Google Alert – সামরিক
যুদ্ধবিরতি প্রস্তাব মেনে নিয়েছে হামাস, যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার ইঙ্গিত ইসরায়েলের
বিদেশী সংবাদ মাধ্যম : মঙ্গলবার, ১৯ আগস্ট ২০২৫
গাজা যুদ্ধবিরতির সর্বশেষ প্রস্তাব মেনে নিয়েছে হামাস। পাশাপাশি তারা যুদ্ধের ইতি টানতে আলোচনা শুরু করতেও প্রস্তুত। ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠনটি মধ্যস্থতাকারীদের এমনটা জানিয়েছে। গাজায় ইসরায়েল যুদ্ধ শুরু করার পর থেকে এ পর্যন্ত ৬২ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। ইসরায়েলের হামলায় ব্যাপকভাবে ফিলিস্তিনি নারী পুরুষ নিহত হওয়ার পাশাপাশি দেশটির চাপিয়ে দেয়া অনাহারেও কেউ কেউ মারা যাচ্ছেন। এরই মধ্যে ব্যাপকভাবে বাস্তুচ্যুতির নতুন হুমকি তৈরি করেছে ইসরায়েল।
হামাস গতকাল সোমবার এক সংক্ষিপ্ত বিবৃতিতে বলেছে, তারা ও অন্যান্য ফিলিস্তিনি গোষ্ঠী মঙ্গলবার কাতার ও মিসরীয় মধ্যস্থতাকারীদের প্রস্তাব মেনে নেওয়ার কথা জানিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর সরকার এ বার্তা পেয়েছে বলে জানিয়েছে ইসরায়েলের সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইসরায়েল ও চ্যানেল ১২। এ বিষয়ে অবগত একটি সূত্র আলজাজিরাকে বলেছে, সবশেষ ওই যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবে ৬০ দিনের জন্য সামরিক অভিযান বন্ধ রাখার কথা বলা হয়েছে। এ ছাড়া, এ সময়ে ইসরায়েলি সেনারা অন্যত্র সরে যাবেন; যাতে গাজায় মানবিক সহায়তা ঢুকতে পারে।
প্রস্তাব অনুযায়ী, ওই সময়ের মধ্যে ৫০ ইসরায়েলি জিম্মির অর্ধেককে ছেড়ে দেয়া হবে। বিনিময়ে মুক্তি দেয়া হবে ফিলিস্তিনি বন্দীদের। কাতারের প্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ বিন আবদুর রহমান বিন জসিম আল থানি কায়রোতে মিসরের প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাত্তাহ আল-সিসির সঙ্গে সাক্ষাতের পর হামাসের যুদ্ধবিরতি প্রস্তাব মেনে নেয়ার এই ঘোষণা এল। তবে আগের ব্যর্থ আলোচনাগুলো বিবেচনায় নিলে বোঝা যায়, এ ঘোষণার অর্থ এই নয় যে যুদ্ধ খুব শিগগিরই শেষ হতে চলেছে।
সবশেষ ওই যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবে ৬০ দিনের জন্য সামরিক অভিযান বন্ধ রাখার কথা বলা হয়েছে। এ ছাড়া, এ সময়ে ইসরায়েলি সেনারা অন্যত্র সরে যাবেন; যাতে গাজায় মানবিক সহায়তা ঢুকতে পারে। আবার, এ সময়ের মধ্যে ৫০ ইসরায়েলি জিম্মির অর্ধেককে ছেড়ে দেয়া হবে। বিনিময়ে মুক্তি দেয়া হবে ফিলিস্তিনি বন্দীদের।
গত দুই বছর ধরে হামাস বিভিন্ন সময় যুদ্ধবিরতি এবং ইসরায়েলি জিম্মি ও ফিলিস্তিনি বন্দীদের মুক্তির প্রস্তাব মানতে রাজি হয়েছে। কিন্তু ইসরায়েল সেগুলো নানা অজুহাতে প্রত্যাখ্যান করে গাজা উপত্যকায় হামলা অব্যাহত রাখার ওপর জোর দিয়েছে।
সবচেয়ে সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে যুদ্ধবিরতির মেয়াদ। হামাস যুদ্ধের স্থায়ী অবসান চাইছে, কিন্তু ইসরায়েল চাইছে অস্থায়ী বিরতি; যাতে গাজা থেকে তাদের জিম্মিরা মুক্তি পাওয়ার পর আবার ধ্বংসযজ্ঞ ও মানুষকে বাড়িঘর থেকে উচ্ছেদের অভিযান চালাতে পারে। এদিকে ইসরায়েল গাজা সিটির নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পরিকল্পনা বাস্তবায়নে জোর দিচ্ছে। গাজা উপত্যকার একসময়ের সবচেয়ে বড় এবং সমৃদ্ধ এ নগর থেকে হাজারো ফিলিস্তিনিকে জোরপূর্বক বের করে দেওয়ার পরিকল্পনা করছে ইসরায়েল। এ কারণে সেখানে লাগাতার বোমা নিক্ষেপ করছে তারা।
ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, তিনি প্রতিরক্ষামন্ত্রী ও সেনাপ্রধানের সঙ্গে গাজা সিটি দখলের পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা করেছেন। তার দাবি, ‘হামাস ব্যাপক চাপে আছে।’ প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাৎজ বলেন, ‘হামাস এখন আলোচনায় রাজি হচ্ছে শুধু এই কারণে যে তারা জানে, আমরা গাজা সিটি দখলে অটল।’
অন্যদিকে কট্টর দক্ষিণপন্থী অর্থমন্ত্রী বেজালেল স্মোট্রিচ যেকোনো যুদ্ধবিরতি চুক্তির বিরোধিতা করেছেন। তিনি বলেন, ‘হামাস নিজেদের ধ্বংস হতে দেখছে। এখন আংশিক চুক্তির মাধ্যমে বাঁচতে চাইছে। এ কারণেই আমাদের কোনো ছাড় দেয়া উচিত নয়। ’