Kalbela News | RSS Feed
রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ভূপাতিত হয়েছিল আজারবাইজান এয়ারলাইন্সের ফ্লাইট ৮২৪৩। মঙ্গলবার (১ জুলাই) আজারবাইজানের একটি সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত নতুন অডিও রেকর্ডিং এবং চিঠির ভিত্তিতে এ দাবি করা হচ্ছে।
২০২৪ সালের ২৫ ডিসেম্বর আজারবাইজান এয়ারলাইন্সের ফ্লাইট ৮২৪৩ দুর্ঘটনায় পড়ে। তখনো এর সঙ্গে রাশিয়ার সামরিক বাহিনী জড়িত ছিল বলে অভিযোগ ওঠে। তবে সেটি প্রমাণ করা সম্ভব হয়নি।
আজারবাইজানের সংবাদমাধ্যম মিনভাল দাবি করেছে, তারা একটি বেনামি চিঠি পেয়েছে। যাতে সাক্ষ্য, অডিও ক্লিপ এবং প্রযুক্তিগত বিবরণ রয়েছে। তৎকালীন ব্যবহৃত যোগাযোগ সরঞ্জামের প্রযুক্তিগত ত্রুটিও এতে ধরা পড়েছে।
মিনভালে প্রকাশিত চিঠিতে বলা হয়েছে, রাশিয়ান আকাশ প্রতিরক্ষা কর্মকর্তা ক্যাপ্টেন দিমিত্রি সের্গেইভিচ পালাদিচুক রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সরাসরি নির্দেশে কাজ করছিলেন। তিনি ক্ষেপণাস্ত্র হামলার অনুমোদন দিয়েছিলেন।
ক্যাপ্টেন পালাদিচুক ২৪ থেকে ২৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত গ্রোজনির কাছে কর্তব্যরত ছিলেন। ঘটনার দিন তার ইউনিটকে সম্পূর্ণ যুদ্ধ প্রস্তুতিতে নামতে নির্দেশ দেওয়া হয়।
চিঠিতে আরও বলা হয়েছে, দুর্বল মোবাইল রিসেপশন এবং কার্যকরী তারযুক্ত যোগাযোগের অভাবের কারণে সমন্বয় মোবাইল সংযোগের ওপর নির্ভরশীল ছিল। ওই দিন সম্ভাব্য লক্ষ্যবস্তু শনাক্ত করা হয় এবং রাডার ব্যবহার করে ট্র্যাক করা হয়। ঘন কুয়াশা অপটিক্যাল যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়ার পর পালাডিচুককে ফোনের মাধ্যমে বস্তুটি ধ্বংস করার নির্দেশ দিতে হয়েছিল। নির্দেশ পাওয়ার পর তার বাহিনী দুটি ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে।
চিঠি অনুসারে, উভয় ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণের সময় লক্ষ্যবস্তুর স্থানাঙ্ক, গতি এবং দিকনির্দেশনা লিখিত ব্যাখ্যায় বিস্তারিতভাবে প্রদান করা হয়েছিল। প্রথম ক্ষেপণাস্ত্রটি লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়েছিল বলে জানা গেছে। দ্বিতীয়টি বিমানটিকে আঘাত করার জন্য যথেষ্ট কাছে বিস্ফোরিত হয়। তবুও বিমানটি তাৎক্ষণিক ভূপাতিত হয়নি।
মিনভাল আরও দাবি করেছে, তারা তিনটি ভয়েস বার্তা পর্যালোচনা করেছেন। অপারেশনাল অর্ডার দেওয়া হয়েছিল বলে কণ্ঠস্বরগুলো নিশ্চিত করে। দুটি ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করা হয়েছিল এবং বিস্ফোরণ বিমানটিতে আঘাত করেছিল।
আউটলেটটি একটি অডিও রেকর্ডিং প্রকাশ করেছে। যেখানে রাশিয়ান ভাষায় একটি কণ্ঠস্বর সামরিক নির্দেশনা দেয়। ওই ভয়েসে ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপের নির্দেশ দেওয়া হয়, তারপরে একটি গুলি চালানোর শব্দ শোনা গেছে বলে মনে হয়। একই কণ্ঠস্বর ‘লক্ষ্য মিস হয়েছে’ বলে চিৎকার করে এবং আরেকটি ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপের নির্দেশ দেয়।
ট্র্যাজেডির দিন আজারবাইজানি সরকারি সূত্র ইউরোনিউজকে জানিয়েছে, রাশিয়ান ভূমি থেকে আকাশে ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করা হয়েছিল। ক্ষেপণাস্ত্রটি মাঝ আকাশে বিমানের পাশে বিস্ফোরিত হয়। ফলে ওড়া অক্ষম করে তোলে।
একই সূত্র জানিয়েছে, পাইলটদের জরুরি অবতরণের অনুরোধ সত্ত্বেও ক্ষতিগ্রস্ত বিমানটিকে রাশিয়ার কোনো বিমানবন্দরে অবতরণ করতে দেওয়া হয়নি। এটিকে কাস্পিয়ান সাগর পেরিয়ে কাজাখস্তানের আকতাউয়ের দিকে উড়তে নির্দেশ দেওয়া হয়। সেখানে জরুরি অবতরণের চেষ্টা করার সময় বিমানটি বিধ্বস্ত হয়। ওই ঘটনায় ৩৮ জন নিহত এবং ২৯ জন আহত হন।
ইউরোনিউজ স্বাধীনভাবে আজারবাইজানের সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে দাবির সত্যতা যাচাই করতে পারেনি।