হাতির বাংলো টিকে আছে শতবর্ষ 

Google Alert – পার্বত্য চট্টগ্রাম

চট্টগ্রাম: দূর থেকে দেখলে মনে হবে জঙ্গলে বিশাল একটি হাতি তেড়ে আসছে! ছায়াঘেরা, পাখি ডাকা, গা ছম ছম করা পরিবেশে তৈরি হাতির বাংলো এটি। শতবর্ষী বাংলোটি চট্টগ্রামের ঐতিহ্য, বাংলাদেশ রেলওয়ের ইতিহাসের অংশ।

 

যা দেখে দেশ-বিদেশের পর্যটক, শিক্ষার্থী, ইউটিউবার, কনটেন্ট ক্রিয়েটরসহ নানা বয়সী মানুষের চোখেমুখে দেখা দেয় খুশির ঝিলিক। ছবি ভিডিও, সেলফি ছড়িয়ে দেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।

এভাবে দিন দিন জনপ্রিয় হচ্ছে হাতির বাংলো।  

‘ফেরো’ সিমেন্টের অনন্য স্থাপত্যশৈলী, স্থানীয় লোককথা এবং ঐতিহাসিক গুরুত্ব বিবেচনায় হাতির বাংলো ক্রমে হয়ে উঠেছে উন্মুক্ত দর্শনীয় স্থান। চট্টগ্রাম শহরের প্রাণকেন্দ্রে লালখান বাজারের ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন ও লেডিস ক্লাবের দক্ষিণ পাশে কয়েক মিনিট হাঁটলেই পাহাড় চূড়ায় বাংলোটি চোখে পড়ে। চট্টগ্রাম সার্কিট হাউস থেকে পাঁচ মিনিটের হাঁটাপথ।


আঠারো শতকের শেষদিকে চট্টগ্রাম থেকে ফেনী পর্যন্ত রেলপথ নির্মাণকাজ শুরু হয়েছিল। তখন রেলওয়ে কর্মকর্তাদের বসবাসের জন্যই বাংলোটি নির্মাণ করেন প্রকৌশলী ব্রাউনজার।  


হাতির উদ্যত শুঁড়, চোখ, পিঠ মিলে ব্রিটিশ স্থাপত্যের সাথে স্থানীয় শৈলীর এক অপূর্ব সংমিশ্রণ ঘটেছে। এর লাল ইটের দেয়াল, বড় বড় বারান্দা, উঁচু ছাদ এবং প্রশস্ত ঘরগুলো অটুট। বাংলোটির সামনে ও পেছনের অংশ মিলিয়ে মোট ১২টি গোল আকৃতির জানালা আছে। ডুপ্লেক্স এই ভবনের নিচতলায় ৪টি ও দোতলায় একটি শয়নকক্ষ আছে বর্তমানে। হাতির বাংলো এখন পড়ে আছে অনেকটা জীর্ণশীর্ণ অবস্থায়। ভবনের দেয়ালজুড়ে পড়েছে শ্যাওলা, খসে পড়তে শুরু করেছে পলেস্তারা। কিছুদিন আগেও মানুষের বসবাস ছিল এ বাংলোতে। এখন তালাবদ্ধ। এতেই আতঙ্ক ঐতিহ্যপ্রেমীদের। তাদের দাবি, সংস্কার ও সংরক্ষণ হোক স্থাপনাটি।


চট্টগ্রামের মানুষের সঙ্গে হাতির সম্পর্ক প্রাচীনকাল থেকে। এ জনপদে হাতিকে মামা সম্বোধনে অভ্যস্ত। পাহাড়ি এলাকায় বড় বড় গাছের টুকরা নামানো হতো হাতির সাহায্যে। হাতি পোষা হতো সরকারি ও জমিদারের ব্যবস্থাপনায়। সার্কাসের হাতি তো ছিলই। চট্টগ্রাম বন্দরে ক্রেনের সাহায্যে একটি হাতি জাহাজে তোলার ছবি রীতিমতো বিখ্যাত। হাতি চলাচলের পথকে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে কক্সবাজার রেলপথ নির্মাণের সময়। হাতির কংকাল সংরক্ষিত আছে চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি বিশ্ববিদ্যালয়ের জাদুঘরে। খাবারের সন্ধানে এখনো আনোয়ারা, বাঁশখালী, পার্বত্য জেলায় বন্যহাতি লোকালয়ে নেমে আসে, ফসল, ঘরবাড়ি এমনকি মানুষের জীবনও ধ্বংস করছে। শিকারির হাতেও মারা পড়ছে হাতি। এসব বিষয়ের ছবি, ভিডিও, হাতির কঙ্কাল, মাটি ও সিমেন্টের হাতি ‘হাতির বাংলো’য় রাখা যেত বলে মনে করেন শিক্ষার্থীরা।


কলেজছাত্র দ্বীপায়ন বড়ুয়া বাংলানিউজকে বলেন, হাতির বাংলো নিয়ে মানুষ কমই জানে। সরকারের আরেকটু উদ্যোগী হওয়া উচিত। এখানে হাতি বিষয়ক অডিও ভিজুয়াল সংগ্রহশালা, একটি ছোট শিশুপার্ক, টি স্টল, বাগান করা যায়।  


এআর/টিসি

Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *