হোয়াইট হাউসে ট্রাম্পের সঙ্গে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ও সেনাপ্রধানের রুদ্ধদ্বার বৈঠক

Google Alert – সেনাপ্রধান

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ওয়াশিংটনের ওভাল অফিসে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফ এবং চিফ অব আর্মি স্টাফ (সিওএএস) ফিল্ড মার্শাল আসিম মুনিরের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। 

স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) অনুষ্ঠিত এই রুদ্ধদ্বার বৈঠকে মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও উপস্থিত ছিলেন। পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় (পিএমও) থেকে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে এই খবর জানানো হয়েছে। বৈঠকটি প্রায় ১ ঘণ্টা ২০ মিনিট স্থায়ী হয়।

রুদ্ধদ্বার এই বৈঠকটি ওয়াশিংটন সময় বিকেল ৪টা ৩০ মিনিটে শুরু হওয়ার কথা থাকলেও প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করার পর সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার কারণে প্রায় ৩০ মিনিট বিলম্বিত হয়। বৈঠকের পর প্রকাশিত ছবিতে প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ এবং ফিল্ড মার্শাল মুনিরকে ট্রাম্পের সঙ্গে মতবিনিময় করতে দেখা যায়। একটি গ্রুপ ফটোসেশনে ট্রাম্পকে তার স্বভাবসুলভ বুড়ো আঙুল তুলে হাসিমুখে পোজ দিতে দেখা যায়। 

ট্রাম্প বৈঠক শুরুর আগে সাংবাদিকদের বলেন, ‘একজন মহান নেতা’ হোয়াইট হাউসে আসছেন এবং তিনি ফিল্ড মার্শাল মুনিরকে ‘একজন মহান, মহান ব্যক্তি’ এবং প্রধানমন্ত্রীকেও ‘তা-ই’ বলে অভিহিত করেন। এই বৈঠকটিই যুক্তরাষ্ট্র ও পাকিস্তান সরকারের প্রধানের মধ্যে প্রথম আনুষ্ঠানিক দ্বিপক্ষীয় বৈঠক। এর আগে ২০১৯ সালের জুলাইয়ে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদে তার সঙ্গে দেখা করেছিলেন।

এই বৈঠকে সাংবাদিকদের প্রবেশাধিকার ছিল না, যা ট্রাম্প সাধারণত করেন না। রেডিও পাকিস্তানের পূর্ববর্তী প্রতিবেদন অনুসারে, দুই নেতার মধ্যে ‘পারস্পরিক স্বার্থ এবং আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক পরিস্থিতি’ নিয়ে আলোচনা হওয়ার কথা ছিল। এই বৈঠক এমন এক সময়ে অনুষ্ঠিত হলো যখন প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের (ইউএনজিএ) ৮০তম অধিবেশনে যোগ দিতে যুক্তরাষ্ট্র সফরে রয়েছেন। মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদে ওয়াশিংটন ও ইসলামাবাদের মধ্যে সম্পর্ক ‘ধীরে ধীরে উষ্ণ হচ্ছে’।

বহু বছর ধরে যুক্তরাষ্ট্র এশিয়ায় চীনের প্রভাব মোকাবিলায় ভারতকে মিত্র হিসেবে দেখলেও, ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদে আসার পর ভারতের সঙ্গে মার্কিন সম্পর্ক শীতল হতে শুরু করেছে। ভারতীয়দের জন্য ভিসা কঠোর করা, উচ্চ শুল্ক আরোপ এবং প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের ভারত-পাকিস্তান সংঘর্ষে যুদ্ধবিরতিতে মধ্যস্থতার বারবার দাবি ভারতকে অস্বস্তিতে ফেলেছে।

বর্তমানে ভারতীয় পণ্যে যুক্তরাষ্ট্র ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছে এবং রাশিয়া থেকে তেল কেনা বন্ধ না করলে আরও শুল্কের হুঁশিয়ারি দিয়েছে। অন্যদিকে, পাকিস্তানের পণ্যে মাত্র ১৯ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হয়েছে এবং পাকিস্তান সরকার সেই শুল্কের হার কমানোর চেষ্টা করছে। এই বৈঠকে শুল্ক নিয়ে আলোচনা হয়ে থাকতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

এর আগে, প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফ মঙ্গলবার ট্রাম্পের সঙ্গে মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ কয়েকটি দেশের নেতাদের এক বৈঠকে যোগ দিয়ে গাজায় ইসরায়েলের হামলা বিষয়ে আলোচনা করেন এবং মার্কিন প্রেসিডেন্টের শান্তি প্রস্তাব নিয়ে মতবিনিময় করেন। 

এছাড়া, ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠকের আগে প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ নিউইয়র্কে বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গেও দেখা করেন। এই বৈঠকে তিনি পারস্পরিক শ্রদ্ধা, বিশ্বাস এবং আঞ্চলিক শান্তি ও সমৃদ্ধির ভাগ করা আকাঙ্ক্ষার ওপর ভিত্তি করে বাংলাদেশের সঙ্গে ‘গঠনমূলক ও দূরদর্শী সম্পর্ক’ জোরদার করার জন্য পাকিস্তানের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন। মুহাম্মদ ইউনূসও দুই দেশের সম্পর্ক গভীর করার জন্য পাকিস্তানের উদ্যোগের প্রশংসা করেন এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ও সাংস্কৃতিক সংযোগ বাড়ানোর গুরুত্ব তুলে ধরেন।

সূত্র: ডন

Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *