশি জালিয়াত চক্র সক্রিয় রয়েছে বলে ধারণা করা হয়। ভুয়া বিনিয়োগ ও প্রেমের ফাঁদে ফেলে এখানে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের মানুষের অর্থ লুটে নেওয়া হয়। প্রতারণার মাধ্যমে চক্রগুলো বছরে হাজার হাজার কোটি ডলার লুটে নিচ্ছে।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে ড্রায়ার লিখেছেন, মিয়ানমারে সন্দেহভাজন জালিয়াত ঘাঁটিতে স্পেস এক্স উদ্যোগী হয়ে আড়াই হাজারের বেশি স্টারলিংক নেটওয়ার্ক বন্ধ করে দিয়েছে। আমরা চাই স্টারলিংক মানবকল্যাণে এবং বিশ্বজুড়ে সংযোগ স্থাপনে ব্যবহার করা হোক। কোনও অন্যায়ের কাজে আমরা এর ব্যবহার দেখতে চাই না।

সোমবার মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর অভিযান চালিয়ে বিদ্রোহীদের নিয়ন্ত্রণে থাকা কেকে পার্ক পুনর্দখলের পর স্পেস এক্সের এই সিদ্ধান্ত এলো। এটি ছিল সীমান্ত অঞ্চলের সবচেয়ে বড় জালিয়াতির ঘাঁটিগুলোর একটি, যেখানে সাম্প্রতিক অভিযানে দুই হাজারেরও বেশি শ্রমিককে মুক্ত করা হয়েছে এবং ৩০টি স্টারলিংক টার্মিনাল জব্দ করা হয়েছে।

অভিযানের সময় তোলা ছবিতে দেখা যায়, কেকে পার্কের ছাদে স্যাটেলাইট ডিশ বসানো ছিল। বিবিসিকে দেওয়া ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, হাজার হাজার শ্রমিক পায়ে হেঁটে স্থান ত্যাগ করছেন।

মানবাধিকার কর্মীরা দীর্ঘদিন ধরে সতর্ক করে আসছিলেন যে, স্টারলিংকের প্রযুক্তি সীমান্তের প্রত্যন্ত এলাকাগুলোতে সক্রিয় থাকা মূলত চীনা অপরাধচক্রগুলোকে কার্যক্রম চালাতে সহায়তা করছে। এই চক্রগুলো বৈধ চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে মানুষকে জিম্মি করে ফেলে। পরে তাদের বাধ্য করে চক্রের অন্যায়ের সঙ্গে জড়িত হতে।

বেঁচে ফেরা অনেক ভুক্তভোগীর ভাষ্যে জানা যায়, দীর্ঘ সময় কাজ করা আর কাজের টার্গেট পূরণ না করলে মারধর করা হতো।

তবে এখনও সীমান্ত অঞ্চলে অন্তত ৩০টির মতো জালিয়াত চক্রের ঘাঁটি সক্রিয় আছে বলে ধারণা করা হচ্ছে, যেগুলোতে দশ হাজারেরও বেশি মানুষ কাজ করতে বাধ্য হয়। এসব কেন্দ্রের অনেকগুলো স্থানীয় মিলিশিয়াদের নিয়ন্ত্রণে, যারা মিয়ানমার সেনাবাহিনীর মিত্র। ফলে তাদের স্টারলিংক সংযোগও বন্ধ হয়েছে কি না, তা নিশ্চিত নয়।

এই কেন্দ্রগুলো মিয়ানমারের যুদ্ধকালীন অর্থনীতির গুরুত্বপূর্ণ অংশে পরিণত হয়েছে। দেশটির সেনাশাসন বিভিন্ন বিদ্রোহী গোষ্ঠীর সঙ্গে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে এবং ক্ষমতা ধরে রাখতে চীনের সমর্থনের ওপর নির্ভর করছে।

Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *