Google Alert – পার্বত্য চট্টগ্রাম
আসন্ন অর্থবছরের জাতীয় বাজেটকে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীবান্ধব এবং অন্তভুক্তিমূলক করার দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ আদিবাসী ইউনিয়ন।
সমতলের আদিবাসীদের জন্য উন্নয়ন বাজেট ১ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দের দাবি জানানোর পাশাপাশি পার্বত্য চট্টগ্রামের আদিবাসীদের জন্য বর্তমান ‘অপ্রতুল উন্নয়ন বরাদ্দ’ বাড়িয়ে যৌক্তিক করার দাবি জানিয়েছে সংগঠনটি।
সমতলের আদিবাসীদের জন্য পৃথক দপ্তর স্থাপন করারও দাবি জানায় আদিবাসী ইউনিয়ন।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, আদিবাসী জনগোষ্ঠীর জন্য উন্নয়ন বরাদ্দ বরাবরই অপ্রতুল, বিচ্ছিন্ন ও নীতিগত অনীহার মধ্যে প্রণীত। প্রকল্পগুলোর বেশিভাগই তাদের স্বতন্ত্র চাহিদা, সাংস্কৃতিক বাস্তবতা ও মানবাধিকার বিবেচনায় আনেনি। প্রকল্প বাস্তবায়নে আদিবাসীদের অংশগ্রহণ প্রায় অনুপস্থিত।
অধিকার সুরক্ষা, মাতৃভাষায় শিক্ষা, সামাজিক সুরক্ষা, স্বাস্থ্য, নারী-উদ্যোক্তা উন্নয়ন, পরিবেশ সংরক্ষণ এবং জুম চাষীদের রেশনিংসহ বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই আদিবাসী জনগোষ্ঠীর জন্য বরাদ্দ অপ্রতুল।
সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন আদিবাসী ইউনিয়নের সভাপতি রেবেকা সরেন, সাধারণ সম্পাদক শ্রীকান্ত মাহাতো, উপদেষ্টা দিবালোক সিংহ।
সংবাদ সম্মেলন থেকে তারা কিছু দাবিও তুলে ধরেন। দাবিগুলো হচ্ছে-
>> সমতলের আদিবাসীদের জন্য একটি পৃথক ভূমি কমিশন গঠন ও তার কার্যকারিতা নিশ্চিত করতে পাঁচ বছর মেয়াদি বাজেট।
>> সমতলের আদিবাসীদের বেদখল হওয়া জমি উদ্ধার এবং এর পুনর্বাসনের জন্য বাজেটে আলাদা বরাদ্দ।
>> সমতলের আদিবাসীদের প্রথাগত সামাজিক কাঠামো ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য রক্ষায় সুনিদিষ্ট বাজেট বরাদ্দ।
>> সমতলের আদিবাসীদের জন্য আলাদা ও সুর্নিদিষ্টভাবে চিহ্নিত বাজেট বরাদ্দ।
>> জাতীয় বাজেটে আদিবাসীদের জন্য পৃথক অনুচ্ছেদ যুক্ত এবং আদিবাসীদের জন্য বাজেট বরাদ্দ খাত সুনিদিষ্টভাবে চিহ্নিত করা। জাতীয় বাজেট বক্তৃতায় আদিবাসী বিষয়ক বিবরণী থাকা জরুরি।
>> সকল মন্ত্রণালয়, বিভাগ ও দপ্তরের বাজেটে আদিবাসীদের জন্য সুনির্দিষ্ট বরাদ্দ।
>> প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের বিশেষ এলাকার জন্য উন্নয়ন সহায়তা কর্মসূচিতে এক শ্রেণির অসাধু সরকারি কর্মচারী ও আদিবাসী সুবিধাভোগী শ্রেণির দরিদ্র আদিবাসীদের জন্য বরাদ্দ নিয়ে নিয়মিতভাবে লুটপাট করছে, তা অবিলম্বে কঠোর হাতে দমন করতে হবে।
>> আদিবাসী শিশুদের শিক্ষা থেকে শুরু করে উচ্চ শিক্ষা নিশ্চিতকরণে আদিবাসী শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষ শিক্ষা সহায়তা বাজেট বরাদ্দ রাখতে হবে। প্রত্যন্ত ও দুর্গম অঞ্চল থেকে শিক্ষাগ্রহণে আসা আদিবাসী শিক্ষার্থীদের বিশেষত নারীদের জন্য নিরাপদ ছাত্রাবাস তৈরির জন্য বাজেট বরাদ্দ রাখতে হবে।
>> আদিবাসী শিশুদের মাতৃভাষায় শিক্ষা গতিশীল করতে এবং প্রতিটি আদিবাসী অধ্যুষিত স্কুলে আদিবাসী শিক্ষক নিয়োগ ও শিক্ষা কর্মসূচি নিশ্চিত করতে জাতীয় বাজেটে পৃথক বরাদ্দ রাখতে হবে।
>> সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী ও কর্মসূচিতে আদিবাসী প্রান্তিক মানুষদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে বাজেট বরাদ্দ সুস্পষ্টভাবে চিহ্নিত করতে হবে এবং বরাদ্দ বাড়াতে হবে।
>> আদিবাসী তরুণদের জীবিকায়ন ও কর্মসংস্থানে বিশেষ কর্মসূচি গ্রহণ ও দক্ষতাবৃদ্ধি প্রশিক্ষণের জন্য বিশেষ বাজেট বরাদ্দ রাখতে হবে। ১০০ দিনের কাজ, ভিজিএফ, কাবিখাতে আদিবাসীদের অন্তর্ভুক্তসহ স্থায়ী রেশনিং ব্যবস্থা চালু করতে হবে।
>> সব আদিবাসীদের জন্য (সমতল ও পার্বত্য অঞ্চল) আদিবাসী জনগোষ্ঠির সুনিদিষ্ট, হালনাগাদ ও গোষ্ঠিভিত্তিক পরিসংখ্যান প্রস্তুতের জন্য বিশেষ আদিবাসী জনশুমারি পরিচালনার জন্য বাজেট বরাদ্দ থাকতে হবে।
>> পার্বত্য ও সমতল আদিবাসীদের জন্য ভিন্ন বরাদ্দ থাকতে হবে-খাতভিত্তিক ও উপখাতভিত্তিক লাইন- আইটেম সুনিদিষ্ট ও যুক্তিসঙ্গত বরাদ্দ দিতে হবে।