Google Alert – ইউনূস
জনগণের ইচ্ছায় সরকারপ্রধানের পদে বসেছেন বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা নোবেলজয়ী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেন, কখনোই নিজের জন্য নয়; বরং দেশের জনগণের ইচ্ছায় সরকারপ্রধানের পদে বসেছি।
ড. ইউনূস বলেন, ‘এটা আমার নয়, এটা সেসব মানুষের চাওয়া, যারা পরিবর্তন চেয়েছিলেন। তাঁরা যেভাবে চলতে চান, আমি শুধু তাঁদের সেভাবে চলতে সহায়তা করছি। ’
১১ থেকে ১৩ আগস্ট তিন দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে মালয়েশিয়া যান বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা। সেখানকার জাতীয় সংবাদমাধ্যম বারনামাকে দেওয়া বিশেষ সাক্ষাৎকারে তিনি এসব কথা বলেন। সাক্ষাৎকারটি নেন বারনামার প্রধান সম্পাদক আরুল রাজু দুরার রাজ। সঙ্গে ছিলেন ইন্টারন্যাশনাল নিউজ সার্ভিসের সম্পাদক ভুন মিয়াও পিং ও বারনামার ইকোনমিক নিউজ সার্ভিসের সহকারী সম্পাদক কিশো কুমারী সুশেদারাম।
এদিকে দীর্ঘদিনের রোহিঙ্গা শরণার্থী সংকট মোকাবেলায় আন্তর্জাতিক প্রচেষ্টা জোরদার করার জন্য মালয়েশিয়ার প্রভাব, বিশেষ করে
দেশটির আসিয়ান সভাপতির ভূমিকা কাজে লাগাতে আগ্রহী বাংলাদেশ। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, রোহিঙ্গা শরণার্থী গ্রহণের ক্ষেত্রে মালয়েশিয়ার অভিজ্ঞতা ও আসিয়ানে নেতৃত্বপূর্ণ অবস্থান একযোগে দেশটিকে একটি অনন্য অবস্থান দিয়েছে। বিষয়টি একটি বিস্তৃত আঞ্চলিক (সমস্যা) সমাধানে পদক্ষেপ নিতে সহায়ক হতে পারে। তিনি বলেন, দীর্ঘস্থায়ী এই মানবিক সংকট শুধু বাংলাদেশকেই প্রভাবিত করছে না; বরং মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ড, ইন্দোনেশিয়াসহ বেশ কয়েকটি আসিয়ান সদস্য দেশকেও প্রভাবিত করছে।
২০০৬ সালে শান্তিতে নোবেল পুরস্কার জয়ের মধ্য দিয়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে স্বীকৃতি পান ড. ইউনূস। তিনি ক্ষুদ্রঋণ ধারণার পথিকৃৎ হিসেবে এই নোবেল পুরস্কার পান। একজন নোবেল বিজেতা হিসেবে রাজনৈতিক নেতৃত্বের আসনে পা রাখাটা কখনোই অধ্যাপক ইউনূসের পরিকল্পনার অংশ ছিল না। তাঁর ভাষায়, পরিস্থিতি তাঁকে পছন্দ বেছে নেওয়ার বিষয়ে খুব কমই সুযোগ দিয়েছে।
বাংলাদেশে গত দেড় দশকে প্রাপ্তবয়স্ক অনেকে নতুন ভোটার হয়েছেন, যাদের কেউ আগে কখনো ভোট দেওয়ার সুযোগ পাননি।
তাদের বিষয়ে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘কেউ ১০ বছর ধরে অপেক্ষা করছেন। কেউ ১৫ বছর ধরেও। ’
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘একবার ভাবুন, আপনার ১৮ বছর বয়স হয়েছে, আপনি ভোট দিতে আগ্রহী। কিন্তু আপনি সেই সুযোগ কখনো পাননি। কারণ সত্যিকার অর্থে কখনো নির্বাচনই হয়নি। এখন তাঁরা ১৫ বছরের মধ্যে প্রথমবার ভোট দিতে পারবেন। ’
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে গত বছরের ৫ আগস্ট সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কর্তৃত্ববাদী শাসনের অবসান ঘটে। এরপর ৮ আগস্ট রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ও সামাজিক উদ্যোক্তা অধ্যাপক ইউনূসকে অন্তর্বর্তী সরকারের নেতৃত্ব দেওয়ার ভার দেন।
অধ্যাপক ইউনূসের এ কথায় জাতীয় পরিবর্তনের প্রত্যাশার আলো ফুটে ওঠে। বাংলাদেশের পরবর্তী সাধারণ নির্বাচন আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।
এনডি