সোনালী বাংলাদেশ থেকে আসাদুলকে অব্যাহতি, নিয়োগ পাচ্ছেন নাজমা

Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

ঢাকা: কেন্দ্রীয় ব্যাংকের উদ্বেগ ও আপত্তির পর যুক্তরাজ্যে রাষ্ট্রায়ত্ত সোনালী ব্যাংকের সাবসিডিয়ারি প্রতিষ্ঠান ‘সোনালী বাংলাদেশ (ইউকে) লিমিটেড’-এর চেয়ারম্যান পদ থেকে অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ এর সাবেক সিনিয়র সচিব মো. আসাদুল ইসলামকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। এ পদে নিয়োগ পাচ্ছেন আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের বর্তমান সচিব নাজমা মোবারেক।

অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, অর্থ উপদেষ্টা ও প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় কর্তৃক বিষয়টি চূড়ান্ত অনুমোদনের পর মঙ্গলবার (২ সেপ্টেম্বর) সোনালী বাংলাদেশ (ইউকে) এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ও নির্বাহী পরিচালক মাসুম বিল্লাহকে চিঠি পাঠিয়ে সরকারের এ সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে দিয়েছে আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ। চিঠির একটি অনুলিপি বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর বরাবর পাঠানো হয়েছে।

জানা যায়, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব হিসেবে পদাধিকার বলে আসাদুল ইসলাম ২০২০ সালের ১৩ জানুয়ারি তদাণীন্তন ‘সোনালী ব্যাংক ইউকে লিমিটেড’-এর চেয়ারম্যান এবং অনির্বাহী পদে নিয়োগ পান। সিনিয়র সচিব হিসেবে ২০২১ সালের ২৭ আগস্ট তার চাকরি শেষ হলে তাৎক্ষণিকভাবে এ পদ শূন্য হয়। কিন্তু অবসরে যাওয়ার পরও তিনি বিধি-বহির্ভূতভাবে প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান হিসাবে দায়িত্ব পালন করছিলেন। বিষয়টি নজরে আসার পর গত মাসে বাংলাদেশ ব্যাংক আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ এর সচিব বরাবর চিঠি পাঠিয়ে এ বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানায়।

এদিকে জানা যায়, অবসরে যাওয়ার পরও ২০২৩ সালের ১ ফেব্রুয়ারি দ্বিতীয় দফায় সোনালী বাংলাদেশ-এর চেয়ারম্যান পদে তিন বছরের জন্য নিয়োগ পান আসাদুল ইসলাম। তার মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা ছিল ২০২৬ সালের ৩১ জানুয়ারি।

সূত্র মতে, সাবেক সচিবের ওই নিয়োগটি ২০১৭ সালে জারি করা অর্থ মন্ত্রণালয়ের একটি পরিপত্রের সঙ্গে সাঙ্ঘর্ষিক। ২০১৭ সালের পরিপত্র অনুযায়ী, সরকারি কর্মকর্তারা রাষ্ট্রায়ত্ত বাণিজ্যিক ও বিশেষায়িত ব্যাংকের সাবসিডিয়ারি কোম্পানির পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করতে পারবেন। তবে চাকরি থেকে অবসরে গেলে সংশ্লিষ্ট পদের দায়িত্ব তাৎক্ষণিকভাবে শূন্য বলে গণ্য হবে এবং নতুন নিয়োগ দিতে হবে।

উল্লেখ্য, সাবসিডিয়ারি প্রতিষ্ঠানটির আগের নাম ছিল ‘সোনালী ব্যাংক (ইউকে) লিমিটেড’। গত ২০০১ সালের ১০ ডিসেম্বর সোনালী ব্যাংক (ইউকে) যুক্তরাজ্যে ব্যাংকিং ব্যবসা শুরু করে। ২০১০-২০১৪ সময়ে অর্থ পাচার প্রতিরোধ ব্যবস্থায় দুর্বলতার কারণে প্রতিষ্ঠানটিকে ৩২ লাখ পাউন্ড জরিমানা করে সে দেশের ফিন্যান্সিয়াল কনডাক্ট অথরিটি (এফসিএ)। ব্যাংকটির মুদ্রা পাচার প্রতিরোধ বিভাগের প্রধান স্টিভেন স্মিথকেও নিষিদ্ধের পাশাপাশি ১৮ হাজার পাউন্ড জরিমানা করা হয়।

এ ঘটনার জেরে ২০১৬ সালে প্রতিষ্ঠানটির ব্যাংকিং লাইসেন্স স্থগিত হয়, তবে বন্ধ হয়নি। পরবর্তীতে আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ ২০২২ সালের ৩০ মে এক আদেশে সে বছরের ১৬ আগস্ট থেকে যুক্তরাজ্যে ট্রেড ফাইন্যান্স এবং প্রবাসী আয় (রেমিট্যান্স) ব্যবসা পরিচালনার জন্য সোনালী ব্যাংক (ইউকে) লিমিটেডকে বিলুপ্ত ঘোষণা করে। তখন গঠন করা হয় সোনালী বাংলাদেশ (ইউকে) এবং সোনালী পে (ইউকে) লিমিটেড। তবে আগের সোনালী ব্যাংক (ইউকে) লিমিটেড-এর পরিচালনা পর্ষদকেই সোনালী বাংলাদেশের পরিচালনা পর্ষদ হিসেবে বহাল রাখা হয়।

প্রতিষ্ঠানটির প্রধান কার্যক্রম হচ্ছে- সোনালী ব্যাংক পিএলসি এবং বাংলাদেশের অন্যান্য ব্যাংকের এলসি বিল অ্যাডভাইজ, নেগোশিয়েট, কনফার্ম ও ডিসকাউন্ট সুবিধা প্রদান। এছাড়া যুক্তরাজ্যে প্রবাসী বাংলাদেশিদের বৈদেশিক রেমিট্যান্স পাঠানোর প্রক্রিয়ায় সহায়তা করাও এর অন্যতম দায়িত্ব।

Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *