jagonews24.com | rss Feed
বিশ্বের সবচেয়ে উত্তরে মানুষের বসবাসযোগ্য স্থানের নাম অ্যালার্ট—যা কানাডার আর্কটিক অঞ্চলে অবস্থিত এবং উত্তর মেরু থেকে মাত্র ৮১৭ কিলোমিটার দূরে। নুনাভাট প্রদেশের এলসমেয়ার দ্বীপের উত্তর-পূর্ব প্রান্তে অবস্থিত এই সামরিক ও বৈজ্ঞানিক ঘাঁটিটি প্রতি বছর পৃথিবীর অন্যতম কঠিন পরিবেশের মুখোমুখি হয়। এর মধ্যে সবচেয়ে ব্যতিক্রমী একটি প্রাকৃতিক ঘটনা হলো পোলার নাইট—একটানা ১৩৬ দিন অন্ধকার থাকে।
প্রতি বছর মধ্য অক্টোবর থেকে এই সূর্যহীন সময় শুরু হয়ে ফেব্রুয়ারির শেষ পর্যন্ত স্থায়ী হয়। এ বছর শেষবার সূর্যের দেখা মিলেছে ১৩ অক্টোবর এবং তা ফের দেখা যাবে ২৭ ফেব্রুয়ারি।
এই দীর্ঘ অন্ধকারে অ্যালার্টের বাসিন্দারা সম্পূর্ণরূপে কৃত্রিম আলোর ওপর নির্ভর করেন। সূর্যালোকের অনুপস্থিতিতে তাদের জৈবিক ঘড়ি বা সারকাডিয়ান রিদম বিঘ্নিত হয়।
তাপমাত্রা নেমে যায় মাইনাস ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে, আর দীর্ঘ বিচ্ছিন্নতা মানসিক ও শারীরিক চ্যালেঞ্জকে আরও বাড়িয়ে দেয়।
বিশ্বের আরও যেসব স্থানে হয় এমন পোলার নাইট
স্ভালবার্ড ও ইয়ান মায়েন (নরওয়ে):
এখানে প্রায় ১১১ দিন সূর্য ওঠে না। সূর্য অস্ত যায় ২৬ অক্টোবর, ফের উদয় হয় ১৫ ফেব্রুয়ারি।
ট্রমসো (নরওয়ে):
উত্তর নরওয়ের এই শহরে ৪৯ দিন সূর্যহীন সময় থাকে—২৭ নভেম্বর থেকে জানুয়ারির মধ্যভাগ পর্যন্ত।
উটকিয়াগভিক (পূর্বে ব্যারো), আলাস্কা:
এখানে ৬৫ দিন সূর্য ওঠে না—নভেম্বরের মাঝামাঝি থেকে জানুয়ারির শেষ পর্যন্ত।
মুরমানস্ক (রাশিয়া):
সেখানে প্রায় ৪০ দিন সূর্য দেখা যায় না।
ইলুলিসাত (গ্রিনল্যান্ড):
যেখানে অক্টোবরের শেষ থেকে শুরু হয় দীর্ঘ অন্ধকার।
দক্ষিণ মেরু (অ্যান্টার্কটিকা):
এখানে প্রায় ছয় মাস রাত থাকে—মার্চ থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। এই সময়েও বিজ্ঞানীরা গুরুত্বপূর্ণ গবেষণা চালিয়ে যান।
মূলত পৃথিবীর অক্ষের হেলান বা টিল্ট–এর কারণেই এই ঘটনা ঘটে। শীতকালে সংশ্লিষ্ট মেরুটি সূর্যের বিপরীত দিকে হেলে থাকে, ফলে সূর্য দিগন্তের ওপরে ওঠে না। যত উত্তরের বা দক্ষিণের দিকে যাওয়া যায়, অন্ধকারের এই সময় তত দীর্ঘ হয়।
উল্টোভাবে গ্রীষ্মকালে ওই একই অঞ্চলে হয় মিডনাইট সান—যেখানে সূর্য একটানা ২৪ ঘণ্টা দৃশ্যমান থাকে।
সূত্র: এনডিটিভি
এমএসএম
