Google Alert – সশস্ত্র

বাংলাদেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে একসময় এমন একটি ধারা ছিল, যাকে অনেকেই “সৌহার্দ্যরে রাজনীতি” বলে অভিহিত করেন। এ ধারার মূল বৈশিষ্ট্য ছিলÑ রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বী হলেও নেতারা ব্যক্তিগত ও সামাজিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে শালীনতা, সৌজন্য এবং পারস্পরিক সম্মান বজায় রাখতেন। তারা পারিবারিকভাবে পরিচিত ছিলেন। ছাত্রজীবন থেকেই একসাথে চলার কারণে পরবর্তীতে আদর্শগত বা দলগতভাবে ভিন্নতা তৈরি হলেও সেগুলো তাদের মধ্যে দূরত্ব তৈরি করতে পারেনি। কিন্তু সে অবস্থা সময়ের পরিক্রমায় ক্রমাগতভাবে কেবল অবনতির দিকেই গিয়েছে।

ঢাকার সেনানিবাসের সেনাকুঞ্জ একটি ঐতিহ্যবাহী অনুষ্ঠানস্থল, যেখানে প্রতি বছর সশস্ত্র বাহিনী দিবস, সামরিক অভ্যর্থনা বা রাষ্ট্রীয় নৈশভোজ অনুষ্ঠিত হয়। নব্বই দশকে এবং ২০০০-এর শুরুর দিকে সেনাকুঞ্জে আয়োজিত এসব অনুষ্ঠানে শেখ হাসিনা (তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী বা বিরোধীদলীয় নেতা) ও খালেদা জিয়া (তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেতা বা প্রধানমন্ত্রী) প্রোটোকল অনুযায়ী একসাথে বসতেন। তাঁরা হাসিমুখে কথা বলতেন, একে অপরকে শুভেচ্ছা জানাতেন, এবং গণমাধ্যমে সেই ছবি ও ভিডিও প্রচার হলে সাধারণ মানুষ মনে করতেনÑ “রাজনীতিতে বিরোধ থাকলেও ব্যক্তিগত সম্পর্ক সৌহার্দ্যমূলক।”

শুধু তাই নয়। অতীতে রাষ্ট্রীয় বা বেসরকারি সামাজিক অনুষ্ঠানে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষদের এক মঞ্চে দেখা যেত। জাতীয় দিবসের সংবর্ধনা, রাষ্ট্রপতি ভবনের নৈশভোজ, এমনকি কূটনৈতিক অনুষ্ঠানেÑ দুই শীর্ষ নেত্রীকে একই সারিতে বসে আলাপ করতে দেখা গেছে। ১৯৯৬ সালে ও ২০০১ সালে ক্ষমতার পরিবর্তনের সময়ও রাজনৈতিক শালীনতা বজায় রেখে একে অপরকে অভিনন্দন জানানোর দৃশ্য গণমাধ্যমে এসেছে। সৌহার্দ্যরে রাজনীতির আরেকটি বড় দিক ছিল ব্যক্তিগত খোঁজখবর নেয়া। ১৯৯১ সালে খালেদা জিয়া প্রধানমন্ত্রী থাকাকালে শেখ হাসিনা অসুস্থ হলে বা দুর্ঘটনায় পড়লে তিনি খোঁজ নিয়েছেন। একইভাবে, শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী থাকাকালে খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যের অবনতি হলে হাসপাতালে বা বাসায় গিয়েছেন, অথবা ফুল পাঠিয়ে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৯৯১ সালের মে মাসে জামায়াতের তৎকালীন সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা মতিউর রহমান নিজামী গেলে তার ওপর আক্রমণ চালায় দুর্বৃত্তরা। সে সময়ে প্রধানমন্ত্রী ছিলেন বেগম খালেদা জিয়া। তিনি রাষ্ট্রীয় প্রটোকলসহই মাওলানা নিজামীকে দেখতে হাসপাতালে গিয়েছিলেন এবং মাওলানা নিজামীর জন্য দোয়া করেছিলেন। এ ধরনের সৌজন্যমূলক আচরণ জনগণের কাছে একটি ইতিবাচক বার্তা দিত যে, দেশের সর্বোচ্চ নেতারা রাজনৈতিক ভিন্নমতের বাইরে মানবিক সম্পর্কও বজায় রাখেন।

কিন্তু কালের পরিক্রমায় এ সৌহার্দ্যরে রাজনীতি ধীরে ধীরে হারিয়ে গেছে। বিশেষ করে তীব্র রাজনৈতিক সংঘাত, নির্বাচন বয়কট, সহিংস আন্দোলন, ও পারস্পরিক অবিশ্বাসের কারণে শীর্ষ নেতারা বহু বছর একই মঞ্চে বসেননি। এখন সামাজিক বা রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠানে তাঁদের একসাথে দেখা যাওয়া অত্যন্ত বিরল, এবং ব্যক্তিগত সৌজন্যের জায়গা দখল করেছে প্রকাশ্য শত্রুতা ও দূরত্ব। এ দূরত্বটি তৈরি হয় অপর দলকে কোনঠাসা ও নিষিদ্ধ করার ধারনার মধ্য দিয়ে আর এ সূত্রপাত হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। ৯০-এর দশকের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের “সামাজিক চুক্তি” এবং “পরিবেশ পরিষদ” নামে যে কাঠামোর মাধ্যমে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল বা সংগঠনকে ক্যাম্পাসে কাজ করতে না দেয়ার একটি সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। এ সিদ্ধান্তটি গৃহীত হয়েছিল বাহ্যত রাজনৈতিক সহিংসতা ও সংঘর্ষ কমানোর উদ্দেশ্যে।

সে সময়ে এরকম সিদ্ধান্ত নেয়ার নেপথ্যে বেশ কিছু কারণ বলা হয়েছিল। যেমন ৮০-এর দশকের শেষ দিকে ও ৯০-এর দশকের শুরুতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছিল তীব্র রাজনৈতিক সংঘর্ষ, ছাত্র সংগঠনের আধিপত্য ও ক্যাম্পাস দখল রাজনীতির কেন্দ্রস্থল। একাধিক হত্যাকাণ্ড, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড, টেন্ডারবাজি, অস্ত্রের প্রদর্শন এবং ছাত্রাবাসে অনিরাপদ পরিস্থিতি তৈরি হয়। তখন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন, শিক্ষকসমাজ এবং ছাত্র সংগঠনের কিছু অংশ ক্যাম্পাসকে “সশস্ত্র সংঘর্ষমুক্ত” রাখতে চেয়েছিল। এর অংশ হিসেবে সামাজিক চুক্তি নামক একটি প্রক্রিয়া অবলম্বন করা হয়। সামাজিক চুক্তি ছিল বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের মধ্যে একধরনের মৌখিক ও লিখিত সমঝোতা, যেখানে তারা কিছু নিয়ম মানতে সম্মত হয়, যেমনÑনির্দিষ্ট সময়ে মাইক ব্যবহার, অন্যের পোস্টার ছিঁড়ে না ফেলা, সহিংসতা এড়িয়ে চলা ইত্যাদি। পাশাপাশি ছিল পরিবেশ পরিষদ যা মূলত ছিল এক ধরনের সমন্বয়কারী কমিটি, যেখানে শিক্ষক ও ছাত্র প্রতিনিধি থাকত এবং ক্যাম্পাসের “শান্তিপূর্ণ পরিবেশ” রক্ষার জন্য কিছু নিয়ম চাপিয়ে দেয়া হত, যার মধ্যে অননুমোদিত দল বা বাইরের সংগঠনকে ক্যাম্পাসে কার্যক্রম চালাতে না দেয়াও অন্তর্ভুক্ত ছিল।

মূলত ৯০ এর অভ্যুত্থানের পর এরকম একটি সিদ্ধান্ত নেয়াই হয়েছিল ক্যাম্পাসে ইসলামিক ভাবধারার সংগঠনগুলোকে কোনঠাসা করার জন্য। যদিও বিশ্ববিদ্যালয় হলো মতপ্রকাশের স্বাধীনতার কেন্দ্র; সেখানে বিভিন্ন রাজনৈতিক মত ও দলের কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়া গণতান্ত্রিক চর্চাকে সংকুচিত করে। এটা এক ধরনের “গেটকিপিং” বা নিয়ন্ত্রণমূলক নীতি, যা সমালোচকদের মতে মুক্তচিন্তা ও রাজনৈতিক বহুমতের পরিপন্থী। মূলত ইসলামিক ছাত্র সংগঠন বিশেষ করে ছাত্রশিবিরকে প্রতিক্রিয়াশীল নামে আখ্যায়িত করে বাম ঘরানার প্রগতিশীল দলগুলোই এ পরিবেশ পরিষদ গঠন করে। অথচ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক কাঠামোতে এরকম কোনো পরিষদের অস্তিত্ব নেই। বিশ্ববিদ্যালয়ের যে কোনো পরিস্থিতি নিরুপনের জন্য প্রক্টরিয়াল বডি আছে, ভিসি আছে, সিনেট আছে, সিন্ডিকেট আছে। কিন্তু এগুলোকে বাইপাস করে প্রগতিশীলদের তত্ত্বাবধানে পরিবেশ পরিষদ গঠন করা হয় শুধুমাত্র জনপ্রিয় ইসলামী ছাত্র সংগঠনগুলোকে ক্যাম্পাসের বাইরে রাখার জন্য। কিন্তু বাস্তবে এ পরিবেশ পরিষদের নেতিবাচক প্রভাব কেবল এটুকুতেই সীমাবদ্ধ থাকেনি। নানা মহল ও দলকে ব্লক করা, ব্যান করা, বিভিন্ন ইস্যুতে ভেটো দেয়ার এ অপচর্চার কারণে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ৯০ এর পর প্রায় ২৮ বছর ডাকসু নির্বাচনই হতে পারেনি।

২০০১-২০০৬ মেয়াদে বিএনপি নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোট সরকারে জামায়াতে ইসলামীর দুইজন মন্ত্রী ছিলেন। এ সময় বিএনপি- জামায়াত জোট জাতীয় রাজনীতিতে এক মেরু গঠন করেছিল, যার বিপরীতে আওয়ামী লীগ ও তাদের মিত্ররা আরেকটি মেরু তৈরি করেছিল। তবে ২০০৬ সালের শেষ ভাগে রাজনৈতিক উত্তেজনা যখন চরমে পৌঁছায়, তখন হঠাৎ করে জামায়াতকে সম্পূর্ণ একঘরে করার চেষ্টা শুরু হয়। ওয়ান-ইলেভেনের ঠিক আগে আওয়ামী লীগ ও বিভিন্ন বামদল প্রকাশ্যে ঘোষণা দেয়Ñ “যেখানে জামায়াত থাকবে, সেখানে আমরা কোনো আয়োজন বা সংলাপে অংশ নেব না।” এর ফলশ্রুতিতে বঙ্গভবনসহ সরকার-নিয়ন্ত্রিত এবং রাষ্ট্রীয় আয়োজনে জামায়াতকে বাদ দেয়া শুরু হয়। এ অবস্থানটি হঠাৎ হলেও এর পেছনে মূলত দুইটি উদ্দেশ্য ছিলÑ জামায়াতকে রাজনৈতিক বৈধতা থেকে বঞ্চিত করা এবং জাতীয় সংলাপ বা সমঝোতার প্রক্রিয়ায় তাদের প্রভাব কমিয়ে আনা।

সে সময়ের কিছু স্মৃতি আমার ব্যক্তিগতভাবেও আছে। আমার বাবা চারদলীয় সরকারের একজন মন্ত্রী ছিলেন। স্বাভাবিকভাবেই তিনি সরকারী সকল আয়োজনে অবলীলায় গিয়েছেন। চারদলীয় জোটেও তার ভূমিকা ছিল ঐতিহাসিক। এমনকী ইতোপূর্বে আওয়ামী লীগ যখন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে আন্দোলন করেছিল তখনও তিনি ও মাওলানা নিজামী অসংখ্যবার আওয়ামী নেতাদের সাথে লিয়াজোঁ কমিটির বৈঠকে অংশ নিয়েছেন। কিন্তু হুট করেই তারা যেন রাজনীতির মাঠে অপাংক্তেয় হয়ে গেলেন। তাদেরকে বয়য়কট করার সিদ্ধান্ত ছিল আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোটের একটি কূটকৌশল। তারা জানতেন, যদি জামায়াতের নেতারা সংলাপে থাকেন তাহলে এটি সফলও হয়ে যেতে পারে। আর যদি সংলাপ হয়ে যায় এবং এর পরপরই নির্বাচনও হয়ে যায় তাহলে আওয়ামী লীগের সে নির্বাচনে জয় পাওয়া কঠিন হবে। এ কারণেই তারা জোটের অন্যতম নিয়ামক শক্তি জামায়াতে ইসলামীকে সংলাপের বাইরে রেখে কেবল বিএনপি-আওয়ামী লীগের মহাসচিব-সাধারণ সম্পাদক পর্যায়ের প্রস্তাব দেয়।

সে মোতাবেক বিএনপি ও আওয়ামী লীগের মহাসচিব পর্যায়ে এক বৈঠক হয়, যেখানে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়Ñ যেকোনো আলোচনায় জামায়াতকে না রাখার জন্য দু’দলই ব্যবস্থা নেবে। বৈঠকে অন্য কোনো শরিক দলকে ডাকা হয়নি, যা এ বোঝাপড়াকে মূলত দু’বড় দলের কৌশলগত চুক্তি হিসেবে প্রমাণ করে। তৎকালীন প্রেক্ষাপটে এটি ছিল বিরল ঘটনাÑপ্রধান দুই প্রতিদ্বন্দ্বী দলের মধ্যে একটি ন্যূনতম কৌশলগত সমঝোতা। কিন্তু ইতিহাস সাক্ষ্য দেয় যে, জামায়াতকে একঘরে করার এ সমন্বিত প্রচেষ্টা প্রত্যাশিত ফল দেয়নি। উল্টো রাজনৈতিক সঙ্কট আরও তীব্র হয়ে ওঠে। রাষ্ট্রপতি-প্রধান উপদেষ্টা ফখরুদ্দীন আহমদ নেতৃত্বাধীন সেনা-সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার ২০০৭ সালের ১১ জানুয়ারি ক্ষমতা গ্রহণ করেÑ যা ইতিহাসে “ওয়ান-ইলেভেন” নামে পরিচিত। ওয়ান-ইলেভেন কেবল একটি ক্ষমতা পরিবর্তন ছিল না; এটি দেশের রাজনৈতিক ধারাকে সাময়িকভাবে স্থগিত করে দেয়। দলীয় রাজনীতিকে “পরিষ্কার” করার নামে রাজনৈতিক নেতাদের গ্রেফতার, দল ভাঙার চেষ্টা এবং সংস্কারের তত্ত্ব চালু হয়। এ প্রক্রিয়া কার্যত বিরাজনীতিকরণ এর দিকে দেশকে ঠেলে দেয়, যার দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব আজও রাজনীতিতে অনুভূত হয়।

জুলাই বিপ্লবের পর দেশে যে ‘নতুন সূচনা’র বার্তা দেওয়া হয়েছিল, সেখানে আশা ছিলÑ সবাই সাংবিধানিক অধিকার ভোগ করবে। ভিন্নমতকে দমন নয়, বরং আলোচনায় আনা হবে। ক্যাম্পাস হবে মুক্ত মত প্রকাশের ক্ষেত্র। কিন্তু বামপন্থীদের সাম্প্রতিক আচরণÑশিবির থাকার কারণে কাজ না করা, বৈঠক বর্জন করা, শিবির আছে এ যুক্তিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সাথে বৈঠক থেকেও ওয়াকআউট করাÑএটি মূলত অংশগ্রহণের ক্ষেত্র সংকুচিত করা এবং আদর্শগত একচেটিয়া নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার চেষ্টা। যদি এ প্রবণতা অব্যাহত থাকে, তাহলেÑমেরুকরণ বৃদ্ধি পাবে। একদল মনে করবে, রাষ্ট্র বা প্রশাসন তাদের বিরুদ্ধে পক্ষপাতদুষ্ট। সংঘাতের পুনর্জন্ম হবে। রাজনৈতিক সহিংসতার ঝুঁকি বাড়বে, বিশেষ করে ক্যাম্পাসে। জুলাই আন্দোলনে যে ঐক্য ও অন্তর্ভুক্তি প্রতিশ্রুত হয়েছিল, তা বাস্তবে ব্যর্থ হবে।

বাংলাদেশের ৫৪ বছরের ইতিহাসে আমাদের রাজনীতিতে কখনো গণতান্ত্রিক প্রত্যাশা পূরণে অগ্রগতি হয়েছে, কখনো বা রাজনৈতিক অচলাবস্থার কারণে দেশকে দীর্ঘমেয়াদী ক্ষতির মুখে ফেলা হয়েছে। বিভাজনের মূল কারণগুলো প্রায়শই পারস্পরিক আস্থা হ্রাস, ব্যক্তিগত স্বার্থের লড়াই, ক্ষমতার কেন্দ্রিক মনোভাব এবং রাজনৈতিক সংস্কৃতির অভাবের সঙ্গে জড়িত। দলগুলোর মধ্যে বিরোধ শুধুমাত্র ভোটকালীন বা নির্বাচনী মুহূর্তেই সীমাবদ্ধ থাকে না, বরং প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা, অর্থনীতি ও সামাজিক উন্নয়নেও গভীর প্রভাব ফেলে। এর ফলে সাধারণ মানুষ রাজনীতির প্রতি হতাশ ও বিমর্ষ হয়ে পড়ে।

রাজনৈতিক বিভাজন দেশের উন্নয়নের জন্য সবচেয়ে বড় বাধা। দীর্ঘমেয়াদে এটি সামাজিক সংহতি নষ্ট করে, অর্থনৈতিক প্রগতিকে বাধাগ্রস্ত করে এবং জাতীয় স্বার্থের চেয়ে দলীয় স্বার্থকে প্রাধান্য দেয়। মানুষের আস্থা হ্রাস পায়, নাগরিক চেতনা দুর্বল হয়, এবং তরুণ প্রজন্ম রাজনৈতিক পেশাকে নেতিবাচকভাবে দেখে। বাস্তবতা হলো, যখনই দেশ একীভূত হয়ে সামনে এগুনোর চেষ্টা করে, যখনই ক্যাম্পাসগুলোতে কিংবা রাজনীতির ময়দানে স্থিতিশীলতা ও সৃজনশীলতার চর্চা বৃদ্ধি পায় তখনই একদল মানুষ প্রগতিশীলতার নামে কেবলই বিভাজনের কৌশল অবলম্বন করে যা জাতি হিসেবে আমাদের জন্য দুর্ভাগ্যের কারণ হয়। জুলাই বিপ্লবে হাজারের বেশি মানুষ শহীদ হয়েছেন, ২০ হাজারের বেশি মানুষ আহত হয়ে নতুন এ বাংলাদেশ উপহার দিয়েছেন নতুন করে বিভাজনের দেয়াল তৈরির জন্য নয়।

Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *