Google Alert – সেনাবাহিনী
বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার কে বি কনভেনশন হলে ‘ষড়যন্ত্রমূলক গোপন বৈঠকে’র ঘটনায় আলোচিত সুমাইয়া জাফরিনকে হেফাজতে নেওয়ার কথা জানিয়েছে পুলিশ।
সুমাইয়ার স্বামী সেনাবাহিনীর মেজর সাদিকুল হকের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগ কর্মীদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার অভিযোগে ইতোমধ্যে তদন্ত আদালত গঠন করেছে সেনাবাহিনী।
বুধবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) এক বার্তায় বলা হয়, “রাজধানীর কে বি কনভেনশন হলের ঘটনায় সম্পৃক্ততার অভিযোগে সুমাইয়া জাফরিন নামে এক নারীকে ডিবি হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।”
মেজর সাদিকুলের স্ত্রী সুমাইয়া পুলিশের এএসপি পদমর্যাদার কর্মকর্তা বলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কিছু পোস্ট ছড়িয়ে পড়ে। পরে গত ২ অগাস্ট পুলিশ সদর দপ্তর জানায়, এই নামে তাদের কোন এএসপি নেই। পরে বুধবার সুমাইয়াকে গ্রেপ্তারের তথ্য জানানো হয়।
এ নিয়ে ওই ঘটনায় ভাটারা থানায় পুলিশের দায়ের করা মামলায় ২৩ জনকে গ্রেপ্তার করা হল। ভাটারা থানার এসআই জ্যোতির্ময় মণ্ডল গত ১৩ জুলাই সন্ত্রাসবিরোধী আইনে এ মামলা দায়ের করেন।
মামলায় বলা হয়, গত ৮ জুলাই বসুন্ধরাসংলগ্ন কে বি কনভেনশন সেন্টারে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ ‘গোপন বৈঠকের’ আয়োজন করে। দিনভর বৈঠকে ছাত্রলীগ, আওয়ামী লীগ ও অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মচারীরা মিলে অংশ নেন তিন থেকে চারশ জন । সেখানে তারা ‘সরকারবিরোধী স্লোগান’ দেন।
এজাহারে বলা হয়, ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশ পেলে সারা দেশ থেকে ঢাকায় লোক জড়ো করা, শাহবাগ মোড় দখল করে ‘অস্থিতিশীল পরিস্থিতি’ সৃষ্টি করা, মানুষের মধ্যে ‘আতঙ্ক সৃষ্টি করে’ শেখ হাসিনার দেশে ফেরা নিশ্চিত করার মত পরিকল্পনা করা হয় সেখানে।
মেজর সাদিকুল হক নামের এক কর্মকর্তা ওই বৈঠকে ছিলেন এবং তিনি ‘আওয়ামী লীগ কর্মীদের প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন’- সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এমন আলোচনার বিষয়ে ৩১ জুলাই সেনা সদরের প্রেস ব্রিফিংয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করেন সাংবাদিকরা।
জবাবে সেনাসদরের মিলিটারি অপারেশনস পরিদপ্তরের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. নাজিম-উদ-দৌলা বলেন, “মেজর সাদিকের বিষয়টি আমাদের নজরে এসেছে। যদিও বিষয়টি তদন্তাধীন আছে।
“তারপরেও আমি বলব, যে এরকম একটা ঘটনার কথা জানার পরে সে সেনাবাহিনী হেফাজতে আছে এবং তদন্ত চলমান আছে। তদন্তে তার দোষ প্রমাণিত হলে নিঃসন্দেহে সেনাবাহিনীর প্রচলিত নিয়মে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। যেহেতু বিষয়টি তদন্তাধীন আছে এর বেশি এই মুহূর্তে বলা আমার মনে হয় সমীচীন হবে না।”
সংবাদমাধ্যমে আসা খবরে বলা হচ্ছে, আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের গ্রেপ্তার দুই নেতাকে জিজ্ঞাসাবাদের পর মেজর সাদিকের ওই বৈঠকে অংশ নেওয়ার তথ্য জানতে পারে পুলিশ। সেই তথ্যের ভিত্তিতে এই সেনা কর্মকর্তাকে হেফাজতে নেওয়া হয়।
১ অগাস্ট আন্তঃবাহিনী গণসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, “অভিযোগটি পাওয়ার সাথে সাথে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী বিষয়টিকে সর্বোচ্চ গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করে। এর পরিপ্রেক্ষিতে, গত ১৭ জুলাই উক্ত সেনা কর্মকর্তাকে তার নিজ বাসস্থান রাজধানীর উত্তরা এলাকা থেকে আটক করে সেনা হেফাজতে নেওয়া হয়।”
ঘটনাটির সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্তের লক্ষ্যে ইতোমধ্যে একটি তদন্ত আদালত গঠন করা হয়েছে জানিয়ে আইএসপিআর বলেছে, প্রাথমিক তদন্তে অভিযোগের ‘সত্যতা’ পাওয়া গেছে।
“পূর্ণ তদন্ত সমাপ্তি সাপেক্ষে প্রাপ্ত তথ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে উক্ত সেনা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে সেনাবাহিনীর প্রচলিত আইন ও বিধি অনুযায়ী যথাযথ শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”
এ বিষয়ে বাংলাদেশ পুলিশ ও অন্যান্য আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থার সঙ্গে প্রয়োজনীয় সমন্বয় করা হচ্ছে জানিয়ে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, “তার কর্মস্থল থেকে অনুপস্থিত থাকা সংক্রান্ত ব্যত্যয় এর বিষয়ে অপর আরেকটি তদন্ত আদালত গঠন করা হয়েছে এবং তদন্ত শেষে আদালতের সুপারিশক্রমে সেনা আইন অনুযায়ী দায় নিরূপণ করত প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”
পুরনো খবর
‘রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতার’ অভিযোগে সেনা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে তদন্ত আদালত গঠন