Bangla Tribune
ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চল থেকে দুজন চীনা যোদ্ধাকে আটক করেছে দেশটির সেনাবাহিনী। মঙ্গলবার (৮ এপ্রিল) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে এই দাবি করেছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।
জেলেনস্কির অভিযোগ, রাশিয়ার হয়ে আরও অনেক চীনা নাগরিক ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছেন। এতে ইউক্রেনে শান্তি প্রতিষ্ঠার প্রক্রিয়া আরও জটিল আকার ধারণ করছে।
রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন যুদ্ধের অবসান চান না বলে দাবি করেছেন জেলেনস্কি। তিনি বলেন, ইউরোপের যুদ্ধে চীনসহ অন্যান্য দেশের প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ অংশগ্রহণে একটা বিষয় পরিষ্কার, যুদ্ধ বন্ধ করতে পুতিনের মধ্যে আন্তরিক কোনও ইচ্ছাই নেই।
আটক চীনা ব্যক্তিরা সরাসরি বেইজিংয়ের আদেশে কাজ করছিল নাকি ব্যক্তিগত উদ্যোগে রাশিয়ার হয়ে যুদ্ধ করছিল, জেলেনস্কির বক্তব্যে সে বিষয়ে কোনও তথ্য পাওয়া যায়নি।
ইউক্রেনের কোনও দাবির সত্যতা স্বাধীনভাবে যাচাই করতে সমর্থ হয়নি রয়টার্স। এছাড়া, কিয়েভের অভিযোগের জবাবে চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে তাৎক্ষণিক কোনও প্রতিক্রিয়া প্রকাশ করা হয়নি।
উল্লেখ্য, বেইজিং ও মস্কোর মধ্যে ঘনিষ্ঠ কূটনৈতিক সম্পর্ক রয়েছে। যুদ্ধ শুরু হওয়ার ঠিক আগে রাশিয়ার সঙ্গে ‘সীমাহীন কৌশলগত অংশীদারত্ব’ ঘোষণা করেছিল চীন। বিভিন্ন মহল থেকে অভিযোগ উত্থাপন করা হলেও। ইউক্রেনে রাশিয়ার পূর্ণ সামরিক অভিযানে চীনের প্রত্যক্ষ সম্পৃক্ততার কোনও প্রমাণ পাওয়া যায়নি। বরং, ইউক্রেনের যুদ্ধ মীমাংসায় ভূমিকা রাখতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে বেইজিং।
ভিন্ন এক বিবৃতিতে ইউক্রেনীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্দ্রিই সিবিহা জানিয়েছেন, ঘটনার প্রতিবাদ করতে এবং ব্যাখ্যা জানতে কিয়েভে নিযুক্ত চীনা প্রতিনিধিকে তলব করা হয়েছে।
এদিকে, আটক চীনা নাগরিকরা ভাড়াটে সৈনিক বলে উল্লেখ করেছেন ইউক্রেনের জাতীয় নিরাপত্তা এবং প্রতিরক্ষা পরিষদের সদস্য অ্যান্দ্রিই কোভালেঙ্কো। অবশ্য, তার দাবির স্বপক্ষে কোনও ব্যাখ্যা বা যুক্তি প্রদান করেননি তিনি।
এর আগেও রাশিয়ার বিরুদ্ধে অন্য দেশের সহায়তায় ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার অভিযোগ এসেছে। যুদ্ধের শুরু থেকেই ইরানি ড্রোন এবং উত্তর কোরিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র ও গোলাবারুদ ব্যবহার করে আসছে রুশ সেনাবাহিনী। এমনকি, ইউক্রেনের দখলকৃত কুরস্ক অঞ্চল মুক্ত করতে সেখানে পিয়ংইয়ংয়ের সেনারা রুশ বাহিনীর সঙ্গে যুদ্ধ করছে বলেও একাধিক সূত্রে দাবি করা হয়েছে।
তবে অন্যান্য ঘটনার সঙ্গে এবার বড় একটা পার্থক্য রয়েছে বলে মনে করেন জেলেনস্কি। তিনি বলেছেন, উত্তর কোরিয়ার সেনারা তো কুরস্কে আমাদের বিরুদ্ধে সম্মুখ সমরে আছে। কিন্তু আটক চীনারা ইউক্রেনের সীমানার অভ্যন্তরে আক্রমণ করেছিল।
চীনা যোদ্ধার বিষয়ে ইউক্রেনের অভিযোগ নিয়ে এখনও ব্যাখ্যা দেয়নি ক্রেমলিন। এছাড়া, পিয়ংইয়ংয়ের সেনা ব্যবহারের বিষয়েও স্পষ্টভাবে তাদের পক্ষ থেকে কখনও কিছু স্বীকার করা হয়নি।
ইউক্রেন থেকে চীনা যোদ্ধা আটকের ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ট্যামি ব্রুস। তবে ওয়াশিংটন এসব অভিযোগ যাচাই করেছে কিনা, সে বিষয়ে তিনি কিছু উল্লেখ করেননি।