৩ জঙ্গিকে হত্যা করেছে ভারত: অমিত শাহ

Google Alert – সেনা

কাশ্মিরের পেহেলগাম এপ্রিলের ২৬ জন বেসামরিক নাগরিককে গুলি করে হত্যার সঙ্গে জড়িত তিন জঙ্গিকে হত্যা করেছে ভারতীয় নিরাপত্তা বাহিনী—স্থানীয় সময় সোমবার (২৮ জুলাই) সংসদে এ দাবি করেছেন দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ।

তিনি বলেন, ‘অপারেশন মহাদেব’ নামের এক অভিযানে শ্রীনগরের কাছে দাচিগামের পাহাড়ি বন সংরক্ষণ এলাকায় ওই তিনজনকে গুলি করে হত্যা করা হয়।

শাহ দাবি করেন, নিহতরা পাকিস্তানের নাগরিক—যদিও ইসলামাবাদ এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে।

ভবিষ্যৎ হামলার আশঙ্কায় সেই সময় ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সীমান্তে কয়েক দিনের ক্ষণস্থায়ী সেনা সংঘর্ষ শুরু হয়। এতে বহু মানুষ নিহত হন, যা সাম্প্রতিক দশকগুলোর মধ্যে দুই দেশের মধ্যে সবচেয়ে রক্তক্ষয়ী সংঘাতে পরিণত হয়, পরবর্তীতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যস্থতায় যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করা হয়।

ভয়াবহ হামলা ও তদন্ত
২২ এপ্রিল পেহেলগামেগুলি চালিয়ে ২৬ জনকে হত্যা করা হয়, যাদের মধ্যে বেশিরভাগই ছিলেন হিন্দু পর্যটক। তাদের পরিবারের সামনেই ঠাণ্ডা মাথায় হত্যা করা হয়। এক স্থানীয় মুসলিম ঘোড়াচালক, যিনি সাহায্যের চেষ্টা করেছিলেন, তাকেও গুলি করে হত্যা করা হয়।

তদন্তে জানা গেছে, হামলার আগে স্থানীয় দুই ব্যক্তি এই তিনজনকে আশ্রয় দিয়েছিল। তাদের গ্রেফতারের পর বলা হয়, তিন জঙ্গিই পাকিস্তানভিত্তিক নিষিদ্ধঘোষিত সংগঠন লস্কর-ই-তৈয়্যবার (এলইটি) সদস্য।

সংসদে শাহের বক্তব্য
স্থানীয় সময় সোমবার (২৮ জুলাই) নিহতদের পরিচয় নিশ্চিত করে শাহ জানান, তাদের নাম সুলেমান শাহ, আফগান ও জিবরান। শাহ বলেন, ‘তাদের কাছ থেকে একটি মার্কিন ‘এম-৯’ রাইফেল এবং দুটি কালাসনিকভ (একে-৪৭) উদ্ধার করা হয়েছে। এগুলোর ব্যালিস্টিক পরীক্ষা চণ্ডীগড়ের কেন্দ্রীয় ফরেনসিক ল্যাবে করা হয় এবং নিশ্চিত হয়া গেছে যে এগুলো দিয়েই নিরীহ নাগরিকদের হত্যা করা হয়েছিল।’

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ সংসদে রিপোর্টের কাগজ দেখিয়ে বলেন, ‘ছয়জন বিজ্ঞানী ক্রস-চেক করেছেন। ভিডিও কলে তারা আমাকে জানিয়েছেন, এই গুলিগুলোই ১০০% নিশ্চিতভাবে হামলায় ব্যবহৃত হয়েছে।’

তবে এই অভিযান নিয়ে এখনো স্বাধীনভাবে যাচাই করা হয়নি এবং পাকিস্তানও ভারত সরকারের দাবির বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি।

সমালোচনা ও প্রশ্ন
বিরোধী দল কংগ্রেসের সংসদ সদস্য গৌরব গগৈ প্রশ্ন তোলেন, কেন ১০০ দিন পেরিয়ে গেলেও এত দেরিতে হামলাকারীদের খোঁজ পাওয়া গেল। তিনি বলেন, ‘এই হামলার জন্য স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে ব্যক্তিগতভাবে দায় নিতে হবে।’

কংগ্রেস নেত্রী প্রিয়াঙ্কা গান্ধী প্রশ্ন তোলেন, ‘হামলার সময় সেখানে কেন কোনো নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য উপস্থিত ছিল না?’

তিনি বলেন, ‘নাগরিকদের নিরাপত্তা কি প্রধানমন্ত্রীর, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর ও প্রতিরক্ষামন্ত্রীর দায়িত্ব নয়?’

জবাবে শাহ বলেন, হামলার পরই তদন্ত জাতীয় তদন্ত সংস্থা (এনআইএ)-র হাতে তুলে দেয়া হয় এবং সীমান্তে কড়া নজরদারি বসানো হয়েছিল যাতে কেউ দেশ ছেড়ে পালাতে না পারে।

তবে বিরোধীদের অনেকেই সরকারের জবাবে সন্তুষ্ট নন এবং কাশ্মীরের নিরাপত্তা ব্যবস্থাপনায় ‘গুরুতর ঘাটতির’ অভিযোগ তুলছেন।

সূত্র: বিবিসি নিউজ।

Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *