Google Alert – ইউনূস
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস জুলাই ঘোষণাপত্রে ‘সংস্কারকৃত সংবিধান’ শব্দ ব্যবহার করে গণপরিষদ নির্বাচনের মধ্য দিয়ে নতুন সংবিধানের দাবিকে পাশ কাটিয়ে গেছেন বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সদস্যসচিব আখতার হোসেন।
শনিবার (১৬ আগস্ট) বিকালে রাজধানীর বাংলামোটরে এনসিপির অস্থায়ী কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ‘জুলাই সনদ বাস্তবায়নে গণপরিষদ নির্বাচন’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় আখতার হোসেন এ মন্তব্য করেন।
আখতার হোসেন বলেন, ‘আমরা জুলাই ঘোষণাপত্র পেয়েছি। একটা অপূর্ণাঙ্গ ডকুমেন্ট। সেই জুলাই ঘোষণাপত্রের প্রস্তাবে বলা হলো, আগামী নির্বাচনের পর সংস্কারকৃত সংবিধানের তফসিলে এই ঘোষণাপত্র যুক্ত করা হবে। সংস্কারের বিষয়গুলো কীভাবে বাস্তবায়িত হবে, সেই বিষয় নিয়ে যখন আলোচনার দাবি জানানো হলো, তখন কমিশন তাদের (এনসিপি) সঙ্গে বসবে বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। সেই বিষয়গুলো নিয়ে বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে কথা বলছে কমিশন। জুলাই সনদের এখনো চূড়ান্ত খসড়া এনসিপি পায়নি। ঠিক সেই মুহূর্তেই জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সভাপতি অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস জুলাই ঘোষণাপত্রে “সংস্কারকৃত সংবিধান” শব্দবন্ধের মধ্য দিয়ে গণপরিষদ নির্বাচনের মাধ্যমে নতুন সংবিধানের দাবিকে পাশ কাটিয়ে গেছেন।’
নতুন সংবিধানের আলোচনাকে পাশ কাটিয়ে যারা বিদ্যমান সংবিধানকে সংশোধনের কথা বলছেন, তাদের উদ্দেশে এনসিপির এই শীর্ষ নেতা বলেন, ‘ঐকমত্য কমিশন তো সিদ্ধান্তগুলো জানিয়ে দিয়েছে। এই বিষয়গুলো বিদ্যমান সংবিধানে সংশোধনীর মতো করে বসিয়ে একটা ড্রাফট (খসড়া) করে দেখেন যে বর্তমান সংবিধানের আর কিছু অবশিষ্ট থাকে কি না। আমরা বারবার এ কথা বলেছি।’
সংবিধান সংশোধনে অতীতের নেতিবাচক অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরে এনসিপির সদস্যসচিব বলেন, এই সংবিধান অনেকবার কাটাছেঁড়া হয়েছে। সংশোধনী হয়েছে। পার্লামেন্টেই হয়েছে। তারপর যখন সেটা হাইকোর্টে গিয়েছে, হাইকোর্ট সেগুলো বাতিল করে দিয়েছেন।
তিনি বলেন, যে বিষয়গুলোতে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সমঝোতা তৈরি হয়েছে, ঐকমত্য কমিশন যে সিদ্ধান্তগুলো দিয়েছে, সেগুলোকে টেকসইভাবে পেতে হলে নতুন সংবিধানের আর কোনো বিকল্প নেই।
বাংলাদেশকে আগের ব্যবস্থার মধ্যে রেখে ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে আবার রক্তের মুখোমুখি দাঁড় করানোর জন্য শহীদেরা জীবন দেননি বলেও মন্তব্য করেন আখতার হোসেন।
এনসিপির এই নেতা বলেন, তারা যখন গণপরিষদ নির্বাচনের কথা বলেন, তখন অনেকে এনসিপি জাতীয় নির্বাচন পিছিয়ে দিতে চায় বলে একধরনের বক্তব্য বাজারে নিয়ে আসছেন। তাদের (এনসিপি) প্রস্তাব, নির্বাচিত প্রতিনিধিরা একইসঙ্গে গণপরিষদের সদস্য এবং সংসদের সদস্য হিসেবে কাজ করবেন। তারা সংবিধান নতুন করে প্রণয়ন করবেন। তারা সরকারও পরিচালনা করবেন।
আখতার বলেন, নির্বাচনের সময়সীমা নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকার ফেব্রুয়ারি মাসের কথা বলেছেন। এতে তাদের কোনো আপত্তি নেই। নির্বাচন যেকোনো সময় আয়োজিত হতে পারে। কিন্তু আগামী জাতীয় নির্বাচন যেন বাংলাদেশের পুরোনো ব্যবস্থাকে টিকিয়ে রাখার নির্বাচন না হয়। নতুন ব্যবস্থার ভিত্তিতে আগামী নির্বাচন আয়োজন করার আহ্বান জানান এই নেতা।