শরীরে গুলি নিয়েই অসহ্য যন্ত্রণায় বেঁচে আছেন সালমান

Google Alert – সশস্ত্র

রাজশাহীতে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সম্মুখযোদ্ধা মোহাম্মদ সালমান। ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের ক্ষমতাচ্যুতির ঠিক আগ মুহূর্তে নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা ছাত্র-জনতার শান্তিপূর্ণ মিছিলে নির্বিচারে গুলি চালায়। এ সময় রাজশাহীর বঙ্গবন্ধু কলেজের দর্শন বিভাগের প্রথমবর্ষের শিক্ষার্থী সালমান গুলিবিদ্ধ হন। শরীরে গুলি নিয়েই গত এক বছর অসহ্য যন্ত্রণায় বেঁচে আছেন তিনি। শরীর থেকে গুলি অপসারণের জন্য চিকিৎসকরা বিদেশে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। সালমান ইতোমধ্যে সহযোগিতার জন্য জুলাই ফাউন্ডেশনে আবেদন করেছেন।

মহানগরীর উপকণ্ঠ বসরী এলাকার মোহাম্মদ রবির ছেলে সালমান। বৈষম্যবিরোধী ছাত্রদের পক্ষে সালমান সেদিন মহানগরীর আলুপট্টিতে আওয়ামী লীগের সশস্ত্র নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে জীবনবাজি রেখে প্রাণপণ লড়েছিলেন। হঠাৎ একটি গুলি এসে তার পেটের বাম দিকে ঢুকে খাদ্যনালি ফুটো করে দুই কিডনির মাঝ বরাবর মেরুদণ্ডের ভেতরে ঢুকে যায়।

পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হলে আন্দোলনের সহযোদ্ধারা সালমানকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে ভর্তি করেন। সেখানে সালমানের অস্ত্রোপচার করা হয়। অস্ত্রোপচারে খাদ্যনালির ফুটো বন্ধ করা গেলেও গুলিতে হাত দিতে পারেননি চিকিৎসকরা। খুবই ঝুঁকিপূর্ণ স্থানে গুলিটি আটকে থাকায় এরপর আরেক দফা অস্ত্রোপচার করেও তা বের করা সম্ভব হয়নি।

এ অবস্থায় গুলি পেটে নিয়েই চিকিৎসা শেষে বাড়িতে আসেন সালমান। রামেক হাসপাতালের চিকিৎসকরা সেসময় বলেন, দুই কিডনির মাঝখানে মেরুদণ্ডে আটকে আছে একটি গুলি। দেশে এ গুলি বের করার সুযোগ নেই। গুলিটি বের করতে গেলে নার্ভ ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে সারা জীবনের জন্য পঙ্গু, এমনকি মৃত্যুও হতে পারে। তবে বিদেশে উন্নত চিকিৎসায় বের করা যেতে পারে।

সালমান বলেন, ‘চিকিৎসকরা আমার বাঁচার আশা ছেড়ে দিয়েছিলেন। কারণ গুলিতে আমার খাদ্যনালি বেশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। দীর্ঘ সময় অস্ত্রোপচার করে তা ঠিক করা সম্ভব হয়েছে। তবে এখনো অসহ্য যন্ত্রণা। গুলিটি স্পাইনাল কর্ডে বিপজ্জনক এক জায়গায় আছে। যেখানে গুলিটি আছে, তার দুই পাশের খুবই কাছাকাছি দুটি কিডনি। নিচে মূত্রথলি।’

চিকিৎসকদের উদ্ধৃত করে সালমান বলেন, ‘অপারেশন করে গুলি বের করতে গেলে আমার মৃত্যু বা সারা জীবনের জন্য পঙ্গু হওয়ার শঙ্কা রয়েছে। এ কারণে আমাদের দেশে এটা সম্ভব নয়। তবে দেশের বাইরে উন্নত চিকিৎসা করা গেলে হয়তো বের করা যেতেও পারে। সর্বশেষ আমি ঢাকায় বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে এক মাস চিকিৎসা নিয়েছি। আমার জন্য সেখানে মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়। বোর্ডের সদস্যরা আমাকে দেশের বাইরে দ্রুত চিকিৎসা নেওয়ার পরামর্শ দেন। এজন্য আমি জুলাই ফাউন্ডেশনে সহযোগিতার জন্য আবেদন করেছি।’

তিনি বলেন, বর্তমান সরকারের কাছে আমার একটাই চাওয়া, দেশের বাইরে নিয়ে হলেও যেন শরীর থেকে গুলিটি বের করে দেওয়া হয়। আমি যেন স্বাভাবিক জীবনে আবারও ফিরতে পারি। আমরা স্বাধীনতা চেয়েছিলাম, পেয়েছি। এখন দেশকে সঠিক পথে এগিয়ে নিতে হবে। জুলাই চেতনাকে ধ্বংস করতে ইতোমধ্যে একটি মহল দেশকে অস্থিতিশীল করতে চাইছে। সরকারের উচিত তাদের কঠোর হাতে দমন করা।’

Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *