মিয়ানমারে সেনা হেফাজতে অং সান সু চির স্বাস্থ্যের অবনতি

Google Alert – সামরিক

মিয়ানমারের বন্দি সাবেক নেতা অং সান সু চি হৃদরোগজনিত সমস্যায় ভুগছেন। শুক্রবার (৫ সেপ্টেম্বর) সু চির ছেলে কিম আরিস বলেছেন,  তার মায়ের জরুরি চিকিৎসার প্রয়োজন। তিনি তার মাকে ‘নিষ্ঠুর ও জীবন-সংকটময়’ কারাগার থেকে অবিলম্বে মুক্তি দেওয়ার আহ্বান জানান। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।

কিম আরিস রয়টার্সকে বলেন, ৮০ বছর বয়সী সু চি সেনা অভ্যুত্থানের পর ২০২১ সাল থেকে হেফাজতে রয়েছেন। তিনি প্রায় এক মাস আগে একজন কার্ডিওলজিস্ট দেখানোর অনুরোধ করেছিলেন। তবে তার ছেলেকে জানানো হয়নি সে অনুরোধ মঞ্জুর হয়েছে কি না।

লন্ডন থেকে ফোনে আরিস বলেন, ‘যথাযথ চিকিৎসা পরীক্ষা ছাড়া… তার হৃদযন্ত্রের অবস্থা বোঝার কোনও উপায় নেই। আমি ভীষণ উদ্বিগ্ন। যাচাই করার কোনও উপায় নেই তিনি আদৌ জীবিত কিনা।’

নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ী সু চি হাড় ও মাড়ির সমস্যায়ও ভুগছেন বলে জানান আরিস। তিনি আরও বলেন, মার্চ মাসের ভূমিকম্পে ৩ হাজার ৭০০-এর বেশি মানুষ নিহত হয়েছিলেন। তখনও তার মা আহত হয়ে থাকতে পারেন। ফেসবুকে প্রকাশিত এক ভিডিওতে তিনি সু চি ও মিয়ানমারের সব রাজনৈতিক বন্দিদের মুক্তির আবেদন জানান।

রয়টার্স মন্তব্যের জন্য মিয়ানমারের সামরিক-সমর্থিত অন্তর্বর্তী সরকারের মুখপাত্রের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করলেও কোনও সাড়া মেলেনি। তথ্য মন্ত্রণালয়ও ইমেইলে পাঠানো প্রশ্নের জবাব দেয়নি।

২০২১ সালের ফেব্রুয়ারির অভ্যুত্থানের পর থেকে মিয়ানমার সহিংসতায় জর্জরিত। সেনাবাহিনী ব্যাপক গণবিক্ষোভ দমন করে, যা পরে পূর্ণাঙ্গ সশস্ত্র বিদ্রোহে রূপ নেয়।

দীর্ঘদিন ধরে মিয়ানমারের গণতন্ত্র আন্দোলনের প্রতীক সু চি উসকানি, দুর্নীতি ও নির্বাচনী জালিয়াতিসহ নানা অভিযোগে ২৭ বছরের কারাদণ্ড ভোগ করছেন। তবে তিনি সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।

সেনাবাহিনী বলেছে, সু চির দল ব্যাপক ভোট কারচুপির মাধ্যমে জয়লাভ করেছিল। তাই তারা ক্ষমতা দখল করেছে। যদিও নির্বাচনি পর্যবেক্ষকরা কোনও জালিয়াতির প্রমাণ পাননি।

বিদেশি সরকার ও মানবাধিকার সংগঠনগুলো সবসময় তার মুক্তির দাবি জানিয়ে আসছে।

এ বছরের ডিসেম্বরের শেষ দিকে সেনা-সমর্থিত অন্তর্বর্তী সরকার বহু ধাপে নতুন নির্বাচন আয়োজনের পরিকল্পনা করেছে—যা হবে অভ্যুত্থান-পরবর্তী প্রথম নির্বাচন।

১৯৪৫ সালে জন্ম নেওয়া সু চি ছিলেন মিয়ানমারের স্বাধীনতার নায়ক জেনারেল অং সানের কন্যা। তিনি তখন শিশু, যখন তার পিতাকে হত্যা করা হয়। জীবনের প্রায় দুই দশক তিনি বন্দিত্বে কাটিয়েছেন। এর মধ্যে ১৫ বছর গিয়েছে ইয়াঙ্গুনের ইনইয়া লেকের ধারে তার পারিবারিক বাড়িতে গৃহবন্দি অবস্থায়।

অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষালাভের পর তিনি ১৯৭২ সালে ব্রিটিশ গবেষক মাইকেল আরিসকে বিয়ে করেন এবং তাদের দুই ছেলে হয়। ১৯৮৮ সালে অসুস্থ মায়ের সেবার জন্য তিনি মিয়ানমারে ফিরে আসেন।

সেই সময়েই তিনি সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে দেশব্যাপী আন্দোলনে যোগ দেন। ন্যাশনাল লীগ ফর ডেমোক্রেসি (এনএলডি) গঠন করেন এবং মিয়ানমারের সবচেয়ে প্রভাবশালী গণতন্ত্রপন্থী নেতা হিসেবে উঠে আসেন।

Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *