সামরিক শক্তি ও মিত্রতায় এগিয়ে থাইল্যান্ড, কাম্বোডিয়ার পক্ষে কৌশলগত সুবিধা

Google Alert – সামরিক

থাইল্যান্ড ও কাম্বোডিয়ার সাম্প্রতিক সীমান্ত সংঘর্ষ তৃতীয় দিনে গড়িয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৫ জুলাই) শুরু হওয়া এই সংঘর্ষে এখন পর্যন্ত নিহত হয়েছে ৩২ জন। আহত আরো অনেকে। বাস্তুচ্যুত হয়েছে দেড় লাখেরও বেশি মানুষ। কম্বোডিয়া অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানালেও শনিবার পর্যন্ত গোলাগুলি অব্যাহত রয়েছে বলে জানিয়েছেন উভয় দেশের কর্মকর্তারা।

এই বিরোধের উৎপত্তি ফরাসি ঔপনিবেশিক আমলে আঁকা সীমান্ত রেখা নিয়ে। দীর্ঘদিন ধরে থাইল্যান্ড ও কাম্বোডিয়া উভয়ই সীমান্তবর্তী অঞ্চল নিজেদের বলে দাবি করে আসছে।

আর এর জেরে বারবার সংঘর্ষে জড়ায় সীমান্তবর্তী দুই দেশ। তবে তথ্য উপাত্ত বলছে, সামরিক, কূটনৈতিক ও অর্থনৈতিকভাবে অনেক এগিয়ে সামরিক সামর্থ্যে থাইল্যান্ড পরিষ্কারভাবে এগিয়ে। তাদের সেনাবাহিনী প্রায় ৩ লাখ ৬০ হাজার সদস্য নিয়ে গঠিত। যা কাম্বোডিয়ার সেনাবাহিনীর তিন গুণেরও বেশি। আধুনিক যুদ্ধাস্ত্র ও বিমানবাহিনী গঠনে যুক্তরাষ্ট্রের দীর্ঘমেয়াদি সহায়তা থাইল্যান্ডকে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার অন্যতম শক্তিশালী সামরিক শক্তিতে পরিণত করেছে।

থাইল্যান্ডের রয়েছে সুইডিশ তৈরি গ্রিপেন যুদ্ধবিমান, যুক্তরাষ্ট্রের এফ-১৬ ও এফ-৫ যুদ্ধবিমান। বিপরীতে, কাম্বোডিয়ার কার্যকর কোনো যুদ্ধবিমান নেই। মাঠ পর্যায়েও থাইল্যান্ডের আধুনিক ভিটি-৪ যুদ্ধ ট্যাংক, শত শত আর্টিলারি, কোবরা অ্যাটাক হেলিকপ্টার ও ব্ল্যাক হক ট্রান্সপোর্ট হেলিকপ্টারের উপস্থিতি কাম্বোডিয়ার তুলনায় বিপুল।

বিপরীতে কাম্বোডিয়ার রয়েছে পুরনো চীনা ও সোভিয়েত যুগের প্রায় ২০০টি ট্যাংক, সীমিতসংখ্যক আর্টিলারি এবং সোভিয়েত ও চীনের তৈরি পুরনো ট্রান্সপোর্ট হেলিকপ্টার।

থাইল্যান্ড বহু দশক ধরে যুক্তরাষ্ট্রের ঘনিষ্ঠ মিত্র। ১৯৫৪ সালের ম্যানিলা চুক্তি অনুযায়ী যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে তাদের আনুষ্ঠানিক প্রতিরক্ষা চুক্তি রয়েছে। কোবরা গোল্ড নামে বার্ষিক যৌথ সামরিক মহড়াও আয়োজন করে যুক্তরাষ্ট-থাইল্যান্ড। তবে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে থাইল্যান্ড সামরিক সহযোগিতায় চীনের সঙ্গেও সম্পর্ক জোরদার করেছে। সেইসঙ্গে ইসরায়েল, রাশিয়া, ইতালি, দক্ষিণ কোরিয়া, সুইডেনসহ বিভিন্ন দেশের সহায়তায় নিজস্ব অস্ত্রশিল্প গড়ে তুলেছে।

অন্যদিকে, কাম্বোডিয়ার প্রধান প্রতিরক্ষা সহযোগী এখন চীন। রিম নেভাল বেস-এ চীনের সামরিক ঘাঁটি গড়ে তোলা হয়েছে, যা ভবিষ্যতে চীনা বিমানবাহী রণতরী রাখার জন্যও প্রস্তুত বলে জানিয়েছেন আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকরা।

তবে বিশ্লেষকরা বলছেন, ভূখণ্ড ও বাস্তবতার বিবেচনায় কাম্বোডিয়ার কিছু কৌশলগত সুবিধা রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের প্যাসিফিক কমান্ডের সাবেক কর্মকর্তা কার্ল শুস্টার বলেন, বিরোধপূর্ণ এলাকায় পৌঁছাতে কাম্বোডিয়ার জন্য পথ সহজ। তারা মাইন পুঁতে থাই সেনাদের অগ্রসর হওয়া কঠিন করে তুলছে। তাই থাইল্যান্ডকে বিমান ও দীর্ঘপাল্লার অস্ত্রের ওপর নির্ভর করতে হবে।

সিএনএন অবলম্বনে

Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *