Bangla Tribune
সিলেটের পাথর কোয়ারি ও পর্যটনকেন্দ্র থেকে পাথর উত্তোলন ঠেকাতে পাঁচটি সিদ্ধান্ত নিয়েছে জেলা প্রশাসন। এর মধ্যে আছে তল্লাশিচৌকি স্থাপনের পাশাপাশি পাথর লুটে জড়িত ব্যক্তিদের শনাক্ত করে গ্রেফতারের সিদ্ধান্ত। পাশাপাশি লুট হওয়া পাথর উদ্ধার করে আগের অবস্থানে ফিরিয়ে নেওয়া হবে।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শের মাহবুব মুরাদের সভাপতিত্বে তার কার্যালয়ে বুধবার সন্ধ্যা সোয়া ৭টা থেকে রাত পৌনে ৯টা পর্যন্ত বৈঠক চলে। এতে উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় প্রশাসন, সেনাবাহিনী, পুলিশ, র্যাব, বিজিবিসহ বিভিন্ন সরকারি সংস্থার কর্মকর্তারা।
বৈঠক থেকে সর্বসম্মতিতে পাঁচটি সিদ্ধান্ত হয়। সেগুলো হলো, জাফলং ইসিএ এলাকা ও সাদাপাথর এলাকায় ২৪ ঘণ্টা যৌথ বাহিনী দায়িত্ব পালন করবে; গোয়াইনঘাট ও কোম্পানীগঞ্জ উপজেলায় পুলিশের তল্লাশিচৌকিতে যৌথ বাহিনী সার্বক্ষণিক দায়িত্ব পালন করবে; পাথর ভাঙার অবৈধ যন্ত্রের বিদ্যুৎ-বিচ্ছিন্নসহ বন্ধ করার জন্য প্রশাসনের অভিযান চলবে; পাথর চুরির সঙ্গে জড়িত সবাইকে চিহ্নিত করে গ্রেফতার ও আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে; চুরি হওয়া পাথর উদ্ধার করে আগের অবস্থানে ফিরিয়ে নেওয়া হবে।
সিলেটের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শের মাহবুব মুরাদ বলেন, পাথর লুটপাট ঠেকাতে নিয়মিত অভিযান চালাচ্ছি আমরা। এরপরও পাথর লুট হয়েছে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে বৈঠকে কয়েকটি সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এসব সিদ্ধান্ত এখন থেকেই কার্যকর করা হবে।
এর আগে ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে কোয়ারি থেকে পাথর ও বালু উত্তোলন বন্ধে নির্দেশনা দেয় সরকার। স্থানীয় সূত্র বলছে, এরপর থেকে স্থানীয় কিছু আওয়ামী লীগ নেতার পৃষ্ঠপোষকতায় রাতের আঁধারে অবৈধভাবে পাথর ও বালু উত্তোলন চলতো। গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর সিলেটের সব কটি কোয়ারির নিয়ন্ত্রণ নেন বিএনপি ও এর সহযোগী সংগঠনের নেতারা। তাঁদের পৃষ্ঠপোষকতায় কয়েক হাজার পাথরশ্রমিক প্রকাশ্যে পাথর উত্তোলন শুরু করে। অবাধে লুটপাটের কারণে কোম্পানীগঞ্জের শাহ আরেফিন টিলা, ভোলাগঞ্জ পাথর কোয়ারি, সংরক্ষিত বাঙ্কার এলাকা এবং গোয়াইনঘাটের জাফলং এলাকা অনেকটাই পাথরশূন্য হয়ে পড়ে। সর্বশেষ গত চার মাস ধরে সাদা পাথর এলাকায় পাথর উত্তোলন শুরু হয়। গত এক সপ্তাহের লুটপাটে সাদাপাথর এলাকা প্রায় পাথরশূন্য হয়।