Google Alert – বাংলাদেশ
অনূর্ধ্ব-২০ নারী এশিয়ান কাপ বাছাই
বয়সভিত্তিক হোক আর জাতীয় দল, দুর্দান্ত ফর্মে রয়েছে বাংলাদেশের মেয়েরা। এশিয়ান কাপের মূল পর্বের টিকিট নিশ্চিত করে গত মাসে মিয়ানমারে ইতিহাস গড়েছে লাল সবুজের ফুটবল কন্যারা। এবার অনূর্ধ্ব-২০ নারী এশিয়ান কাপ বাছাইপর্বের ম্যাচে স্বাগতিক লাওসকে উড়িয়ে শুভ সূচনা করেছে বাংলাদেশ। গতকাল বুধবার ভিয়েনতিয়েনের নিও লাওস স্টেডিয়ামে সাগরিকার জোড়া গোলে লাওসকে ৩-১ গোলে হারায় বাংলাদেশ। লাওসে যাওয়ার আগে বাছাই পর্ব পেরিয়ে মূল পর্বে খেলার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছিলেন বাংলাদেশের ব্রিটিশ কোচ পিটার বাটলার। একই লক্ষ্যের কথা জানিয়েছিলেন অধিনায়ক আফঈদা খন্দকারও। লাওসের মাঠে স্বাগতিকদের হারিয়ে সেই মিশনের প্রথম ধাপে এগিয়ে গেলেন পিটার বাটলারের শিষ্যরা।
ম্যাচের শুরু থেকেই লাওসের মেয়েদের চাপে রেখে খেলতে থাকেন লাল সবুজের মেয়েরা। প্রথম ১৫ মিনিট স্বাগতিকদের সীমানায় মুহুর্মুহু আক্রমণ করেন- সাগরিকা, মুনকি আক্তারা, শান্তি মার্ডিরা। কিন্তু গোলের দেখা মিলছিল না সফরকারীদের শিবিরে। ১৫ মিনিটে গোলের ভালো সুযোগ নষ্ট করেন তৃষ্ণারানী। বাঁ দিক থেকে আক্রমনের সূত্রপাত করেন স্বপ্নারানী। তার আড়াআড়ি লো ক্রস ডানদিকে পেয়ে মুনকি আক্তার গোলমুখে ছোট পাসে বাড়ান তৃষ্ণাকে। তবে বলটা ঠিকঠাক নিয়ন্ত্রণে নিয়ে গোলের আনুষ্ঠানিকতা সাড়তে পারেননি তৃষ্ণা। তবে ৩৬ মিনিটে ঠিকই বাংলাশেকে এগিয়ে নেন সাগরিকা।
শান্তি মার্ডির কর্নার গোলমুখে আসলে তাতে হেড করে গোল আদায় করে নেন দেশের মাঠে অনূর্ধ্ব-২০ সাফজয়ী দলের হয়ে অসাধারণ খেলা ফরোয়ার্ড সাগরিকা (১-০)। মিনিট ছয়েক পর সিনহা জাহান শিখাকে গোল বঞ্চিত করে ক্রসবার। বক্সের অনেক বাইরে থেকে তার ডানপায়ের শট লাওস কিপার থংসামুদকে পরাস্ত করলেও ফিরে আসে পোস্টে লেগে। ৫৮ মিনিটে ব্যবধান দ্বিগুণ রেন মুনকি আক্তার। তৃষ্ণার থ্রু ধরে মার্কারকে বডি ডজে ছিটকে ফেলে লাওস কিপারকে একা পেয়ে যান মুনকি আক্তার। ঠাণ্ডা মাথায় প্লেসিং শটে বল জালে জড়ালে উল্লাসে মেতে ওঠেন বাংলাদেশ ফরোয়ার্ড (২-০)।
৭২ মিনিটে বাংলাদেশের গোল উৎসবে ফের বাধা হয়ে দাঁড়ায় ক্রসবার।
এবার স্বপ্না রানীর মাপা ক্রসে সাগরিকার হেড পোস্টে লেগে ফিরে আসে। ৮৭ মিনিটে লাওসের আনিনা কিও অন্সি বাংলাদেশ কিপার স্বর্ণার সঠিক পজিশনে না থাকার সুযোগে এক গোল পরিশোধ করেন (১-২)। যোগ করা সময়ের সাগরিকা দ্বিতীয় গোলের দেখা পান। ডান দিক থেকে বদলি উইঙ্গার উমেহ্লর আড়াআড়ি পাস বাড়ান তৃষ্ণাকে। নিজের শট না নিয়ে তিনি বল পাস দেন ফাঁকায় দাঁড়ানো সাগরিকাকে। গোলমুখ থেকে ডান পায়ে বল গোলকিপারের মাথার উপর দিয়ে বাতাসে ভাসিয়ে জালে জড়িয়ে জয় নিশ্চিত করেন সাগরিকা (৩-১)।
এটি লাওসের সঙ্গে বাংলাদেশের প্রথম সাক্ষাৎ ছিল এবং র্যাংকিংয়ে লাওস (১০৭) বাংলাদেশের (১২৮) চেয়ে এগিয়ে রয়েছে। মাসখানেক আগে প্রথমবারের মতো এশিয়ান কাপে খেলার যোগ্যতা অর্জন করে বাংলাদেশ জাতীয় নারী ফুটবল দল। ভিয়েতনামে ছোটরাও খেলছে একই লক্ষ্যে। প্রথম ম্যাচ জয় দিয়ে শুরু করায় সেই পথে খানিকটা এগিয়ে গেল বাংলাদেশ। দিনের অন্য ম্যাচে পূর্ব তিমুরকে ৯-০ গোলে উড়িয়ে দিয়েছে দক্ষিণ কোরিয়া। বাংলাদেশ এবং কোরিয়ার পয়েন্ট সমান তিন হলেও গোলব্যবধানে পিছিয়ে থাকায় আপাতত টেবিলের দুইয়ে বাংলাদেশ।
এএফসি অনূর্ধ্ব-২০ নারী টুর্নামেন্টের বাছাইয়ে বাংলাদেশের গ্রুপে অন্য দুই দল শক্তিশালী দক্ষিণ কোরিয়া ও অপেক্ষাকৃত দুর্বল তিমুরলেস্তে। দক্ষিণ কোরিয়া এই গ্রুপের হট ফেভারিট। বাংলাদেশের লক্ষ্য গ্রুপের রানার্সআপ নিশ্চিত করে বাকি আট গ্রুপের মধ্যে সেরা তিন রানার্স আপ হয়ে চূড়ান্ত পর্ব খেলা। ফলে স্বাগতিক লাওসের বিপক্ষে জয় খুবই প্রয়োজন ছিল বাংলাদেশের। বাংলাদেশের পরবর্তী ম্যাচ ৮ আগস্ট পূর্ব তিমুরের সঙ্গে। গতকাল পূর্ব তিমুরকে ৯-০ গোলে হারিয়েছে গ্রুপের শক্তিশালী দল দক্ষিণ কোরিয়া।