Jamuna Television
প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ স্থানীয় সময় শনিবার (৯ আগস্ট) ভারতীয় বিমানবাহিনী প্রধানের ৬টি পাকিস্তানি বিমান ভূপাতিত করার দাবিকে ‘অবিশ্বাস্য’ এবং ‘হাস্যকর’ বলে উড়িয়ে দিয়েছেন।
ভারতের বেঙ্গালুরু শহরে এক অনুষ্ঠানে ভারতীয় বিমানবাহিনী প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল অমর প্রীত সিং দাবি করেন, ‘আমরা নিশ্চিতভাবে অন্তত পাঁচটি ফাইটার এবং একটি বড় বিমান ধ্বংস করেছি। এই বড় বিমানটি সম্ভবত একটি নজরদারি বিমান ছিল, যেটি ৩শ’ কিলোমিটার দূরে ধ্বংস হয়।’
তিনি দাবি করেন, পাকিস্তানের বেশিরভাগ বিমান ভারতীয় রাশিয়ান-নির্মিত এস-৪০০ ভূমি থেকে আকাশ ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থার মাধ্যমে ভূপাতিত হয়েছে এবং তিনি ইলেকট্রনিক ট্র্যাকিং ডেটার কথা উল্লেখ করেন এই হামলার প্রমাণ হিসেবে।
সিং আরও দাবি করেন, পাকিস্তানের সিন্ধু ও পাঞ্জাবের দুটি বিমান ঘাঁটিতে থাকা ‘কয়েকটি এফ-১৬’ এবং একটি অতিরিক্ত নজরদারি বিমানও ভারতীয় হামলার শিকার হয়েছে।
গত কয়েক দশকের মধ্যে প্রতিবেশী দেশটির সঙ্গে সবচেয়ে বড় সামরিক সংঘর্ষের তিন মাস পর ভারতীয় পক্ষের এটিই প্রথম এমন বক্তব্য। ওই সংঘর্ষের সময় পাকিস্তান দাবি করেছিল যে গত ৭ মে আকাশযুদ্ধে তারা পাঁচটি ভারতীয় বিমান ভূপাতিত করেছে, পরে এই সংখ্যা ছয়টিতে পৌঁছায়। ভারতের সর্বোচ্চ সামরিক কর্মকর্তাও তাদের আকাশযুদ্ধে ক্ষয়ক্ষতির কথা স্বীকার করেছেন, তবে ছয়টি বিমান হারানোর কথা অস্বীকার করেন।
এই দাবির জবাবে প্রতিরক্ষা মন্ত্রী খাজা আসিফ এক্সে পোস্ট করে বলেন, ‘অপারেশন সিন্ধুর সময় পাকিস্তানি বিমান ধ্বংসের ব্যাপারে ভারতীয় বিমানবাহিনী প্রধানের বিলম্বিত দাবি যেমন অবিশ্বাস্য, তেমনি তা সময়োপযোগী নয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘এটা দুর্ভাগ্যজনক যে ভারতের জ্যেষ্ঠ সামরিক কর্মকর্তাদের এমন ব্যর্থতার মুখপাত্র করা হচ্ছে, যা মূলত ভারতীয় রাজনীতিবিদদের কৌশলগত দৃষ্টিহীনতার ফলাফল। পাকিস্তান শুরুতেই আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের সামনে বিস্তারিত কারিগরি তথ্য উপস্থাপন করেছে, যেখানে স্বতন্ত্র পর্যবেক্ষকরা ভারতের বহু বিমান ক্ষতির কথা স্বীকার করেছেন – যার মধ্যে ফ্রান্সের যুদ্ধবিমান রাফালও রয়েছে।’
খাজা আসিফ জোর দিয়ে বলেন, ‘ভারতের পক্ষ থেকে একটি বিমানও পাকিস্তান ভূপাতিত করেনি’, বরং পাকিস্তান ছয়টি ভারতীয় যুদ্ধবিমান, এস-৪০০ সিস্টেম এবং ড্রোন ধ্বংস করেছে এবং দ্রুত সময়ের মধ্যে একাধিক ভারতীয় বিমান ঘাঁটি অকার্যকর করে দেয়।
তিনি আরও বলেন, ‘যদি সত্য নিয়ে প্রশ্ন থাকে, তাহলে উভয় দেশ তাদের বিমানবহরের তালিকা স্বাধীন যাচাইয়ের জন্য উন্মুক্ত করুক – যদিও আমাদের সন্দেহ, এতে ভারতের গোপন সত্য প্রকাশ পাবে। যুদ্ধ মিথ্যা দিয়ে জেতা যায় না, জেতা যায় নৈতিকতা, জাতীয় সংকল্প এবং পেশাদারিত্বের মাধ্যমে।’
‘এমন হাস্যকর কল্পকাহিনি, যা দেশের রাজনৈতিক প্রয়োজন মেটাতে বানানো হয়েছে,’ আসিফ হুঁশিয়ারি দেন।
তিনি আরও বলেন, ‘পাকিস্তানের সার্বভৌমত্ব লঙ্ঘনের প্রতিটি প্রচেষ্টার তাৎক্ষণিক, নির্ভুল ও উপযুক্ত জবাব দেয়া হবে, এবং এর ফলে যে কোনো উত্তেজনার দায় ভারতের কৌশলগতভাবে অন্ধ নেতৃত্বের ওপর বর্তাবে।’
সূত্র: ডন নিউজ।
/এআই