‘শাপলার চেতনা আগামী বাংলাদেশের মাইলফলক’

Google Alert – বাংলাদেশ

শাপলা চত্বরের রক্তের স্রোতেই চব্বিশের চেতনার ধারা শুরু হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের আমীর ও শাপলা স্মৃতি সংসদের সভাপতি মাওলানা মামুনুল হক। তিনি বলেন, জুলাই ঘোষণাপত্রে শাপলার কথা আসেনি, এই দায় যেমন ড. ইউনূসকে নিতে হবে, তেমনি এ দায় পুরো অন্তর্বর্তী সরকারকেও নিতে হবে।

গত শনিবার রাজধানীর আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে শাপলা স্মৃতি সংসদের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত ‘শাপলা কেন্দ্রীক বিভিন্ন কাজে অংশীজনের সম্মাননা ও সম্মিলনী ২০২৫ অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি। মামুনুল হক বলেন, শাপলার চেতনাকে আগামীর বাংলাদেশের মাইলফলক হিসাবে প্রতিষ্ঠা করার জন্যই শাপলা স্মৃতি সংসদ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। শাপলার শহীদ পরিবারের অভিভাবকত্ব গ্রহণের জন্য গঠিত হয়েছে শাপলা শহীদ গার্ডিয়ান্স ফোরাম। আগামীর বাংলাদেশে জুলাইকে মূল্যায়ন করা মানেই শাপলাকেও মূল্যায়ন করা বলে উল্লেখ করে হেফাজতের এই নেতা। উদ্বোধনী বক্তব্য রাখেন শাপলা স্মৃতি সংসদের নির্বাহী সভাপতি মাওলানা আবুল হাসানাত জালালী। অনুষ্ঠান যৌথভাবে পরিচালনা করেন সাধারণ সম্পাদক কামাল উদ্দীন, মাওলানা আল আবিদ শাকির ও মাওলানা মাহমুদুল হাসান সাগর, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের প্রচার সম্পাদক মাওলানা হাসান জুনাইদ।

আলোচকরা বলেন, শাপলা চত্বরে সংঘটিত গণহত্যা বাংলাদেশের ইতিহাসে এক কলঙ্কজনক অধ্যায়। এই ইতিহাস গোপন করার অপচেষ্টা বিগত এক যুগ ধরে চললেও শাপলার রক্ত শহীদদের ত্যাগকে চিরজীবন্ত করে রেখেছে। শাপলা স্মৃতি সংসদ আগামী প্রজন্মের কাছে এই সত্য তুলে ধরতে অটল থাকবে।

হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের নায়েবে আমীর মাওলানা আব্দুল হামিদ বলেন, শাপলার শহীদরা আমাদের ঈমানি শক্তির প্রতীক। তাদের আত্মত্যাগকে ধারণ করেই ইসলামী আন্দোলন এগিয়ে যাবে।

জামায়াতে ইসলাম বাংলাদেশের জয়েন্ট সেক্রেটারি আব্দুল হালিম বলেন, বিগত ১৫ বছরে বাংলাদেশের আলেম সমাজকে ভিন্নভাবে চিত্রিত করা হয়েছে। এখন তা পাল্টে গেছে।

এনসিপির সিনিয়র যুগ্ম মূখ্য সমন্বয়ক আব্দুল হান্নান মাসউদ বলেন, শাপলার ঘটনা বাংলাদেশের স্বাধীনতার সার্বভৌমত্ব টিকিয়ে রাখার ঘটনা। ৭২-এর পর থেকে দেশের চালক পরিবর্তন হয়েছে কিন্তু দেশের কোনো পরিবর্তন হয়নি। সংবিধান পরিবর্তন না হলে আবারো শাপলা ফিরে আসবে, আবারো ১৮ ফিরে আসবে, আবারো ২৪ ফিরে আসবে।

বিএনপির সমাজকল্যাণ সম্পাদক কামরুজ্জামান রতন বলেন, ইসলামের তাহযিব ও তামাদ্দুন রক্ষায় আপনাদের বজ্রকণ্ঠ যতদিন থাকবে, ততদিন এদেশে ইনসাফ থাকবে। ভিপি নূরের রক্ত বৃথা গেলে আগামীতে দাড়ি-টুপি ওয়ালাদের জন্যও অপমান অপেক্ষা করছে।

খেলাফত মজলিসের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা আতাউল্লাহ আমিন বলেন, শাপলা শহীদদের স্মৃতি রক্ষায় প্রজন্মকে ইতিহাস সচেতন করা এখন জরুরি দায়িত্ব।

সম্মাননা ও ক্রেস্ট প্রদানঃ অনুষ্ঠানে ২০১৩ সালের শাপলা গণহত্যার বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশন, হতাহতদের চিকিৎসা সেবা, আইনি সহায়তা ও মানবাধিকার নিয়ে সোচ্চার ভূমিকা রাখার জন্য প্রতিষ্ঠান ক্যাটাগরিতে বিশেষ সম্মাননা প্রদান করা হয় আলজাজিরা, দৈনিক আমার দেশ, দিগন্ত টেলিভিশন, ইসলামিক টেলিভিশন, ইসলামী ব্যাংক হাসপাতাল, মানবাধিকার সংগঠন অধিকার ও হেফাজতে ইসলাম ঢাকা মহানগরকে (২০১৩ সালের কমিটি)।

এছাড়াও গণমাধ্যম, আইন ও মানবাধিকার, চিকিৎসা সেবা, সাহিত্য-সংস্কৃতি এবং পুনর্বাসন সহায়তা খাতে অনন্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ একুশ জনকে ব্যক্তি পর্যায়ে সম্মাননা ও ক্রেস্ট প্রদান করা হয়। সংশ্লিষ্টদের হাতে ক্রেস্ট ও সম্মাননা তুলে দেন শাপলা চত্বরে শহীদ হওয়া মতিউর রহমান, শহীদ মুক্তার মিয়া ও শহীদ ইউনুছ আলীর গর্বিত পিতারা।

Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *