হারানো ক্ষমতা ফিরে পাচ্ছে সেনাবাহিনী

Google Alert – BD Army

নিজস্ব প্রতিবেদক: অবশেষে ১৬ বছর পর আবারও নির্বাচনের মাঠে ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা ফিরে পাচ্ছে সশস্ত্র বাহিনী। সাম্প্রতিক এক অধ্যাদেশ জারির মাধ্যমে তাদের আবারও আইন প্রয়োগকারী সংস্থা হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করার প্রস্তাব অনুমোদন করা হয়েছে, যা দেশের নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় একটি গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন।

পটভূমি

দীর্ঘ ১৬ বছর একচ্ছত্রভাবে শাসনের পর জুলাই অভ্যুত্থানে পতন ঘটে আওয়ামী লীগ সরকারের। এর আগে, ২০০১ সালে সপ্তম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রাক্কালে সশস্ত্র বাহিনীকে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সংজ্ঞায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল। এর ফলে, পুলিশ বাহিনীর মতোই নির্বাচনী অপরাধে বিনা পরোয়ানায় গ্রেপ্তারের ক্ষমতা লাভ করেছিল সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী এবং বিমানবাহিনীর সদস্যরা।

কিন্তু ২০০৮ সালে নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জয়ী হওয়ার পর আওয়ামী লীগ সরকার এক অধ্যাদেশের মাধ্যমে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সংজ্ঞা থেকে সশস্ত্র বাহিনীকে বাদ দেয়। ফলে পুলিশ, র‍্যাব, আনসার, বিজিবি এবং কোস্ট গার্ডের মতো ক্ষমতা সশস্ত্র বাহিনীর ছিল না।

ক্ষমতা ফিরে পাওয়ার প্রক্রিয়া

চলতি বছরের ১১ আগস্ট নির্বাচন কমিশন ‘গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও)’ সংশোধনের জন্য একটি প্রস্তাব অনুমোদন করে। এই প্রস্তাবে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সংজ্ঞায় সশস্ত্র বাহিনীকে পুনরায় অন্তর্ভুক্ত করার বিষয়টি ছিল। নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশন এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সুপারিশ ও দাবির প্রেক্ষিতে এই প্রস্তাবটি অনুমোদিত হয়। বর্তমানে রাষ্ট্রপতির অধ্যাদেশ জারির মাধ্যমে এই প্রস্তাব বাস্তবায়নের পথে রয়েছে।

বিশেষজ্ঞ ও কর্মকর্তাদের মতামত

এই পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়েছেন নির্বাচন সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা। নির্বাচন কমিশনার আব্দুর রহমান আল মাসুদ জানান, নির্বাচনে সেনাবাহিনী আইন প্রয়োগকারী সংস্থা হিসেবে দায়িত্ব পালন করলে তা সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য সহায়ক হবে। তার মতে, এর ফলে নির্বাচনে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় সশস্ত্র বাহিনীকে আর কারো নির্দেশের জন্য অপেক্ষা করতে হবে না।

নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের সদস্য ড. মোহাম্মদ আব্দুল আলিম বলেন, অতীতে যে সকল জাতীয় নির্বাচন অনেকাংশে সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হয়েছে, সেগুলোতে सशस्त्र বাহিনীর কার্যকর সহযোগিতা ছিল। তিনি মনে করেন, নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর তৎকালীন সরকার সেনাবাহিনীকে কার্যকরভাবে নির্বাচনী দায়িত্বে রাখতে চায়নি, কারণ এই বাহিনী নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালন করে, যা ভোট লুটের ক্ষেত্রে অন্তরায় হতে পারে।

এদিকে, সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান এক অফিসার্স অ্যাড্রেসে জানিয়েছেন যে, জাতীয় নির্বাচনের তারিখ ইতোমধ্যে ঘোষণা করা হয়েছে এবং সরকার তা অনুষ্ঠানে বদ্ধপরিকর। তিনি সকল সেনা সদস্যকে আইন অনুযায়ী নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালনের জন্য প্রস্তুত থাকার নির্দেশনা দিয়েছেন। এই পরিবর্তনের ফলে সশস্ত্র বাহিনী প্রয়োজনীয় ক্ষমতা নিয়েই নির্বাচনী মাঠে থাকবে বলে তিনি আশ্বস্ত করেন।

জামিরুল ইসলাম/

Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *