রুশ অস্ত্র নির্মাতার সঙ্গে চীনের ড্রোন বিশেষজ্ঞদের সহযোগিতার নতুন তথ্য

Google Alert – সামরিক

চীনা ড্রোন বিশেষজ্ঞরা রাশিয়ায় গিয়ে পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার আওতায় থাকা একটি রাষ্ট্রায়ত্ত অস্ত্র নির্মাতা প্রতিষ্ঠানে সামরিক ড্রোন প্রযুক্তি উন্নয়নে কাজ করেছেন বলে নতুন তথ্য সামনে এসেছে।

দুই ইউরোপীয় নিরাপত্তা কর্মকর্তা এ তথ্য জানিয়েছেন এবং এ সংক্রান্ত কিছু নথিপত্র বার্তা সংস্থা রয়টার্সের হাতে এসেছে।

এসব তথ্যানুযায়ী, গত বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিক থেকে এ পর্যন্ত চীনা বিশেষজ্ঞরা অন্তত ছয়বার রাশিয়ার রাষ্ট্রয়ত্ত্ব অস্ত্র নির্মাতা প্রতিষ্ঠান “আইইএমজেড কুপল” পরিদর্শনে গেছেন।

সেই সময়ে রুশ মধ্যস্থাকারীর মাধ্যমে কুপল চীনের তৈরি আক্রমণাত্মক ও নজরদারি ড্রোনের চালানও পেয়েছিল বলে বেরিয়ে এসেছে তথ্যে।

গত বছরের সেপ্টেম্বরে রয়টার্স জানিয়েছিল, চীনে স্থানীয় বিশেষজ্ঞদের সহায়তায় কুপল নতুন গারপিয়া-৩ ড্রোন তৈরি করেছে।

এবার রাশিয়ার ভেতরে সামরিক ড্রোনের পরীক্ষামূলক ও প্রযুক্তিগত কাজে চীনা বিশেষজ্ঞদের নিবিড়ভাবে জড়িত থাকার সুনির্দিষ্ট তথ্য প্রথমবারের মতো প্রকাশ করল সংবাদমাধ্যমটি।

গোপনীয়তার কারণে নাম প্রকাশ না করার শর্তে দুই কর্মকর্তা বলেন, এই সহযোগিতা প্রমাণ করে যে কুপল ও চীনা কোম্পানিগুলোর মধ্যে ড্রোন উন্নয়নে সম্পর্ক গভীর হচ্ছে। ড্রোন এখন ইউক্রেইনে রাশিয়ার যুদ্ধে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রমাণিত হয়েছে।

চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় অবশ্য জানিয়েছে, তারা এমন কোনও সহযোগিতার বিষয়ে অবগত নয়। এক বিবৃতিতে তারা বলেছে, ইউক্রেইন সংকটে চীন সবসময় নিরপেক্ষ ও ন্যায্য অবস্থান নিয়েছে, কখনও কোনও পক্ষকে প্রাণঘাতী অস্ত্র দেয়নি এবং ড্রোনসহ দ্বৈত ব্যবহারযোগ্য পণ্যের রপ্তানিতে কঠোর নিয়ন্ত্রণ বজায় রেখেছে।

রাশিয়ার ক্রেমলিন, প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় ও আইইএমজেড কুপল এ বিষয়ে কোনও মন্তব্য করেনি।

রয়টার্সের হাতে আসা ব্যবসায়িক চালান ও ব্যাংক বিবরণীতে দেখা গেছে, কুপল গত বছর চীনের ড্রোন নির্মাতা সিচুয়ান এইই কোম্পানির তৈরি এক ডজনেরও বেশি ‘ওয়ান-ওয়ে’ (একমুখী) আক্রমণাত্মক ড্রোন পেয়েছিল।

ড্রোনগুলো সরবরাহ করেছিল রাশিয়ার প্রতিরক্ষা ক্রয়কারী প্রতিষ্ঠান টিএসকে ভেক্টর, যা যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের নিষেধাজ্ঞার আওতায় রয়েছে। এ বিষয়ে টিএসকে ভেক্টর ও সিচুয়ান এইই কোনও মন্তব্য করেনি।

চীনা কোম্পানিগুলো রুশ অস্ত্র নির্মাতাদের অস্ত্র সরবরাহ করছে বলে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় দেশগুলোর সরকার বারবার উদ্বেগ জানিয়ে এসেছে এবং কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের ওপর ইতোমধ্যেই নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে।

গত জুলাইয়ে রয়টার্স জানায়, কুপল চীনা যন্ত্রাংশ, বিশেষত ইঞ্জিন ব্যবহার করে হাজার হাজার গারপিয়া ‘ওয়ান-ওয়ে’ হামলাকারী ড্রোন তৈরি করছে।

ইরানের শাহেদ ড্রোনের আদলে বানানো এই গারপিয়া কয়েকশ মাইল উড়ে পূর্বনির্ধারিত লক্ষ্যে গিয়ে আছড়ে পড়ে বিস্ফোরিত হতে পারে। কিইভ বলেছে, প্রতি মাসে প্রায় ৫০০ গারপিয়া ইউক্রেইনে হামলা চালাতে ব্যবহার করা হচ্ছে।

দুই ইউরোপীয় কর্মকর্তা বলেছেন, রাশিয়ায় স্বল্প পরিসরে চীনের আক্রমণাত্মক ড্রোনের চালান ও চীনের বিশেষজ্ঞদের রাশিয়ায় যাওয়া থেকে ইঙ্গিত মেলে যে, কুপল নতুন মডেলের ড্রোন উৎপাদন বাড়াতে আগ্রহী।

তবে চীনের বিশেষজ্ঞরা রাশিয়ায় ঠিক কী ধরনের কাজ করেছেন বা তাদের ড্রোন পাঠানোর কারণ কী ছিল—তা নিরপেক্ষভাবে যাচাই করতে পারেনি রয়টার্স।

Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *