শ্রদ্ধা ও ভালোবাসায় বিদায় মাহফুজা খানম : সংবাদ অনলাইন

Google Alert – পার্বত্য চট্টগ্রাম

সংবাদ অনলাইন রিপোর্ট : বৃহস্পতিবার, ১৪ আগস্ট ২০২৫

শ্রদ্ধা ও ভালোবাসায় শেষ বিদায় জানানো হয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদ ডাকসুর সাবেক ভিপি মাহফুজা খানমকে। বুধবার ঢাকার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার মাহফুজা খানমের দীর্ঘদিনের বন্ধু, স্বজন, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক সহযোদ্ধাসহ বিভিন্ন শ্রেণীপেশার মানুষ এসেছিলেন মাহফুজা খানমকে শেষ বিদায় জানাতে। শুরুতে এই মুক্তিযোদ্ধার প্রতি ঢাকা জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে গার্ড অব অনার প্রদান করা হয়। বিউগলে বেজে ওঠে করুন সুর, পালন করা হয় এক মিনিট নীরবতা।

গত মঙ্গলবার সকালে অসুস্থবোধ করায় তাকে পান্থপথের হেলথ অ্যান্ড হোপ হাসপাতালে নেয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

মাহফুজা খানমের ছোট ছেলে মাহবুব শফিক মায়ের অবদান সম্পর্কে বলেন, ‘মা আমার বাবাকে সব সময় এগিয়ে দিয়েছেন, আমাদের এগিয়ে দিয়েছেন। মায়ের সহযোগিতা না পেলে বাবা কিংবা আমাদের এই অবস্থানটা হতো না। বাবা যে আইনমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন, তা মাকে ছাড়া সম্ভব হতো না। আমরা ভাই-বোনেরা ডাক্তার হয়েছি ব্যারিস্টার হয়েছি, তা মায়ের জন্যই।’

শ্রদ্ধা জানাতে আসা ডাকসুর সাবেক ভিপি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ‘তার মৃত্যুর খবর জানার পর ভীষণ কষ্ট পাচ্ছিলাম, সেই কষ্ট নিয়েই এখানে শ্রদ্ধা জানাতে এসেছি। আমিও ডাকসুর ভিপি ছিলাম। তিনি যেভাবে সবাইকে কাছে টানতে পারতেন, তা বিরল। মাহফুজা আপা আমাদের মাঝে চির জাগরূক থাকুক।’

মাহফুজা খানম নানা পরিচয়ে উজ্জ্বল জানিয়ে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেন, ‘তিনি পাকিস্তানি স্বৈরশাসনের বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিলেন। স্বাধীন বাংলাদেশেও প্রগতিশীল চর্চায় তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন। তিনি শিশু কিশোরদের সংগঠনেও নেতৃত্ব দিয়েছেন।’

শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছে- উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী, কচিকাঁচার মেলা, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল, বাংলাদেশ জাসদ, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি, গেরিলা ১৯৭১, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি, ঐক্য ন্যাপ, নারী প্রগতি সংঘ, বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ, বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি, পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি, গণফোরাম, গণতান্ত্রিক আইনজীবী সমিতি, ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি- ন্যাপ, বাংলাদেশ হিন্দ-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদ, বাংলাদেশ জাসদ, নগরিক ঐক্য, শান্তি পরিষদ, বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্র, বাংলাদেশ কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি, গণসংগীত সমন্বয় পরিষদ, ক্ষেত মজুর সমিতি, বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদ ও বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন।

এরপর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থেকে একটি শোক র‌্যালি সহকারে তার মরদেহ নেয়া হয় ডাকসু ভবনের সামনে। সেখানে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন ডাকসুর সাবেক নেতা এবং ক্রিয়াশীল বিভিন্ন বামপন্থি ছাত্র সংগঠন।

এরপরে মাহফুজা খানমের মরদেহ নেয়া হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় মসজিদে। সেখানে জানাজার পর তাকে আজিমপুর কবরস্থানে সমাহিত করা হয়েছে।

মাহফুজা খানম ১৯৬৬-৬৭ ডাকসু নির্বাচনে ছাত্র ইউনিয়নের প্যানেলে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে তিনি ভিপি নির্বাচিত হয়েছিলেন। তিনিই ডাকসুর একমাত্র নারী ভিপি।

বিভিন্ন সরকারি কলেজে শিক্ষকতা করা মাহফুজা খানম মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ছিলেন। শিক্ষায় বিশেষ অবদান রাখায় সরকার তাকে ২০২১ সালে একুশে পদকে ভূষিত করেন।

Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *