সাহায্যের অপেক্ষায় থাকা সাধারণ মানুষকে গুলি করছে ইসরায়েলি বাহিনী

Google Alert – সেনা

গাজা উপত্যকায় মানবিক সহায়তা নিতে আসা নিরস্ত্র ও ক্ষুধার্ত বেসামরিক জনগণের ওপর ইসরায়েলি বাহিনীর গোলাবর্ষণের অভিযোগ তুলে বিস্ফোরক সাক্ষ্য দিয়েছেন এক প্রাক্তন মার্কিন সেনা কর্মকর্তা। যুক্তরাষ্ট্রের স্পেশাল ফোর্সেস ‘গ্রিন বেরেট’-এর সাবেক লেফটেন্যান্ট কর্নেল অ্যান্থনি আগুইলার সম্প্রতি বিবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে জানান, তিনি এ ধরণের হামলা নিজ চোখে দেখেছেন এবং ওই ঘটনার পরপরই তিনি ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্র-সমর্থিত গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশন (GHF) থেকে পদত্যাগ করেছেন। খবর মিডল ইস্ট আই 

‘আমি যেসব যুদ্ধক্ষেত্রে কাজ করেছি, সেগুলোর কোনোটিতেই এমন নিষ্ঠুরতা দেখিনি,’ বলেন আগুইলার। ‘নিরস্ত্র, ক্ষুধার্ত সাধারণ মানুষের ওপর কামান, মর্টার এবং ট্যাংক শেল ছুড়ে হত্যা চালানো একেবারেই যুদ্ধাপরাধ।’

তিনি বলেন, ইসরায়েলি সেনা ও মার্কিন ঠিকাদাররা সরাসরি ফিলিস্তিনি বেসামরিক নাগরিকদের ওপর গুলি চালিয়েছে এবং জনতাকে ‘নিয়ন্ত্রণে’ রাখতে মর্টার শেল ব্যবহার করেছে। এক ঘটনায় তিনি নিজে প্রত্যক্ষ করেছেন, কীভাবে একটি মার্কাভা ট্যাংক সহায়তা কেন্দ্র থেকে সরে যাওয়া একটি গাড়ির ওপর গোলা ছুঁড়ে তা সম্পূর্ণ ধ্বংস করে দেয়।

আরও পড়ুন: ঢাবিতে অনুষ্ঠিত হলো ১১তম মানবাধিকার সম্মেলন

অ্যান্থনি আগুইলার গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশন পরিচালনার পদ্ধতি নিয়েও কড়া সমালোচনা করেন। তিনি বলেন, ‘এই প্রকল্প পরিচালনায় নিযুক্ত ব্যক্তিরা অপেশাদার, অনভিজ্ঞ ও কোনো ধরনের প্রশিক্ষণ ছাড়াই এত বড় পরিসরে কাজ শুরু করেছেন। এতে করে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ রূপ নিয়েছে।’

এদিকে গাজায় ক্রমবর্ধমান দুর্ভিক্ষ নিয়ে গভীর উদ্বেগ জানিয়েছে বিশ্বের ১০০টিরও বেশি মানবিক সংস্থা। তারা বলছে, মার্চ মাস থেকে ইসরায়েলের মানবিক সহায়তা বন্ধের সিদ্ধান্ত ও সীমিত সংখ্যক বিতরণ কেন্দ্র চালুর ফলে গাজা চরম খাদ্য সংকটে পড়েছে।

মিডল ইস্ট আই এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, বিশিষ্ট দুর্ভিক্ষ বিশেষজ্ঞ অ্যলেক্স ডি ওয়াল গাজায় ইসরায়েলি নীতিকে `গণহত্যামূলক অনাহার’ বলে অভিহিত করেছেন।

বাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যপণ্যের অভাব, পরিবারগুলোর দিনের পর দিন উপবাস, রাস্তায় ক্ষুধায় লুটিয়ে পড়া মানুষ—এসব এখন গাজার দৈনন্দিন চিত্র।

ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, গত মার্চ থেকে এখন পর্যন্ত অনাহারে মৃত্যু হয়েছে ১২৭ জন ফিলিস্তিনির, যার মধ্যে রয়েছে ৮৫ জনেরও বেশি শিশু।

এছাড়া, গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশন পরিচালিত বিতরণ কেন্দ্রে খাদ্য সহায়তা নিতে গিয়ে ইসরায়েলি বাহিনী ও মার্কিন নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে প্রাণ হারিয়েছে ১০০০-এর বেশি ফিলিস্তিনি।

এই পরিস্থিতিকে মানবাধিকার সংগঠনগুলো গণহত্যা, যুদ্ধাপরাধ ও আন্তর্জাতিক মানবিক আইনের চরম লঙ্ঘন হিসেবে অভিহিত করেছে এবং বিশ্ব সম্প্রদায়ের জরুরি হস্তক্ষেপ দাবি করেছে।

 

Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *