Google Alert – সেনাপ্রধান
বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সাবেক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আবদুল্লাহিল আমান আযমী সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিজের সেনাপ্রধান হওয়ার সম্ভাবনা নিয়ে ঘুরে বেড়ানো গুজবের বিরুদ্ধে কড়া ভাষায় প্রতিবাদ জানিয়েছেন। তিনি এসব খবরকে “শতভাগ বানোয়াট ও কল্পিত” বলে অভিহিত করেছেন এবং সেনাপ্রধান নিয়োগের ক্ষেত্রে যোগ্যতা, দক্ষতা ও জ্যেষ্ঠতার গুরুত্ব তুলে ধরেছেন।
শুক্রবার (৪ জুলাই) রাতে নিজের ফেসবুক পেজে দেওয়া এক পোস্টে আযমী বলেন, ২০০৫ সালে তাকে সেনাপ্রধান না বানিয়ে জেনারেল মঈনকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল—এমন প্রচলিত বক্তব্য একেবারে ভিত্তিহীন। কারণ, ওই সময়ে তিনি মাত্র ব্রিগেডিয়ার পদে পদোন্নতি পেয়েছিলেন এবং সেনাপ্রধান হওয়ার মতো পদমর্যাদা বা জ্যেষ্ঠতা তার ছিল না। তিনি বলেন, “আমাকে বাদ দিয়ে জেনারেল মঈনকে সেনাপ্রধান বানানোর কথা অনেকে বলেন। এটি শতভাগ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন তথ্য।”
ফেসবুক পোস্টে আযমী আরও বলেন, সেনাবাহিনীর শৃঙ্খলা, পদোন্নতি ও নেতৃত্ব নির্বাচনে জ্যেষ্ঠতার বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ২০০৫ সালে তিনি কর্নেল থেকে ব্রিগেডিয়ার পদে উন্নীত হন, যা ছিল তার সেনাজীবনের নিয়মিত অগ্রগতি। সেনাপ্রধান পদে বিবেচনায় আসার মতো অবস্থানে তখন তিনি ছিলেন না। তিনি জানান, সেনাপ্রধান হিসেবে নিযুক্ত হওয়া জেনারেল মঈনসহ তার পরবর্তী তিন সেনাপ্রধান—জেনারেল মুবিন, জেনারেল ইকবাল করীম ভূঁইয়া ও জেনারেল বেলাল সবাইই তার সিনিয়র ছিলেন।
আযমী তার পোস্টে আরও একটি গুজব খণ্ডন করেন। তিনি বলেন, অনেকেই মনে করেন ডিজিএফআইয়ের সাবেক প্রধান কারামুক্ত জেনারেল রেজ্জাকুল হায়দারকে বাদ দিয়ে মঈনকে সেনাপ্রধান বানানো হয়, অথচ তিনিও সে সময় ওই পদে বিবেচনার উপযোগী ছিলেন না। আযমী স্পষ্ট করে বলেন, “রেজ্জাকুল হায়দার ১৯৭৭ সালের বিএমএ ৫ম শর্ট কোর্স থেকে কমিশনপ্রাপ্ত। তারও সেনাপ্রধান হওয়ার সম্ভাবনা তখন ছিল না।”
পোস্টে তিনি বলেন, ২০০৫ সালে প্রকৃতপক্ষে সেনাপ্রধান হওয়ার কথা ছিল জেনারেল রেযাকুল হায়দারের, যিনি পাকিস্তান মিলিটারি একাডেমি থেকে ১৯৭১ সালে কমিশনপ্রাপ্ত হয়েছিলেন এবং জেনারেল মঈনের তুলনায় তিন বছর ও রেজ্জাকুল হায়দারের তুলনায় ছয় বছর সিনিয়র ছিলেন। তার নাম ও ছবি সেসময় কিছু সংবাদপত্রেও প্রকাশিত হয়। কিন্তু কোনো এক ‘অদৃশ্য কারণে’ শেষ পর্যন্ত জেনারেল মঈনই সেনাপ্রধানের দায়িত্ব পান।
ব্রিগেডিয়ার আযমী তার লেখায় বলেন, যদি তাকে রাজনৈতিক কারণে চাকরি থেকে বরখাস্ত না করা হতো এবং সেনাবাহিনীর মধ্যে রাজনীতিকরণ না চলতো, তাহলে হয়তো ভবিষ্যতে তার নামও বিবেচনায় আসতে পারতো। কিন্তু বাস্তবতার নিরিখে ২০০৫ সালে তার সেনাপ্রধান হওয়ার কোনো যৌক্তিকতা ছিল না।