Google Alert – সশস্ত্র
আফগানিস্তানে গত ১৫ আগস্ট দেশজুড়ে বর্তমান সরকারের ৪ বছর পূর্তি উদযাপন করা হয়েছে। বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করে দিনটিকে স্মরণীয় করে তোলা হয়। হাজারো মানুষ কাবুলের রাস্তায় জড়ো হয়ে আনন্দ-উল্লাসে মেতে ওঠেন। আকাশপথে হেলিকপ্টার থেকে ছেটানো হয় ফুল। এদিন বর্তমান প্রশাসনের সমর্থকেরা বিভিন্ন সড়কে সশস্ত্র মিছিল করে নিজেদের শক্তি প্রদর্শন করেন।
এদিকে তাদের নেতা হিবাতুল্লাহ আখুন্দজাদা বলেন, আফগান জনগণ প্রায় ৫ দশক ধরে ত্যাগ ও সংগ্রাম করে যাচ্ছে। তাদের এই শাসন ব্যবস্থা সমাজকে দুর্নীতি, জুলুম, চুরি এবং ডাকাতির মতো অপরাধ থেকে রক্ষা করেছে।
২০২১ সালের ১৫ আগস্ট আফগানিস্তান থেকে তাদের ২০ বছরব্যাপী সামরিক মিশন শেষ করে সৈন্য প্রত্যাহার করে যুক্তরাষ্ট্র ও ন্যাটো বাহিনী। এরপরই দেশটির নিয়ন্ত্রণ গ্রহণ করে বর্তমান প্রশাসন।
এদিকে দ্য গার্ডিয়ান জানাচ্ছে, এই বর্ষপূর্তিতে আয়োজিত অনুষ্ঠানে নারীদের অংশগ্রহণ নিষিদ্ধ ছিল। এর আগে ২০২২ সালের নভেম্বর মাস থেকে নারীদের পার্ক ও বিনোদন কেন্দ্রে যাওয়াও নিষিদ্ধ করা হয়। সম্প্রতি আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) হিবাতুল্লাহ আখুন্দজাদা ও প্রধান বিচারপতি আব্দুল হাকিম হাক্কানির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে। তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তারা এমন কিছু নীতি প্রণয়ন করেছেন যা নারীদের শিক্ষা, মতপ্রকাশ, চলাফেরা, গোপনীয়তা, পারিবারিক অধিকার এবং ধর্ম পালনের স্বাধীনতা থেকে বঞ্চিত করেছে। ২০২৪ সালের আগস্টে প্রকাশিত জাতিসংঘের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, বর্তমান প্রশাসনের কারণে অন্তত ১৪ লাখ কিশোরী স্কুলে যাওয়ার সুযোগ হারিয়েছে।
এদিকে দিনটিতে তাখার প্রদেশের নারীরা ঘর থেকেই প্রতিবাদ জানিয়েছেন। পাশাপাশি ইসলামাবাদেও আফগান নারী শরণার্থীরা প্রতিবাদ কর্মসূচিতে অংশ নেন। তবে এই পরিস্থিতির মাঝেও পাকিস্তান, ইরান এবং যুক্তরাষ্ট্র আফগান শরণার্থীদের নিজ দেশে ফেরত পাঠানো শুরু করেছে। যদিও সকলেরই স্পষ্টভাবে জানা, ফিরে গেলে তারা বর্তমান প্রশাসনের কঠোর নির্দেশনার অধীনে পড়বেন।
এছাড়া, আফগানিস্তান বর্তমানে একটি মারাত্মক মানবিক বিপর্যয়েরও সম্মুখীন। জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব ও আন্তর্জাতিক সহায়তার পরিমাণ উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পাওয়ায় দেশের পরিস্থিতি আরও সংকটময় হয়ে উঠেছে।
বিশ্বের বেশিরভাগ দেশ এখনও বর্তমান সরকারকে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দেয়নি। তবে ২০২৫ সালের জুলাই মাসে রাশিয়া আফগানিস্তানের বর্তমান সরকারকে স্বীকৃতি প্রদান করে। এদিকে চীন, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও মধ্য এশিয়ার বেশ কয়েকটি দেশের সঙ্গে আফগানিস্তানের সরকারের ভালো সম্পর্ক থাকলেও, তারা কেউই এখনও তাদের আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি দেয়নি।