দেশ রূপান্তর
চাল আমদানিতে বিদ্যমান শুল্কহার ৬৩.৫ ভাগ থেকে কমিয়ে ২ ভাগ নির্ধারণ করে কাস্টমসের সার্ভারে আপলোড করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড এনবিআর। এর ফলে শুল্ক জটিলতার কারণে গত ৬ দিন ধরে হিলি স্থলবন্দরে আটকে থাকা চাল খালাসের প্রস্তুতি নিচ্ছেন বন্দরের সিআ্যন্ডএফ এজেন্ট ও আমদানিকারকরা। এসব চাল খালাস শুরু হলে বাজারে পণ্যটির সরবরাহ বাড়লে দাম কমে আসবে বলেও জানিয়েছেন তারা।
মঙ্গলবার দুপুরে কাস্টমসের সার্ভারে শুল্কহার ৬৩.৫ভাগ থেকে কমিয়ে ২ভাগ নির্ধারণের সেই বিষয়টি আপলোড করা হয়। এর পর থেকেই বন্দরের সিআ্যন্ডএফ এজেন্ট ও আমদানিকারকরা বন্দরে আটকে থাকা আমদানিকৃত চাল খালাস নিতে বিলঅবএন্ট্রি সাবমিট থেকে শুরু করে অন্যান্য প্রক্রিয়া নিতে শুরু করেছে।
হিলি স্থলবন্দরের সিআ্যন্ডএফ এজেন্ট মুশপিকুর রহমান ও আমদানিকারক ওবায়দুর রহমান বলেন, চাল আমদানির অনুমতি দিলেও চাল আমদানিতে পূর্বের শুল্কহার ৬৩.৫ ভাগ বিদ্যমান থাকায় চাল আমদানি হলেও সেসব খালাস নেওয়া সম্ভব হচ্ছিলনা। এই শুল্কে চাল খালাস করতে কেজি প্রতি শুল্ক দিতে হত ৪০ টাকা আর আমদানিকৃত চাল বিক্রি করতে হত ৯০ টাকার উপরে। এতে করে গত ৬ দিন ধরে হিলি স্থলবন্দরে আমদানিকৃত চাল আটকা পড়ে ছিল।
সোমবার (১৮ আগস্ট) দুপুরের পর কাস্টমসের সার্ভারে চাল আমদানিতে শুল্কহার কমিয়ে ২ ভাগ নির্ধারণের বিষয়টি সংযুক্ত করা হয়েছে বলে জানতে পারি। এখন আমাদের যে সমস্ত চাল আমদানি হয়েছে সেগুলোর বিপরীতে বিলঅবএন্ট্রি সাবমিট করে পরীক্ষণ শুল্কায়ন করে ২ ভাগ শুল্ক পরিশোধ করে খালাস করতে পারবো। সেই সঙ্গে গত ছয়দিন ধরে ট্রাকগুলো আটকা থাকার কারণে ডেমারেজ দিতে হচ্ছিল, বৃষ্টিতে পণ্য ভিজে মান নষ্ট হচ্ছিল সেই থেকে পরিত্রাণ মিলছে আমাদের। ইতোমধ্যেই সে সমস্ত চাল আমদানি করা হয়েছে সেগুলোর বিপরীতে ব্যাংক থেকে এনওসি উত্তোলন পূর্বক কাস্টমসে বিলঅবএন্ট্রি সাবমিট করা হবে। এরপর কাস্টমস পরীক্ষণ শুল্কায়ন করে সেসব চাল ছাড়করন দিবে। আজকে হয়তোবা হবেনা তবে আগামীকাল এসব চাল বন্দর থেকে খালাস হয়ে বাজারে ছাড়তে শুরু করলে বাজারে চালের দাম কমে আসবে। সেই সাথে শুল্ক কমার ফলে বন্দর দিয়ে চাল আমদানির পরিমাণ আরো বাড়বে। এতে করে চালের দামের যে ঊর্ধ্বমুখী সেটি আর হবেনা বলেও জানিয়েছেন তারা।
হিলি স্থল শুল্ক স্টেশনের রাজস্ব কর্মকর্তা নিজাম উদ্দিন বলেন, চাল আমদানির অনুমতি দেওয়ায় চারমাস বন্ধের পর গত মঙ্গলবার থেকে হিলি স্থলবন্দর দিয়ে চাল আমদানি শুরু হয়। কিন্তু কাস্টমসের সার্ভারে চাল আমদানিতে বিদ্যমান শুল্কহার ৬৩.৫ ভাগ থেকে কমানোর বিষয়ে যে সংশোধনী হওয়ার কথা ছিল সেটি হয়নি। যার কারণে আমদানিকারকরা সেই শুল্কে বন্দর থেকে চাল খালাস নেননি। আজ দুপুরের পর কাস্টমসের সার্ভারে শুল্কহার ৬৩.৫ ভাগ থেকে শুল্ক অব্যাহতি দিয়ে মাত্র ২ ভাগ শুল্ক নির্ধারণের বিষয়টি সার্ভারে সংযুক্ত করা হয়েছে। এখন ব্যবসায়ীরা আমদানিকৃত চাল খালাসের জন্য কাস্টমসে বিলঅবএন্ট্রি সাবমিট করলে তারা ২ ভাগ শুল্ক দিয়ে আমদানিকৃত চাল খালাস করে নিতে পারবেন।
প্রসঙ্গত, দেশের বাজারে চালের দাম নিয়ন্ত্রণে সরকার চাল আমদানির অনুমতি দিলে প্রায় চার মাস বন্ধের পর গত মঙ্গলবার থেকে চাল আমদানি শুরু হলেও শুল্ক জটিলতার কারণে গত ৬ দিন ধরে বন্দরে ৬৪টি ট্রাকে ২ হাজার ৮১৪ টন চাল আটকা পড়ে ছিল।