Google Alert – BD Army
সাবেক একজন সেনা কর্মকর্তার স্ত্রীকে ‘যৌন নিপীড়নের’ অভিযোগে চাকরিরত একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ‘উচ্চপদস্থ তদন্ত বোর্ড’ গঠন করার কথা জানিয়েছে সেনাবাহিনী।
শুক্রবার সেনাবাহিনীর ভেরিফায়েড ফেইসবুক পেইজে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
এর আগে বৃহস্পতিবার রাতে প্রবাসী সাংবাদিক ইলিয়াস হোসাইন তার ইউটিউব চ্যানেলে একটি ভিডিও প্রকাশ করেন। সেখানে সেনাবাহিনীর সাবেক একজন মেজরের স্ত্রী অভিযোগ করেন, তার স্বামীর অনুপস্থিতিতে সেনাবাহিনীর একজন ব্রিগেডিয়ার জেনারেল কোরবানি ঈদের রাতে তাকে ‘ধর্ষণ’ করেন।
পরে ওই নারী ওই ব্রিগেডিয়ারকে বিয়েও করেন। বিয়ের পর তিনি সন্তান সম্ভবা হলে তার পেটের বাচ্চা ‘নির্যাতনের কারণে’ নষ্ট হয়ে যায় বলে অভিযোগ করেন ওই নারী। কিছুদিন পর তাকে তালাক দেন ওই ব্রিগেডিয়ার।
সেই নারীর স্বামী মেজর পদমর্যাদায় চাকরিতে থাকাকালে একটি ডাকাতির মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে বর্তমানে কারাগারে রয়েছেন। ভিডিওতে তিনি বলছিলেন, সন্তান নিয়ে বিপাকে পড়ায় তিনি ব্রিগেডিয়ারকে বিয়ে করতে বাধ্য হন।
শুক্রবার দুপুরে সেনাবাহিনীর সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, “সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একজন জ্যেষ্ঠ সেনা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে নারী নির্যাতন সংক্রান্ত একটি অভিযোগ প্রচারিত হয়েছে, যেখানে অভিযোগকারী একজন প্রাক্তন সেনা কর্মকর্তার প্রাক্তন স্ত্রী। উল্লেখ্য যে, উক্ত প্রাক্তন সেনা কর্মকর্তা পূর্বে একটি চাঞ্চল্যকর অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হয়ে চাকরি থেকে বরখাস্ত হন এবং বর্তমানে তিনি জেলে কারাদণ্ড ভোগ করছেন।”
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, “উক্ত অভিযোগটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশিত হওয়ার পূর্বেই এ সম্পর্কে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী অবগত হয় এবং যথাযথ গুরুত্বের সাথে তদন্ত কার্যক্রম শুরু করে। তবে অভিযোগকারী নারীর সামাজিক মর্যাদা ও ঘটনাটির সংবেদনশীলতা বিবেচনা করে সেনাবাহিনী যথাযথ সাবধানতা অবলম্বন করে সেনা আইন অনুযায়ী প্রয়োজনীয় কার্যক্রম পরিচালনা করছিল।
“ইতিপূর্বেই, অভিযুক্ত ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে নিজ দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে এবং ঘটনাটির প্রকৃত সত্য উদঘাটনে একটি উচ্চপদস্থ তদন্ত বোর্ড গঠন করা হয়েছে। বর্তমানে উক্ত জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।”
সেনাবাহিনী বলছে, “সেনাবাহিনী থেকে কোনো সদস্য বরখাস্ত হলে নিয়ম অনুযায়ী তার চিকিৎসা, সরকারি বাসস্থান বা অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা পাওয়ার কথা নয়। তবে মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে ওই প্রাক্তন সেনা কর্মকর্তার সন্তানের এসএসসি পরীক্ষা বিবেচনা করে পরিবারটিকে সাময়িকভাবে সরকারি বাসস্থানে থাকার অনুমতি দেওয়া হয়েছিল।”
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, “বাংলাদেশ সেনাবাহিনী নৈতিক মূল্যবোধ ও শৃঙ্খলার প্রতি অঙ্গীকারাবদ্ধ এবং এ ধরনের নীতিভ্রষ্ট ও নীতি-বিবর্জিত কার্যক্রমকে কখনোই প্রশ্রয় দেয় না। সেনাবাহিনী তার সদস্যদের বিরুদ্ধে কৃত সকল অভিযোগ যথাযথ গুরুত্বের সাথে তদন্ত করে এবং অপরাধ প্রমাণ সাপেক্ষে আইন অনুযায়ী কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করে।”